ফিচার

করোনাভাইরাস: শুরু থেকে শেষ

নিউজ ডেস্ক:

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে দুনিয়া জুড়ে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। রবিবার (৫ এপ্রিল) দুপুর পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৬৪ হাজার ৭৫৪ জন মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন ১২ লাখ ৩ হাজার ৪২৮ জন। ভাইরাসটি কীভাবে দেহে আক্রমণ করে, কেন করে, কেনই বা মানুষ এই রোগে মারা যায়? চলুন জেনে নেই।

করোনাভাইরাস কয়েকটি ধাপে কাজ করে।

‘ইনকিউবেশন’ বা প্রাথমিক লালনকাল:

এই সময়ে ভাইরাসটি নিজেকে ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠিত করে। আপনার শরীর গঠন করা কোষগুলোর ভেতরে প্রবেশ করে সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়ার মাধ্যমে কাজ করে ভাইরাস। শুরুতে এটি আপনার গলা, শ্বাসনালী এবং ফুসফুসের কোষে আঘাত করে। পরে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নতুন ভাইরাস ছড়িয়ে দেয় এবং আরো কোষকে আক্রান্ত করে। এই শুরুর সময়টাতে আপনি অসুস্থ হবেন না এবং কিছু মানুষের মধ্যে হয়তো উপসর্গও দেখা দেবে না। ইনকিউবেশনের সময়ের প্রথম সংক্রমণ এবং উপসর্গ দেখা দেয়ার মধ্যবর্তী সময়ের স্থায়িত্ব একেকজনের জন্য একেকরকম হয়, কিন্তু গড়ে তা পাঁচদিন।

প্রাথমিক লক্ষণ:

দশজনে আটজন মানুষের জন্যই কোভিড-১৯ এর প্রধান উপসর্গ কাশি ও জ্বর। শরীরে ব্যথা, গলা ব্যথা এবং মাথা ব্যথাও হতে পারে। প্রাথমিকভাবে করোনাভাইরাসের কারণে শুষ্ক কাশি হয়। এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে পরিপূর্ণ বিশ্রাম, প্রচুর তরল পান করা এবং প্যারাসিটামল খাওয়ার উপদেশ দেয়া হয়ে থাকে। এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে হাসপাতাল বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়ার প্রয়োজন হয় না। এই ধাপটি এক সপ্তাহের মত স্থায়ী হয়। এই রোগ সম্পর্কে হওয়া নতুন গবেষণায় ধারণা প্রকাশ করা হয়েছে যে রোগটির এই ধাপে আক্রান্তদের সর্দিও লাগতে পারে।

ভয়াবহ ব্যাধি:

এই ধাপের পর যদি রোগ অব্যাহত থাকে, তা হবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভাইরাসটি সম্পর্কে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়াশীল হওয়ায় যেই কেমিক্যালগুলো শরীরে বার্তা পাঠাতে থাকে, সেগুলোর প্রতিক্রিয়া তখন শরীরের বিভিন্ন জায়গায় প্রদাহ হয়। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় ভারসাম্য নষ্ট করে দেয় ভাইরাসটি। এর ফলে শরীর অতিরিক্ত মাত্রায় ফুলে যাওয়া শুরু হয়।

অতি জটিল অবস্থা:

এখন পর্যন্ত ধারণা করা হচ্ছে যে প্রায় ৬ শতাংশ করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির রোগ অতি জটিল পর্যায়ে যায়। এই ধাপে শরীর স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে ব্যর্থ হয় এবং মৃত্যুর বড় ধরনের সম্ভাবনা তৈরি হয়। রক্তচাপ যখন মারাত্মকভাবে নেমে যায় তখন এই ধাপে সেপটিক শক পেতে পারেন আক্রান্ত ব্যক্তি। এমনকি তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাজ করা বন্ধ হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে। শ্বাস-প্রশ্বাসে তীব্র সমস্যা হওয়ার উপসর্গ দেখা দেয় ফুসফুসে প্রদাহ ছড়িয়ে পড়লে। কারণ সেসময় শরীরকে টিকিয়ে রাখার জন্য যথেষ্ট অক্সিজেন পুরো শরীরে প্রবাহিত হতে পারে না।

এ পর্যায়ে আক্রান্তকে একটি কৃত্রিম ফুসফুস দ্বারা টিউবের মাধ্যমে শরীর থেকে রক্ত বের করে নিয়ে সেই রক্ত অক্সিজেনপূর্ণ করে আবার শরীরে প্রবেশ করানো হয়। তবে ক্ষতির মাত্রা বেশি হলে কখনো কখনো অঙ্গ প্রত্যঙ্গ শরীরকে আর বাঁচিয়ে রাখতে সক্ষম হয় না।

প্রথম মৃত্যু:

চীনের উহান শহরের জিনইনতান হাসপাতালে মারা যাওয়া প্রথম দু'জন আপাতদৃষ্টিতে স্বাস্থ্যবান ব্যক্তি ছিলেন, যদিও তারা দু'জনই দীর্ঘসময় ধরে ধূমপান করতেন। প্রথম যিনি মারা গিয়েছিলেন, ৬১ বছর বয়সী এক পুরুষ, তিনি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময় তার তীব্র নিউমোনিয়া ছিল। তার শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা ছিল, এবং ভেন্টিলেটরে রাখা হলেও তার ফুসফুস বিকল হয়ে যায় এবং হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যায়। হাসপাতালে ১১ দিন থাকার পর ঐ ব্যক্তি মারা যান।

৬৯ বছর বয়সী দ্বিতীয় যে ব্যক্তি মারা যান তারও শ্বাস প্রশ্বাসে ব্যাপক সমস্যা ছিল। তাকেও একটি ইসিএমও মেশিনের সহায়তা দেয়া হয়, কিন্তু তবুও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। রক্তচাপ কমে যাওয়ার পর তীব্র নিউমোনিয়া ও সেপটিক শকে মারা যান তিনি।

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

বাগেরহাটে কৃষকদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ

বাগেরহাটে তেল জাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের মাঝে পুরস্কার...

‘মিথ্যা অভিযোগে’ ১০ মাস ধরে কারাবন্দী দিলীপ আগরওয়ালা

জুলাই গণ-অভ্যত্থানের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছিলেন...

মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার আগে ইরান কেন আমেরিকাকে সতর্ক করেছিল?

কাতারে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার আগে আমেরিকাকে সতর্ক করেছিল ইরান। এ জন্য...

লক্ষ্মীপুরে খালের বর্জ্য অপসারণ ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মান্দারি ও জকসিন বাজারের রহমতখালী খালের বর্জ্য ও আবর্জ...

ইরান-ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু

জুন মাসের ১৩ তারিখে ইসরাইল ইরানে হামলার মধ্য দিয়ে যুদ্ধের শুরু। প্রায় দুই সপ্...

কিশোরগঞ্জে ৩ দিন ব্যাপী ফল মেলার উদ্বোধন

দেশি-বিদেশি নানান জাতের ফল নিয়ে কিশোরগঞ্জের একরামপুরে খামারবাড়িতে শুরু হয়েছে...

দৌলতদিয়ায় এক নারীর রহস্যজনক মৃত্যু

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে তানিয়া আক্তার (৩০) নামে এক যৌনক...

মনোহরদীতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত

মনোহরদী উপজেলায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্...

লাখ টাকা বিক্রির স্বপ্ন দেখছেন মানিক

শসা চাষে খরচ কম কিন্তু লাভ বেশি। শসা একটি সবজি জাতীয় খাবার। এটার চাহিদা পুরো...

দেবিদ্বারে নিজেকে নবী দাবি, ভিডিও ভাইরাল- এক ব্যক্তি আটক

কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায় এক ব্যক্তি নিজেকে নবী দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মা...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা