পানি ও সূর্যের আলো থেকে গ্যাস এবং গ্যাস থেকে বিদ্যুৎ আবিষ্কার করে চমক তৈরি করেছেন খুলনার কয়রার কালনা গ্রামের আব্দুল হামিদ। যে প্রযুক্তিতে সূর্যের আলো আর পানিকে কাজে লাগিয়ে গ্যাস থেকে জ্বালানি উৎপন্ন করা হয়।
এতে কোনো জ্বালানি খরচ হচ্ছে না। জ্বালানি ছাড়া সূর্যের আলো ও বোতলের পানি থেকে গ্যাস তৈরির এ পদ্ধতি তিনিই প্রথম আবিষ্কার করেছেন বলে তার দাবি।
এ সম্পর্কে তিনি জানান, ছোটবেলা থেকে নতুন কিছু করার ইচ্ছা ছিল। তখন থেকে চিন্তা করি দেশের জ্বালানি সমস্যা কিভাবে সমাধান করা যায়। আমাদের দেশে অফুরন্ত সূর্যের আলো পাওয়া যাচ্ছে এই আলোকে কাজে লাগিয়ে যদি গ্যাস তৈরি করা যায় তাহলে বিশাল একটি সফলতা আসবে। সেই সফলতা আমি অর্জন করতে পেরেছি।
তিনি বারিধারার একটি নবায়নযোগ্য শক্তি নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। কাজের অবসরের পুরো সময়টি ব্যয় করেন এ কাজের গবেষনায়।
২০০৯ থেকে কাজ শুরু করেন তিনি। এরমধ্যে নানা প্রতিবন্ধকতা এসেছে। কিন্তু সব প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে আলোর পথ দেখেন ২০১৪ সালে।
আব্দুল হামিদ বলেন, বইয়ে পড়েছিলাম হাইড্রোজেন নিজে জ্বলে, অক্সিজেন অপরকে জ্বলতে সাহায্য করে। পানির ভিতরে হাইড্রোজেন থাকে আর অক্সিজেন থাকে। তখন থেকে একটা ধারণা হয়েছিল যে, হাইড্রোজেন যেহেতু নিজে জ্বলে তাহলে এটা দিয়ে কিভাবে রান্না করা যায়! আবার পানিতে তো আগুন দিলে জ্বলার কথা তাহলে আগুন জ্বলে না কেন? এসবের কারণ খুঁজে বের করলাম আগে। যেহেতু সূর্যই মূল শক্তির উৎস সব শক্তি তো আমরা সূর্য থেকে পাই। তবে তাকে যদি আমরা কাজে লাগাতে পারি এটাকে সঞ্চয় করে অন্য শক্তিতে রুপান্তর করলে ভালো কিছুই হবে।
সেই চিন্তা থেকেই আব্দুল হামিদ সোলার প্যানেল, পানি ও প্লাস্টিকের বোতল, বালতি ও লোহার ব্যারেল জোড়া দিয়ে উদ্ভাবন করেন প্রাকৃতিক গ্যাস।
১০ বছরের এ গবেষণায় তার মোট খরচ ৬০ হাজার টাকা। এখনো দিনের বড় একটা সময় গবেষণার কাজে ব্যয় করেন। এ প্রযুক্তি নিয়ে আরও বড় পরিসরে গবেষণা প্রয়োজন বলে মনে করেন আব্দুল হামিদ।
তিনি বলেন, বাজার থেকে সোলার প্যানে কিনে এনে সেট করা হয়েছে। ওর উপর যখন আলো পড়ে তখন কিছু বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। যা থেকে হাইড্রোজেন তৈরি করে কার্বনে একটিভ করা হয়। সেখান থেকে ড্রামে পাঠিয়ে চুলার সঙ্গে সংযোগ দেয়া হয়। ৪০০ ওয়াট প্যানেল দিয়ে ৬০০-৭০০ লিটার গ্যাস উৎপাদন সম্ভব। সবাই যদি আমরা এ প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার করতে পারি তাহলে এলপিজি গ্যাসের কোনো প্রয়োজন হবে না।
তিনি জানান, সূর্যের আলো ও পানি থেকে তৈরি করা গ্যাসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চুলা জ্বলছে। একটা ল্যাব ও আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন, যাতে গবেষণা এগিয়ে নেয়া যায়।
অভিনব এ উদ্ভাবনটি মানুষের হাতের নাগালে নিয়ে আসতে আরো উন্নত প্রযুক্তির সংযোজন ও গবেষণার প্রয়োজন। তাই সরকারের সহযোগীতা চেয়েছেন আব্দুল হামিদ।
সান নিউজ/সালি
Newsletter
Subscribe to our newsletter and stay updated.