ছবি: সংগৃহীত
ঐতিহ্য ও কৃষ্টি

আজ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজকের ঘটনা কাল অতীত। প্রত্যেকটি অতীত সময়ের স্রোতে এক সময় হয়ে উঠে ইতিহাস। পৃথিবীর বয়স যতোই বাড়ে ইতিহাস ততোই সমৃদ্ধ হয়। এই সমৃদ্ধ ইতিহাসের প্রতিটি ঘটনার প্রতি মানুষের আগ্রহ চিরাচরিত। ইতিহাসের প্রতিটি দিন তাই ভীষণ গুরুত্ব পায় সকলের কাছে।

আরও পড়ুন: লিপ ডে, বছরের অতিরিক্ত একটি দিন

সান নিউজের পাঠকদের আগ্রহকে গুরুত্ব দিয়ে সংযোজন করেছে নতুন আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিন’।

আজ বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) ২৩ ফাল্গুন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৫ শাবান ১৪৪৪ হিজরী। এক নজরে দেখে নিন ইতিহাসের এ দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম-মৃত্যুদিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

আরও পড়ুন: আণবিক শক্তি কমিশন গঠিত

ঘটনাবলী:

১৮৩৫ - ব্রিটিশ রাজ ভারতে সরকারি অফিসে ফারসি ভাষা বিলোপ করে ইংরেজি ভাষা প্রচলন করে।

১৮৬১ - ঢাকা শহরের প্রথম সাপ্তাহিক ‘ঢাকা প্রকাশ’-এর আত্মপ্রকাশ।

১৮৭৬ - আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল তার তৈরি টেলিফোন পেটেন্ট করেন।

১৯১৭ - জ্যাজ রেকর্ড প্রথম বাজারে বিক্রি শুরু হয়।

১৯২৩ - তৃতীয় পেশোয়ার ষড়যন্ত্র মামলা শুরু হয়।

১৯৭১ - রমনার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে মুক্তি সংগ্রামের আহ্বান জানিয়ে ঐতিহাসিক ভাষণ দেন।

৭ই মার্চ বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এক অনন্য দিন। ১৯৭১ সালের এ দিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তদানীন্তন রেসকোর্স ময়দান) বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন।

ঐতিহাসিক এ ভাষণের সময় লাখ লাখ মুক্তিকামী মানুষের উপস্থিতিতে এ মহান নেতা বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেবো, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

আরও পড়ুন: ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া এ ঐতিহাসিক ভাষণ স্বাধীনতার সংগ্রামের বীজমন্ত্র হয়ে পড়ে। এ ভাষণ শুধু রাজনৈতিক দলিলই নয়, জাতির সাংস্কৃতিক পরিচয় বিধানের একটি সম্ভাবনাও তৈরি করে। এ ভাষণের আহ্বানেই মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করে বাঙালি।

২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণকে ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো।

বঙ্গবন্ধুর সেই উদ্দীপ্ত ঘোষণায় বাঙালি জাতি পেয়ে যায় স্বাধীনতার দিকনির্দেশনা। এরপরই দেশের মুক্তিকামী মানুষ ঘরে ঘরে চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। বঙ্গবন্ধুর এ বজ্রনিনাদে মহামুক্তির আনন্দে বাঙালি জাতি উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। যুগ যুগ ধরে শোষিত-বঞ্চিত বাঙালি ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে যায় কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে।

আরও পড়ুন: মুক্তিযোদ্ধা সংসদ প্রতিষ্ঠা

১৯৪৭ সালে ধর্মীয় চিন্তা, সাম্প্রদায়িকতার মানসিকতা ও দ্বি-জাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে গঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ২৩ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিসত্ত্বা, জাতীয়তাবোধ ও জাতিরাষ্ট্র গঠনের যে ভিত রচিত হয়, তারই চূড়ান্ত পর্যায়ে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর ছাত্র-কৃষক-শ্রমিকসহ সর্বস্তরের বাঙালি স্বাধীনতা অর্জনের জন্য মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করে।

বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় ছিনিয়ে আনে বাঙালি জাতি। এ বিজয়ের মধ্য দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে জন্ম নেয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণে গর্জে ওঠে উত্তাল জনসমুদ্র। সেদিন বঙ্গবন্ধু মঞ্চে আরোহণ করেন বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে। ফাগুনের সূর্য তখনো মাথার ওপর। তিনি মঞ্চে আসার পর জনতার উদ্দেশ্যে হাত নাড়েন এবং দরাজ গলায় তার ভাষণ শুরু করেন, ‘ভাইয়েরা আমার, আজ দুঃখ-ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি।’

আরও পড়ুন: বিশ্ব বেতার দিবস

এরপর জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বাঙালির স্বাধীনতার মহাকাব্যের কবি ঘোষণা করেন- ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

মাত্র ১৯ মিনিটের ভাষণ। এ স্বল্প সময়ে তিনি ইতিহাসের পুরো ক্যানভাস তুলে ধরেন। তার ভাষণে সামরিক আইন প্রত্যাহার, জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, গোলাগুলি ও হত্যা বন্ধ করে সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়া এবং বিভিন্ন স্থানের হত্যাকাণ্ডের তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের দাবি জানান তিনি।

বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘ভাইয়েরা আমার, আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না, মানুষের অধিকার চাই। প্রধানমন্ত্রিত্বের লোভ দেখিয়ে আমাকে নিতে পারেনি। ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে দিতে পারেনি। আপনারা রক্ত দিয়ে আমাকে ষড়যন্ত্র-মামলা থেকে মুক্ত করে এনেছিলেন।

আরও পড়ুন: গুগল ম্যাপের যাত্রা

সেদিন এ রেসকোর্সে আমি বলেছিলাম, রক্তের ঋণ আমি রক্ত দিয়ে শোধ করবো। আজও আমি রক্ত দিয়েই রক্তের ঋণ শোধ করতে প্রস্তুত। আমি বলে দিতে চাই, আজ থেকে কোর্ট-কাচারি, হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট, অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সব অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। কোনো কর্মচারী অফিসে যাবেন না। এ আমার নির্দেশ।’

বঙ্গবন্ধুর ভাষণের সর্বশেষ দুটি বাক্য, যা পরবর্তীতে বাঙালির স্বাধীনতার চূড়ান্ত লড়াইয়ের দিকনির্দেশনা ও প্রেরণার হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেবো। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয়বাংলা।’

আরও পড়ুন: বাংলাদেশে প্রথম আদমশুমারি হয়

ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক এবং সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।

এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ভোর ৬ টা ৩০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৭ টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন।

বিকেল ৪টায় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে (তেজগাঁও) আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

১৯৭৩ - বাংলাদেশে প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

১৯৮৫ - বিখ্যাত গান উই আর দ্য ওয়ার্ল্ড আন্তর্জাতিকভাবে প্রকাশ পায়।

১৯৮৬ - চ্যালেঞ্জার দুর্ঘটনা ইউএসএস প্রিসার্ভারের ডুবুরীরা সাগর তলে চ্যালেঞ্জারের কেবিন ক্রুদের অবস্থান নিশ্চিত করে।

১৯৮৯ - ইরান ও যুক্তরাজ্যের কূটনৈতিক সর্ম্পক ছিন্ন। সালমান রুশদীকে দুদেশের মধ্যে জটিলতার সৃষ্টি হয়।

আরও পড়ুন: চারণকবি বিজয় সরকার’র জন্ম

জন্মদিন:

১৮৫৭ - নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অস্ট্রিয়ান চিকিৎসক জুলিয়াস ওয়াগনার-জারেগ।

১৮৯০ - মনোরঞ্জন গুপ্ত, বৃটিশ বিরোধী সশস্ত্র বিপ্লবী ও আইন সভার সদস্য। (মৃ.১৯৭৬)

১৯০৪ - বাঙালি লেখক ও ঔপন্যাসিক ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়। (মৃ.১৯৭৫)

১৯০৭ - অখিলচন্দ্র নন্দী, ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী ও সাম্যবাদী কর্মী। (ম.১৯৮৭)

১৯১১ - সচ্চিদানন্দ হীরানন্দ বাৎসায়ন, ভারতের জনপ্রিয় হিন্দি কবি ও ঔপন্যাসিক। (মৃ.০৪/০৪/১৯৮৭)

১৯১৪ - আমেরিকান অভিনেতা জনরদনী জন্ম গ্রহণ করেছিলেন।

১৯৩১ - শঙ্কু মহারাজ, প্রখ্যাত বাঙালি ভ্রমণ সাহিত্যিক। (মৃ.১৮/১০/২০০৪)

১৯৩৮ - নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আমেরিকান জীববিজ্ঞানী ডেভিড বাল্টিমোর।

১৯৩৯ - ফরাসি গায়ক ও গীতিকার দান্যেল গেরারদ।

১৯৪৬ - ইংরেজ গায়ক, গীতিকার, কীবোর্ড প্লেয়ার ও প্রযোজক ম্যাথু ফিশার।

১৯৫০ - ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ, বাংলাদেশি ইসলামি ব্যক্তিত্ব।

১৯৫৪ - নোবেল পুরস্কার বিজয়ী জার্মান রসায়নবিদ অটো ডিলস।

১৯৫৫ - ভারতীয় অভিনেতা অনুপম খের।

১৯৬১ - আমেরিকান অভিনেত্রী মেরি বেথ ইভান্স।

১৯৮৭ - ফরাসি ফুটবল খেলোয়াড় হাতেম বিন আরফা।

আরও পড়ুন: জীবনানন্দ দাশ’র জন্ম

মৃত্যুবার্ষিকী:

১৯৩২ - নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ফরাসি রাজনীতিবিদ ও ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী।

১৯৫৪ - নীহারবালা, নৃত্যগীতে সুদক্ষা খ্যাতনাম্নী অভিনেত্রী।

১৯৮২ - বিমল ঘোষ, শিশু সাহিত্যিক। (জ.১২/১২/১৯১০)

১৯৮৮ - আমেরিকান অভিনেতা রবার্ট লিভিংস্টোন।

১৯৯৭ - নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আমেরিকান পদার্থবিদ এডওয়ার্ড মিল্স পারসেল।

১৯৯৯ - স্ট্যানলি কুব্রিক, একজন একাডেমি এওয়ার্ড বিজয়ী মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক।

২০০০ - ইংরেজ অভিনেতা চার্লস গ্রে।

২০০৯ - দক্ষিণ কোরিয়ার অভিনেত্রী জাং জা-ইয়েওন।

২০১৩ - উইলি সিটকেস, আমেরিকান অভিনেতা।

২০১৭ - কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য, একজন ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পী, দোহার ফোক ব্যান্ড। (জ.১১/০৯/১৯৭০)

সান নিউজ/এনজে

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

নোয়াখালীতে ভূমি দুস্যুর বিরুদ্ধে মানববন্ধন 

নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর কোম...

ফসলের ক্ষতি করে চলছে অবৈধ ব্যাটারি ইন্ডাস্ট্রি

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর):

আজ শেরে বাংলার ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ অবিভক্ত বাংল...

খাগড়াছড়িতে ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত

আবু রাসেল সুমন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:

গরমে বারবার গোসল করা কি ক্ষতিকর?

লাইফস্টাইল ডেস্ক: বৈশাখের শুরু থে...

খাগড়াছড়িতে ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত

আবু রাসেল সুমন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:

বরিশালে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৩ জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশালের বাকেরগ...

সেরা সুন্দরী হলেন ৬০ বছরের আলেজান্দ্রা 

বিনোদন ডেস্ক: সম্প্রতি ৬০ বছর বয়স...

সোনার দাম ফের কমলো 

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের বাজারে সো...

গরমে বারবার গোসল করা কি ক্ষতিকর?

লাইফস্টাইল ডেস্ক: বৈশাখের শুরু থে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা