বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারীর একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন: জামালপুরে লাঞ্চিত হলেন সংরক্ষিত সংসদ সদস্য
বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির যোগসাজশে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে অবৈধভাবে ওই নিয়োগ দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির এক অভিভাবক সদস্য।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চতুল ইউনিয়নের হাসামদিয়ায় অবস্থিত হাসামদিয়া ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয়ে।
বিষয়টি তদন্ত করে প্রধান শিক্ষক আয়ুবুর রহমান এবং নিয়োগের সাথে জড়িত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুহম্মদ আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক দুর্নীতিমুক্ত প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার দাবি জানানো হয়।
আরও পড়ুন: দুস্থ সাংবাদিকের অনুদানের চেক পেলেন স্বচ্ছলরা
গত ১৪ আগস্ট এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য শাহ মো. কামরুল ইসলাম উজ্বল।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, হাসামদিয়া ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন যাবত প্রধান শিক্ষক না থাকায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আয়ুবুর রহমান দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষা গত ১৯ মে ফরিদপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আয়ুবুর রহমানের জাল সনদ থাকার কারণে পত্র-পত্রিকায় এ সংক্রান্ত রিপোর্টের জেরে নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। আয়ুবুর রহমানের শিক্ষা জীবনে একাধিক তৃতীয় বিভাগ রয়েছে।
আরও পড়ুন: নারীকে হত্যা করে স্বর্ণালংকার লুট
পরবর্তীতে বিদ্যালয়টির সভাপতির যোগসাজশে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুহম্মদ আনোয়ার হোসেন মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে অবৈধভাবে নিয়োগ কার্য সম্পন্ন করেন।
এ ব্যাপারে ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট গাজী শাহিদুজ্জামান লিটন বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক বা প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যদি দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়, তাহলে সে সব শিক্ষকরা কীভাবে একটি সৎ, সুযোগ্য ও মূল্যবোধ সম্পন্ন নাগরিক গড়ে তুলবে!
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কাজী হাসান ফিরোজ বলেন, সার্টিফিকেট অবৈধ কিনা বলতে পারি না, বলতে পারি নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় তিনি অনিয়মতান্ত্রিকভাবে নিয়োগ নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ট্রেন দেখে লাফিয়ে পড়ে বৃদ্ধের মৃত্যু
এ ব্যাপারে নিয়োগ পরীক্ষায় ডিজির প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ফরিদপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসিমা বেগম বলেন, যে যোগ্যতায় তিনি (আয়ুবুর রহমান) সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন, সেই যোগ্যতায়ই প্রধান শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা রাখেন।
এছাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তার কুমিল্লা ইউনিভার্সিটির সার্টিফিকেট যাচাই-বাছাই করে দেখেছেন সেগুলো ঠিক আছে।'
প্রধান শিক্ষক পদে ওই বিদ্যালয়ে সদ্য নিয়োগ সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, আয়ুবুর রহমান যথাযথ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পেয়েছেন। তাছাড়া নিয়োগ দেয়ার একক ক্ষমতা আমি সংরক্ষণ করি না।
আরও পড়ুন: নোয়াখালীতে ২ হাসপাতাল সিলগালা
অন্যদের মতো তিনিও প্রয়োজনীয় সার্টিফিকেট জমা দিয়ে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সন্তোষজনক ফলাফল করেই নিয়োগ পেয়েছেন। তার সার্টিফিকেট অর্জনের প্রক্রিয়াগত জটিলতা কিংবা ভুয়া সার্টিফিকেট দাখিলের দায়ভার তার নিজের। আমাদের প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ে তার কাগজপত্র সঠিক পেয়েছি।
সান নিউজ/এনজে