বাণিজ্য

ফুলবাড়িয়া মার্কেটে দ্বিতীয় দিনের উচ্ছেদ অভিযান চলছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এলাকাধীন গুলিস্তান ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেট-২ এ অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযান ২য় দিনের মতো চলছে।

বুধবার ( ৯ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে ৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এই অভিযান শুরু করে। বুধবারের অভিযানে পার্কিংয়ের জায়গায় গড়ে ওঠা দোকানগুলো ভেঙে ফেলা হচ্ছে।

ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন বলেন, অভিযানকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর কোনও ঘটনা এড়াতে আজও প্রয়োজনীয়সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ঘটনাস্থলে রাখা হয়েছে।

তার আগে মঙ্গলবার ( ৮ ডিসেম্বর)ফুলবাড়িয়া মার্কেটে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে ডিএসসিসি। প্রায় ৪ ঘণ্টার অভিযানে ২৫০টি অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হয়। বিক্ষুব্ধ দোকানদাররা প্রথমে অভিযান চালাতে বাধা প্রদান করে পুলিশ ও করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ওপর ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকেন।

পরে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। ডিএসসিসির রাজস্ব বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, অস্থায়ী দোকান বরাদ্দের ক্ষেত্রে অন্যতম শর্ত হলো করপোরেশন চাইলে যেকোনও সময় তা উচ্ছেদ করতে পারবে।

এ জন্য নিয়ম মেনেই তারা অভিযান চালিয়েছেন। কিন্তু দোকানিদের দাবি, তারা অস্থায়ী বরাদ্দ পাওয়ার পর নির্ধারিত ভাড়া পরিশোধের পাশাপাশি মার্কেট কমিটির নেতাদের লাখ লাখ টাকা দিয়েছেন। মার্কেট কমিটি ও আগের মেয়রের কর্মকর্তারা আশ্বাস দিয়েছিলেন, অতিরিক্ত টাকা দিলে দোকান কখনও ভাঙা হবে না।

১৮ মার্কেটে ৩০৮১টি অবৈধ দোকান : ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ১৮টি মার্কেটে ৩ হাজার ৮১টি অবৈধ দোকান গড়ে তুলেছে একটি প্রভাবশালী অসাধু চক্র। প্রায় ২ দশক ধরে এসব দোকান তৈরি করে বিক্রি করা হয়েছে। প্রতিটি দোকানের ন্যূনতম গড়মূল্য অন্তত ১৩ লাখ টাকা।

সে হিসাবে দোকান বিক্রি করে চক্রটি অন্তত ৪০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের। আরও জানা গেছে, সিটি কর্পোরেশন সংশ্লিষ্টদের যোগ সাজশে মার্কেটের মালিক সমিতির নেতাদের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে চক্রটি। ফলে প্রকাশ্যে ডিএসসিসির এসব মার্কেটের নকশা লঙ্ঘন করে অবৈধ দোকান নির্মাণ করলেও নির্বিকার ছিল কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার দিনভর গুলিস্তান ডিএসসিসির নগরভবন সংলগ্ন ফুলবাড়িয়া মার্কেটে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে ডিএসসিসি। এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ প্রসঙ্গে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘ডিএসসিসির অনেকগুলো মার্কেটে কয়েক হাজার অবৈধ দোকান নকশাবহির্ভূতভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। এসব দোকান অপসারণ ও সব অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হবে।’

নিউ সুপার উত্তর ডি-ব্লক মার্কেটে নকশানুযায়ী দোকান সংখ্যা ৫২৭টি। বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৫২২টি। মামলার কারণে ৫টি বরাদ্দ দেয়া সম্ভব হয়নি। এ মার্কেটেও সম্পত্তি বিভাগের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সহায়তায় ৪১টি দোকান গড়ে বিক্রি করেছে অসাধু চক্র।

চকবাজার পাবলিক টয়লেট নকশানুযায়ী মার্কেটের দোকান সংখ্যা ৩৬টি। এ মার্কেটে নকশাবহির্ভূতভাবে ১টি তৈরি করে বিক্রি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নিউমার্কেট এলাকার গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ সংলগ্ন দুই পাম্প স্টেশনের মাঝখানে নিজ খরচে সেমিপাকা ঘর তুলে নেয়ার শর্তে ৮৪টি দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়।

পরে সেখানে অবৈধভাবে ৩ তলা মার্কেট নির্মাণ করে বরাদ্দকৃত দোকানের চেয়ে আয়তনে অনেক বড় দোকান তৈরি করা হয়েছে। একইভাবে অবৈধভাবে ১১২টি দোকান তৈরি করে বিক্রি করেছে মার্কেট সমিতির নেতা এবং স্থানীয় পর্যায়ের সরকার দলীয় রাজনৈতিক দলের অসাধু নেতারা।

সূত্রে আরও জানায়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ সংলগ্ন মার্কেটে নকশাবহির্ভূত দোকান সংখ্যা ৯টি, ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেট-২ (ব্লক-এ)-এ দোকান ৩০৮টি, ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেট-২ (ব্লক-বি)-এ দোকান ২৯১টি, ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেট-২ (ব্লক-সি)-এ দোকান সংখ্যা ৩১১টি, সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটের দোকান ৬৬৯টি, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ হকার্স মার্কেটে দোকান ২৫০টি, নর্থসাউথ রোড সাইড মার্কেটে ৪টি, পুরান ঢাকার নওয়াব ইউসুফ মার্কেট, ভবন-১, ২, ৩, ৪, ৫-এ দোকান ৩৬টি, নওয়াব ইউসুফ এক্সটেনশন মার্কেটের অবৈধ দোকান ৭টি।

এ ছাড়া কাপ্তানবাজার কমপ্লেক্স ১ নম্বর ভবনের অবৈধ দোকান সংখ্যা ৪৫১টি। এ মার্কেটের নকশানুযায়ী নির্মিত দোকানের সংখ্যা ৬৫৯টি। এর মধ্যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৫৬২টি। আর মামলার কারণে ৯৭টি দোকান বরাদ্দ প্রক্রিয়া ঝুলে রয়েছে। কাপ্তানবাজার কমপ্লেক্স ২ নম্বর ভবনের অবৈধ দোকান সংখ্যা ৪৪৭টি।

আর এ মার্কেটের নকশানুযায়ী নির্মিত দোকানের সংখ্যা ৪৬৬টি। এর মধ্যে ৫২টি মামলা জটিলতার কারণে বরাদ্দ দেয়া সম্ভব হয়নি। আহসান মঞ্জিল সুপার মার্কেটের অবৈধ দোকান সংখ্যা ৩৮টি।

অনুমোদন ছাড়া ভবনের ছাদে ৩২টি দোকান নির্মাণসহ মোট ৩৮টি দোকান গড়ে বিক্রি করেছে অসাধু চক্র। নকশানুযায়ী নির্মিত এ মার্কেটের মোট দোকান সংখ্যা ৯১৬টি। লক্ষ্মীবাজার মার্কেটের অবৈধ দোকান সংখ্যা ৩৫টি এবং সূত্রাপুর কমিউনিটি সেন্টার মার্কেটের অবৈধ দোকান সংখ্যা ৪৭টি।

সান নিউজ/এসএ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

কোচিং সেন্টারে মিলল বিপুল অস্ত্র-বিস্ফোরক

রাজশাহী নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় একটি বাড়ি থেকে অস্ত্র ও বিস্ফোরক তৈরি সরঞ্জাম...

কোনো চাঁদাবাজকে বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

কোনো চাঁদাবাজকে বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র...

আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক শেষ, যুদ্ধ স্থগিতের ঘোষণা নেই

যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট...

‘গোপন রাজনীতি’, ছাত্রশিবির ও ডাকসু নির্বাচন নিয়ে উত্তপ্ত ঢাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গেস্টরুম সংস্কৃতি এবং এই কেন্দ্রিক নির্যাতন গত ১৫ বছরে ছি...

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মালয়েশিয়ার প্রভাব কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ

দীর্ঘদিনের রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা...

ফের ৯৮ বাংলাদেশিকে বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া

ফের কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হয়েছে ৯৮ বাংলাদেশিকে। বিম...

‘গোপন রাজনীতি’, ছাত্রশিবির ও ডাকসু নির্বাচন নিয়ে উত্তপ্ত ঢাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গেস্টরুম সংস্কৃতি এবং এই কেন্দ্রিক নির্যাতন গত ১৫ বছরে ছি...

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মালয়েশিয়ার প্রভাব কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ

দীর্ঘদিনের রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা...

কোনো চাঁদাবাজকে বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

কোনো চাঁদাবাজকে বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র...

আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক শেষ, যুদ্ধ স্থগিতের ঘোষণা নেই

যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা