সান নিউজ ডেস্ক: অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় বিনা অপরাধে ৩৩ মামলার ‘ভুল আসামি’ হয়ে তিন বছর কারাভোগ করা পাটকলের শ্রমিক জাহালমের কাছে পাঁচ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
আরও পড়ুন: ভারত যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষে আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান এই চেক জাহালমের কাছে হস্তান্তর করেন।
জাহালমের বড় ভাই শাহানূর বলেন, চেক হস্তান্তরের বিষয়ে তিনি আইনজীবীর কাছ থেকে খবর পান। তিনি জাহালমকে সঙ্গে নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে যান। পরে ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষ থেকে আইনজীবী জাহালমের কাছে পাঁচ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেন।
চেক পাওয়ার পর জাহালম বলেন, আদালতের কাছ থেকে আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি।
আরও পড়ুন: কয়টা মাস ধৈর্য ধরেন
এর আগে ২০১৯ সালে একটি জাতীয় দৈনিকে ৩৩ মামলায় ‘ভুল’ আসামি জেলে ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না...’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাসগুপ্ত। এরপর এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তা, মামলার বাদীসহ চার জনকে তলব করেন বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
পরে ২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্টরা হাজির হলে হাইকোর্ট জাহালমকে মুক্তির নির্দেশ দেন এবং এ বিষয়ে রুল জারি করেন। একইসঙ্গে দুদকের কাছে ঘটনার বিষয়ে হলফনামা আকারে জানতে চান আদালত।
আরও পড়ুন: ক্ষমতায় এলে নতুন তদন্ত কমিশন
এর ধারাবাহিকতায় হাইকোর্ট ২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল জাহালমকাণ্ডে কে বা কারা দায়ী তা দেখার জন্য এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতিবেদন চান হাইকোর্ট। পাশাপাশি জাহালম প্রশ্নে ব্যাংক ঋণ জালিয়াতির মামলার এফ আই আর, চার্জশিট, সম্পূরক চার্জশিট এবং সব ব্যাংকের এ সংক্রান্ত নথিপত্র দাখিল করতে দুদককে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুসারে এ মামলায় স্বতঃপ্রণোদিত (সুয়োমুটো) হয়ে জারি করা রুলের ওপর শুনানি শেষ করে রায় দেন হাইকোর্ট।
২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের নেতৃত্বাধীন তৎকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। জাহালমকে ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের রায় দেন হাইকোর্ট। এক মাসের মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে এই টাকা প্রদান করতে বলা হয়।
আরও পড়ুন: চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে অভিযান চলবে
পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন জানানো হলে জাহালমকে হাইকোর্টের বলা ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের মধ্যে আপাতত ৫ লাখ টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেন চেম্বার জজ আদালত। ৭ দিনের মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে এই টাকা প্রদান করতে বলা হয়। তবে অবশিষ্ট ১০ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণের বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য আগামী ৩১ অক্টোবর দিন নির্ধারণ করা হয়। গত ২৯ আগস্ট বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন চেম্বার জজ আদালত এসব আদেশ দেন।
সান নিউজ/কেএমএল