রাজনীতি

নকলের কাছে আসল কোণঠাসা

সান নিউজ ডেস্ক: ভুঁইফোঁড় সংগঠন আবার আলোচনায় এসেছে সম্প্রতি হেলেনা জাহাঙ্গীরের ‘আওয়ামী চাকরিজীবী লীগের' মাধ্যমে৷ বিএনপিতেও কম নেই এমন সংগঠনের৷ তবে দল ক্ষমতায় না থাকায় মাতামাতিটাও তেমন নেই তাদের নিয়ে।

সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগের নাম ভাঙানো এরকম ভুঁইফোঁড় সংগঠনের সংখ্যা এখন তিনশ'র ও বেশি। তাদের কোনো অনুমোদন নেই৷ তবে আওয়ামী লীগের মধ্যেই রয়েছে তাদের পৃষ্ঠপোষক। এমনকি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হুঁশিয়ারি সত্বেও তাদের নিবৃত্ব করা যাচ্ছে না বলে জানা গেছে। আর এইসব সংগঠনের নানা অনুষ্ঠানে আওয়মী লীগের নেতা ও মন্ত্রী-এমপিদেরও দেখা যায়৷ হেলেনা জাহাঙ্গীরের প্রসঙ্গে সামনে চলে এসেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের নাম৷ তবে এরই মধ্যে তিনি হেলেনা জাহাঙ্গীরের সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগ টানা ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায়৷ এই ক্ষমতার কাছাকাছি থেকে অনেকেই অনেক সুবিধা নিতে এইসব ভুঁইফোঁড় সংগঠন তৈরি করছেন৷

আওয়ামী লীগের এক তরুণ নেতা মনিরুজ্জামান মনির বলেন, তারা মূল দলেও ঢুকে পড়েছেন৷ হেলেনা জাহাঙ্গীর কীভাকে আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সদস্য হয়েছিলেন সেটাই একটা বিস্ময়৷ রিজেন্ট শাহেদও আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ছিলেন৷

আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে রয়েছে আটটি সহযোগী ও তিনটি ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন৷ সহযোগী সংগঠনগুলো হচ্ছে- যুবলীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, যুব মহিলা লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, তাঁতী লীগ ও আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ৷ ভ্রাতৃপ্রতিম তিনটি সংগঠন হলো- ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ ও মহিলা শ্রমিক লীগ৷ কিন্তু এইসব সংগঠনের নেতারা এখন ভুঁইফোঁড়দের কাছে অসহায়৷ মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ঢাকা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত তারা তৎপর৷ আর অনেক নেতাও তাদের স্বার্থে ভুঁইফোঁড়দের কাছে টেনে নেন৷ ফলে ত্যাগী নেতা-কর্মীরা অনেকটা অসহায়৷

সংগঠনের নামের আগে-পরে শুধু আওয়ামী বা লীগ শব্দ জুড়ে দিয়েই শেষ নয়, বঙ্গবন্ধু, শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয়ের নাম বসিয়েও ভুঁইফোঁড় সংগঠন তৈরি হচ্ছে৷

যেমন একটি সংগঠনের নাম ‘সজীব ওয়াজেদ জয় পরিষদ'৷ সজীব ওয়াজেদ জয় নিজেই ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুকে এক পোস্ট দেন এই সংগঠনের ব্যাপারে৷ আবার ওলামা লীগ বলে আওয়ামী লীগের কোনো সংগঠন নেই বলে বার বার বিবৃতি দেয়ার পরও তারা সক্রিয়৷ ২০১৮ সালে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে ‘বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগ, নেতা মোদের শেখ মুজিব' স্লোগান শুনে মঞ্চে থাকা শেখ হাসিনা তাৎক্ষণিকভাবে বলে ওঠেন, ‘এটা কী? এটা আবার কবে হলো? আগে তো শুনিনি!’ সূত্র-ডয়চে ভেলে

নানা নামে এমন শতাধিক ভুঁইফোঁড় সংগঠন আছে৷ এমন আরেকটি সংগঠনের নাম ‘জননেত্রী পরিষদ' ৷ বহুল আলোচিত ভুঁইফোঁড় সংগঠনের নাম ছাড়াও আলোচনায় আছে বঙ্গবন্ধুর চিন্তাধারা বাস্তবায়ন পরিষদ, বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ, জনসেবা লীগ, বাউল লীগ, গাড়ী চালক লীগ, স্বাধীনতা লীগ, তরুণ জনতা লীগ, তরুণ লীগ, বাংলাদেশ ইলেকট্রিক লীগ, নাপিত লীগ, ফকির লীগ, প্রবীণ লীগ ও নবীন লীগসহ বাহারি নামের আরো অনেক সংগঠন৷

আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, "আমরা বারবার বিবৃতি দিয়ে এইসব ভুঁইফোঁড় লীগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছি৷ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর৷ আর নেতারা যারা তাদের অনুষ্ঠানে যান তাদের জানার কথা নয় যে সংগঠনগুলো কী করে, তাদের বৈধতা আছে কিনা৷ তবে এই সব সংগঠন নিয়ে আমরা বিব্রতও৷

বিএনপিতে যত...

বিএনপির একজন তরুণ নেতা সৈয়দ রুমি বলেন, দল ক্ষমতায় থাকার সময় বিএনপিতে অনেক ভুঁইফোঁড় সংগঠন ছিল৷ তখন তাদের দাপটে আমরা ছিলাম কোণঠাসা৷ দল ক্ষমতার বাইরে থাকায় এখন তারা তেমন আর সক্রিয় নয়৷ কেউ কেউ ব্যানার পরিবর্তন করে আবার আওয়মী লীগের নামের সাথে মিলিয়ে ভুঁইফোঁড় সংগঠন তৈরি করেছে৷ এরা এরকমই, যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে সেই দলের কাছে থাকতে চায়৷ শুধু তাই নয়, বিএনপির অনেক সুসময়ের নেতা এখন আওয়ামী লীগে ভিড়েছেন৷ তারা বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময়ও সুবিধা নিয়েছেন এখন আওয়ামী লীগের কাছ থেকেও সুবিধা নিচ্ছেন৷

বিএনপির পক্ষ থেকে গত সপ্তাহে বিবৃতি দিয়ে বলা হয় ‘শহীদ জিয়া ছাত্র পরিষদ' নামের সংগঠনটির সঙ্গে বিএনপির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই৷ সম্প্রতি এই সংগঠনটির নানা তৎপরতা বিএনপিকে বিব্রত করে৷

জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও সর্বোপরি জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপির নামের সাথে মিলিয়ে ভুঁইফোঁড় সংগঠন আছে৷ জিয়া পরিবার বা বিএনপির নাম ব্যবহার করে দেশের বাইরে ও অনেক সংগঠন খোলা হচ্ছে৷

এরকম শতাধিক সংগঠনের মধ্যে আছে দেশনেত্রী পরিষদ, জিয়া ফোরাম, তারেক জিয়া ফোরাম, নাগরিক দল, মানবাধিকার ফোরাম, সেবাদল, বাস্তুহারা দল, প্রজন্ম দল, তৃণমূল দল, ভূমিহীন দল, বন্ধুদল, বাউল দল, জাতীয়তাবাদী তরুন দল প্রভৃতি৷

আরো আছে জিয়া নাগরিক ফোরাম, জিয়া সেনা, জিয়া ব্রিগেড, দেশনেত্রী পরিষদ, খালেদা জিয়া পরিষদ, তারেক জিয়া ফোরাম, তারেক জিয়া মুক্তি পরিষদ, তারেক পরিষদ প্রভৃতি৷

বিএনপির দপ্তর সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, "এই সব সংগঠনের কোনো অনুমোদন দেয়নি বিএনপি৷ তবে সব সংগঠনই যে খারাপ তা নয়৷ এরমধ্যে ভালো সংগঠনও আছে৷ আর সংগঠন করা নাগরিকদের অধিকার৷ যারা নানা সংগঠন করে বেআইনি কাজ করেন সেটা দেখার দায়িত্ব আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর৷ আমরা দলের পক্ষ থেকে বারবার বিবৃতি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছি৷'' তিনি আরো বলেন, অনেকে সুবিধা পাওয়ার আশায় এই ধরনের সংগঠন তৈরি করেন, যা অনেক সময়ই বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে৷''

সান নিউজ/এমএম

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

দুপুরের মধ্যে ১০ জেলায় ঝড়ের শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীসহ দেশের ১০টি অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঘণ্ট...

ভোলায় উপকূলজুড়ে কোস্টগার্ড মোতায়েন  

ভোলা প্রতিনিধি: আসন্ন ৬ষ্ঠ উপজেলা...

সমুদ্রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শুরু কাল 

নিনা আফরিন, পটুয়াখালী: আগামীকাল...

নজর কাড়লেন কিয়ারা

বিনোদন ডেস্ক: কান চলচ্চিত্র উৎসব...

নীল তিমি সম্পর্কে রহস্য উদঘাটন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বর্তমানে পৃথিব...

ওএমএস বিতরণে গাফলতি হলে ব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক: খাদ্যমন্ত্রী সা...

পটল কেন উপকারী?

লাইফস্টাইল ডেস্ক: পটল আমাদের দেশের পরিচিত একটি সবজি, যা খেতে...

মিডিয়া ট্রায়াল বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে

জেলা প্রতিনিধি: বিচারের আগে মিডিয...

হোয়াটসঅ্যাপে আসছে পরিবর্তন

টেকলাইফ ডেস্ক: জনপ্রিয় যোগাযোগ মা...

মঙ্গলবার ১৫৭ উপজেলায় সাধারণ ছুটি 

নিজস্ব প্রতিবেদক: ষষ্ঠ উপজেলা পরি...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা