আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীনের গুইঝো প্রদেশে একটি কয়লা খনিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১৬ জন নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: নাইজেরিয়ায় সন্ত্রাসী হামলা, নিহত ১৪
রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। এ অগ্নিকাণ্ডের পরপরই প্রদেশটির পানঝৌ শহরের সমস্ত কয়লা খনি ১ দিনের জন্য উৎপাদন স্থগিত করা হয়েছে। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এবং এএফপি।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল সকালে দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের সানজিয়াওশু কয়লা খনিতে আগুনের উৎপাদন হয় বলে রোববার রাতে পানঝৌ সিটি সরকার তাদের ওয়েবসাইটে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে গোলাগুলিতে নিহত ৩
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, কনভেয়ার বেল্টে আগুন লেগেছিল এবং আগুনের ফলে ঐ ১৬ জন খনিতে আটকা পড়েছিল। যদিও অগ্নিকাণ্ডে ঠিক কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে এবং কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, সে সম্পর্কে এ বিজ্ঞপ্তিতে বিশদ কোনো বিবরণ দেওয়া হয়নি।
পৃথক প্রতিবেদনে রয়টার্স বলছে, গুইঝো পাঞ্জিয়াং রিফাইন্ড কোল কোম্পানির ফাইলিং অনুযায়ী, রোববার দক্ষিণ চীনের গুইঝো প্রদেশের পানঝৌ শহরে একটি কয়লা খনি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: সোমালিয়ায় বিস্ফোরণ, নিহত ১০
সাংহাইভিত্তিক কমোডিটিস কনসালটেন্সি মিস্টিল অনুযায়ী, পানঝৌ শহরের সমস্ত কয়লা খনি ১ দিনের জন্য তাদের উৎপাদন কর্মকাণ্ড স্থগিত করেছে। তবে গুইঝোয়ের খনি নিরাপত্তা প্রশাসন রয়টার্সকে জানায়, তাদের কাছে পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই।
মিস্টিলের তথ্যমতে, অঞ্চলটির প্রতি বছর প্রায় ৫২.৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে, যার বেশিরভাগই কোকিং কয়লা।
এ দুর্ঘটনার পর পাঞ্জিয়াং কয়লা নামে পরিচিত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এ কোম্পানি তার সমস্ত খনিতে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি পরিদর্শনের নির্দেশ দিয়েছে। সেই সাথে নিরাপদ উৎপাদন নিশ্চিত করার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে কোম্পানিটি।
আরও পড়ুন: বেনিনে জ্বালানি বিস্ফোরণ নিহত ৩৫
উল্লেখ্য, গত আগস্ট মাসে চীনের উত্তরাঞ্চলীয় শানজি প্রদেশের একটি কয়লা খনিতে বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়েছিলেন। সিসিটিভির প্রতিবেদন অনুসারে, এ সময় খনিতে প্রায় ৯০ জন শ্রমিক ছিলেন। তাদের মধ্যে কমপক্ষে ৯ জন ভেতরে আটকা পড়েন।
চীনে গত কয়েক দশকে খনি নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতি ঘটলেও দেশটির গণমাধ্যমে বড় ধরনের দুর্ঘটনার খবর উঠে আসছে। অবশ্য এর আগে খনি দুর্ঘটনার অনেক খবরই দেশটির সরকারি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ করা হতো না।
আরও পড়ুন: নৌকা থেকে ২৭ অভিবাসনপ্রত্যাশী উদ্ধার
দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে এমন সব খনিতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। গত ফেব্রুয়ারিতে চীনের স্বায়ত্তশাসিত ইনার মঙ্গোলিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় আলক্সা লীগ এলাকায় একটি কয়লা খনিতে ধসে কমপক্ষে ৫৭ জন নিখোঁজ হন।
সে সময় কয়েক মাস ধরে ইনার মঙ্গোলিয়ায় খনি ধসের ঘটনায় চূড়ান্ত হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করেনি দেশটির কর্তৃপক্ষ। গত জুনে ঐ দুর্ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, খনি ধসে ৫৩ জন মারা গেছেন।
আরও পড়ুন: নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল যুক্তরাষ্ট্র
গত ডিসেম্বরে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জিনজিয়াং প্রদেশের একটি সোনার খনিতে ধসের ঘটনায় সেখানে কর্মরত কমপক্ষে ৪০ জন চাপা পড়েন।
এর আগে ২০২১ সালে দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় শানজি প্রদেশে একটি কয়লা খনিতে আকস্মিক বন্যায় দেড় ডজনের বেশি শ্রমিক আটকা পড়েন এবং তাদের মধ্যে কমপক্ষে ২ জনের প্রাণহানি ঘটে। বাকিদের উদ্ধার করা হয়।
সান নিউজ/এনজে