সারাদেশ

লকডাউনে কেমন আছে তারা

শওকত জামান,জামালপুর: ওরা নিন্মআয়ের শ্রমজীবী মানুষ। দিন আনে দিন খায়। রোজগার না হলে ঘরে চুলো জ্বলেনা। অভুক্ত থাকতে হয় পরিবারের লোকজনদের। উপায় নেই,তাই খেয়ে না খেয়ে পার করতে হয় দিন। খাবার না পেয়ে ক্ষিধায় শিশুদের কান্নায় বুক ফেঁটে যায় অসহায় বাবা-মাদের। এই চলমান লকডাউনে কাজ না থাকায় এই মর্মপীড়া তাদের মনে বেশী করে বাজছে।

বাংলাদেশের দরিদ্রপীড়িত জেলা জামালপুর। নদী ভাঙনসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে গৃহহীন ও নিন্মআয়ের মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলছে এই জেলায়। রিকশা চালনা, ঠেলাগাড়িহকারী, ফুটপাতে সবজীসহ তরকারী বিক্রিকারী,দোকানপাটে কর্মচারী,হোটেল শ্রমিক ও পরিবহনে শ্রমিকসহ নানা পেশায় জড়িয়ে রয়েছে। বর্তমানে করোনাকালে কঠোর বিধি নিষেধে এসব পেশার নিন্মআয়ের মানুষের কর্মের পরিধি সংকোচিত হওয়ায় এবং কোন কোন ক্ষেত্রে কর্মের সুযোগ না থাকায় আয়ের পথ বন্ধ হয়ে পড়েছে। তাদের দিন কাটে অনাহারে অর্ধাহারে। পাই কোন সরকারী-বেসরকারি সাহায্য সহযোগিতা। পাশে এস দাঁড়ানি সমাজের বিত্তশালীরা। খোঁজ নেইনি জনপ্রতিনিধিরাও। কর্মহীন এসব নিন্মআয়ের মানুষের কষ্টমাখা জীবনের গল্প শুনবে কে?

লকডাউনে শ্রমজীবী মানুষ কেমন চলছে ধোঁজ নিতে মঙ্গলবার (৬ জুলাই) দুপুরে গিয়ে ছিলাম জামালপুরের প্রধান বাসষ্ট্যান্ডে। সেখানে জটলা বেঁধে অলস সময় পাড় করছে পরিবহন শ্রমিকরা। তাদের মধ্যেই একজন পরিরহন শ্রমিক ৩৫ বছর বয়সি জয়নাল আবেদন । তিনি বাসের ড্রাইভার। এই বাসড্রাইভার আক্ষেপের সুরে বলেন, গাড়ী বন্ধ মানে আমগো সবই বন্ধ। গাড়ির চাকা চললে আমগো পেট চলে,ঘরে চুলো জ্বলে,দু’মুঠ পেটভরে খেতে পাই। খুব কষ্টের মধ্যে দিন পাড় করছি। দেশে করোনা সংক্রামণ বাড়ায় সরকার লকডাউন দিছে। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে। যতদিন লকডাউন প্রয়োজন থাকুক। কিন্তু লকডাউনের জন্য কি আমরা মরমু। সরকার ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেয় এই দাবি রইলো স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি।

বিসিক সড়কের সামনে কথা হয় সদরের কেন্দুয়া কালিবাড়ির অটো রিকসা চালক মঞ্জুরুল আলমের সাথে। করুন সুরে তিনি বলেন, সংসারে চারজন মানুষ খাওইয়ে। ঘরে বউ পোলাপান না খেয়ে আছে। নিরুপায় হয়ে এই কড়াকড়ির মধ্যেও অটোবাইক নিয়া বের হয়েছি। রাস্তায় মানুষ নেই আছে পুলিশ। সামনে পড়লেই অটোবাইকের তিন চাকায় লিক করে দেয়। প্রতি চাকা লিক সড়াতে লাগে ৪০ টাকা। এমনেই কামাই নেই। খামু কি? অটোবাইকের ভাড়া ও ঘর ভাড়াই দিমু ক্যমনে। খুবই কষ্টে দিন কাটছে।

বাসষ্ট্যান্ড এড়িয়ায় বন্ধ থাকা নিজ পান দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আছে শহরের জঙ্গলপাড়া বোর্ডঘর গ্রামের ৩০ বছর বয়সি দোকানি ইসমাইল। চোখেমুখে কষ্টের ছাঁপ। করোনা সংক্রামনের শুরু থেকেই ব্যবসা খারাপ যাচ্ছে। কঠোর লকডাউনের বিধি নিষেধে তাঁর পান দোকানটি বন্ধ। তিনি জানালেন কষ্টমাখা সংসারের গল্প। আয় রোজগারের একমাত্র উপায় আমার এই দোকান। ৬দিন ধরে বন্ধ থাকায় ঘরের চুলোয় আগুন জ্বলছেনা। বউ পোলাপান না খাইয়া আছে। ওগো মুখে খাবার জুটামু ক্যামনে। আল্লায় আমগো করোনায় মরণ দেয়না ক্যান।

জয়নাল আবেদিন,মঞ্জুরুল আলম ও ইসমাইলের মতো নিন্মআয়ের মানুষের একই অবস্থা। তারা বেঁচে থাকতে সরকারী-বেসরকারি,স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও সমাজের ধনবান মানুষের প্রতি সাহায্যের আবেদন করেছে। অসহায় মুখগুলো খাবার চায়।

জামালপুরের জেলা প্রশাসক মোর্শেদা বেগম বলেন, লকডাউনেও সংক্রামণ কমছেনা বরং বাড়ছে। লকডাউনে নিন্মআয়ের মানুষজন সমস্যায় পড়েছে। খুব শীগ্রই নিন্ম আয়ের মানুষজনের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের ব্যবস্থা নেয়া হবে।


সাননিউজ/ জেআই

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

লক্ষ্মীপুরে প্রবাসীর বাড়িতে হামলা-ভাংচুর 

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরে...

আগুনে শতাধিক ঘর-দোকান ভস্মীভূত

জেলা প্রতিনধি : গাজীপুরের ভোগড়া এলাকায় আগুনে তিনটি কলোনির...

ইন্দোনেশিয়ায় শীতল লাভায় নিহত ৬৭

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইন্দোনেশিয়ার স...

দেশ ছাড়ল বাংলাদেশ দল

স্পোর্টস ডেস্ক : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্ব...

কানে ‘গোলাপী রানি’ উর্বশী

বিনোদন ডেস্ক: চলচ্চিত্র জগতের সবচ...

হজযাত্রীর টাকা নিয়ে এজেন্সি মালিক উধাও

নিজস্ব প্রতিবেদক: হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ২৪...

আগুনে পুড়ল ১০ দোকান 

জেলা প্রতিনিধি: গাইবান্ধা শহরের ক...

মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ৩৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর বিভিন...

প্লাস্টিক কারখানায় আগুন

জেলা প্রতিবেদক: গাজীপুর জেলার টঙ্...

অর্থনীতি সমিতির সম্মেলন আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ অর্থনীত...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা