মার্চ আমাদের অহংকারের মাস (ছবি: প্রতীকী)
মতামত

মুক্তির অভিষেকের মাস

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম: আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ২৬ মার্চ একটা রোমাঞ্চকর ও ঘটনাবহুল। আজ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছরে এই মাসের গুরুত্ব অপরিসীম। এই মাস আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও রাজনৈতিক মুক্তির অভিষেকের মাস।

আমরা এই উপমহাদেশে অন্যদের চেয়ে প্রায় দুই যুগ পর স্বাধীনতা অর্জন করেছি; যে ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে তা অতুলনীয়।

এই মাস আমাদের অহংকারের মাস। এই মাসেই আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সারাদেশে অসহযোগ আন্দোলন পালন করা হয়।

পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের একজন প্রতিনিধি হিসেবে আমি তখন সীমান্তের মেহেরপুরের মহকুমা প্রশাসক ছিলাম। কিন্তু আমাদের অফিসের দৈনন্দিন কাজ, ব্যবসা-বাণিজ্য, সবকিছু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবন থেকে নিয়ন্ত্রিত হতো। বস্তুত আমরা তখনই স্বাধীন হয়ে গিয়েছিলাম। পৃথিবীর ইতিহাসে অসহযোগ আন্দোলনের মাধ্যমে এত বড় অর্জন আমার জানা নেই।

এই মার্চ মাসেরই ৭, ২৫ এবং ২৬ তারিখ আমাদের মাহেন্দ্রক্ষণ ছিল। রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ৭ মার্চ লাখ লাখ জনতার সামনে বঙ্গবন্ধু যে ভাষণ দিয়েছিলেন সেটা শোনার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। এখনও মনে পড়ে সেদিন একজন সিএসপি অফিসার হয়েও বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষণ ও সংগ্রামের ডাক শুনেছিলাম। 'এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম।' বঙ্গবন্ধুর এই ডাক-সংগ্রামে একজন সাধারণ সৈনিক হিসেবে আমাকে দীক্ষিত করেছিল।

২৫ মার্চ পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আমাদের ওপরে অর্থাৎ বাঙালি জাতির ওপর যে পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল, তারই প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধু আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন।

পরের ৯ মাস একজন সাব-সেক্টর কমান্ডার হিসেবে অংশগ্রহণের সৌভাগ্য হয়েছিল। ১৭ এপ্রিল মেহেরপুর বৈদ্যনাথতলায় বাংলাদেশের স্বাধীন সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে একজন আয়োজক ও সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালনের সৌভাগ্য আমার হয়েছিল।
এরপর এলো সেই বিজয়ের মাহেন্দ্রক্ষণ। ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে পরাজিত করে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলো।

আমাদের ৫০ বছরের ইতিহাসে অনেক উত্থান-পতন হয়েছে। ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে আমাদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে সমাহিত করার হীনচেষ্টা করা হয়েছিল। এসব অপশক্তির বিরুদ্ধে নিরলস সংগ্রাম করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে উন্নয়নের রোল মডেল করতে সক্ষম হয়েছেন।

সাধারণ মানুষের জীবনে অর্থনৈতিক উন্নয়নের যাত্রা বেগবান হয়েছে। তবে আমাদের সামনে এখনও দীর্ঘ পথ। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি এখনও সক্রিয়। আমাদের জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য সবাইকে ত্যাগ স্বীকার ও পরিশ্রমের মাধ্যমে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সাধারণ মানুষের জীবনের উন্নতির জন্য ত্যাগ স্বীকার করে গেছেন। তারই সুযোগ্য কন্যা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সাধারণ মানুষের উন্নয়নের জন্যই ত্যাগ স্বীকার করে যাচ্ছেন।

আরও পড়ুন: ইউক্রেন সংকটে দক্ষিণ এশিয়ায় যে প্রভাব পড়তে পারে

আমাদের ভবিষ্যৎ অগ্রযাত্রায় সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নই মূল লক্ষ্য হতে হবে। সেই সঙ্গে শিক্ষা, সংস্কৃতি, মানবিকতা ও সাম্য উজ্জীবিত হোক- এই আমার প্রত্যাশা।

জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।

লেখক: প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা।

সাননিউজ/এমএসএ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

কর্মস্থলে না এসেও বেতন তোলেন শিক্ষক

আবু রাসেল সুমন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:

প্রস্তুতি ম্যাচের সূচি প্রকাশ

স্পোর্টস ডেস্ক : আসন্ন আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল আস...

টিভিতে আজকের খেলা

স্পোর্টস ডেস্ক: প্রতিদিনের মতো আজ শনিবার (১৮মে) বেশ কিছু খেল...

মেঘনা নদীতে পাঙ্গাশ রক্ষায় অবৈধ চাই ধ্বংস 

ভোলা প্রতিনিধি: ভোলায় মেঘনা নদী থ...

মুন্সীগঞ্জে ভাসমান মরদেহ উদ্ধার

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ : মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার মধ্য কোটগাঁ...

বাক-বিতণ্ডার জেরে নিহত ১

উপজেলা প্রতিনিধি: সাভার জেলার আশু...

হিমাগারে মজুত ১ লাখ ডিম

জেলা প্রতিনিধি: বগুড়া সদরে &lsquo...

নিখোঁজ ছাত্রের লাশ উদ্ধার

জেলা প্রতিনিধি : চাঁদপুরে নিখোঁজ হওয়ার পর ডাকাতিয়া নদী থেকে...

কিরিগিজস্তানে শিক্ষার্থীদের বাইরে যাওয়া নিষেধ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কিরগিজস্তানের রাজধানী বিশকেকে বাংলাদেশি,...

ঘূর্ণিঝড়ের সবশেষ তথ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক: সারাদেশে চলমান...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা