নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে কবির বাহিনীর প্রধান কবির হোসেন ও তার সাত সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) এ নিয়ে কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানায় র্যাব।
গ্রেফতার অন্যরা হলেন, মো. রুবেল ওরফে পানি রুবেল, আমির হোসেন, মো. মামুন, রিয়াজ, মেহেদী হাসান, মামুন ওরফে পেটকাটা মামুন ও বিল্লাল। তাঁদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, চারটি গুলি, দেশীয় অস্ত্র এবং ৪১৭টি ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়। তাদের নামে একাধিক মামলা রয়েছে।
র্যাব জানায়, এই দলের সদস্যরা টিকটকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও বানিয়ে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে চেয়েছেন। তারা টাকার বিনিময়ে ভাড়াটে হিসেবে কাজ করতেন। কবির তার দলে এমন ছেলেদের ভেড়াতেন, যাদের এলাকায় প্রভাব আছে। এই দলের সবাই জন্মসূত্রে মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা। মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান, বসিলা, চাঁদ উদ্যান এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধে সম্পৃক্ত তারা।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, কয়েকজন ভুক্তভোগী ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধ সম্পর্কে র্যাবের কাছে অভিযোগ দেয়। এ নিয়ে অনুসন্ধানে নেমে এই চক্রের প্রধানসহ কয়েকজন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা বলেছে, এই দলের প্রধান কবির। সদস্য ২০–২২ জন। তারা দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে হত্যা, সন্ত্রাস, মাদক কেনাবেচা, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি করে আসছে।
এই চক্রের প্রধান কবির সম্পর্কে খন্দকার আল মঈন বলেন, ১৯৯০ সালে ঢাকায় এসে কবির বিভিন্ন পেশায় যুক্ত হন। কিশোর বয়সে পরিবারের সঙ্গে বরগুনা থেকে ঢাকায় এসে রাজমিস্ত্রির সহযোগী হিসেবে কাজ শুরু করেন কবির হোসেন। পরে গাড়ি চালনা, হাউজিং কোম্পানিতে চাকরিসহ বিভিন্ন পেশায় সম্পৃক্ত হন তিনি।
২০১০ সালে গাঙচিল সন্ত্রাসী বাহিনীতে যোগ দেন তিনি। এই বাহিনীর সঙ্গে মিলে তুরাগ ও বুড়িগঙ্গা নদীতে মালবাহী নৌকা এবং ট্রলারে চাঁদাবাজি শুরু করেন। র্যাবের অভিযানে গাঙচিল বাহিনীর অস্তিত্ব সংকটে পড়লে ২০১৬ সাল থেকে কবির বাহিনী গড়ে তোলে।
গত পাঁচ বছর আগে নিজেই একটি বাহিনী তৈরি করে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। তিনি অর্থের বিনিময়ে জমি দখলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। তার বাহিনীর সদস্যরা গাড়ি চালনা, দিনমজুরসহ বিভিন্ন পেশার আড়ালে বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িত। কবিরের বিরুদ্ধে হত্যা, গণধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধে ২৪টি মামলা রয়েছে। তিনি ২০১৮ সালে প্রথম গ্রেফতার হন।
সান নিউজ/এমকেএইচ