নিজস্ব প্রতিনিধি, নেত্রকোনা : জীবনের শেষ সম্বলটুকু চলে গেছে সোমেশ্বরী নদীর ভাঙ্গনে। সবকিছু হারিয়ে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছিলেন কৃষ্ণেরচর স্কুলের বারান্দায়। সেখানেই ছেলে মেয়ে নিয়ে কোনো রকম দিন কেটেছে তাদের। কৃষ্ণেরচড় এলাকায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে পাওয়া স্বপ্নের নিজের ঘরে জীবনে প্রথম ঈদ করলেন তারা। এ যেন এক অন্য রকম আনন্দ।
(২১ জুলাই) বুধবার ঈদের দিন কৃষ্ণেরচর আবাসন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন দৃশ্য।
‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার- গৃহ হবে সবার’ প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রাষ্ট্রের অর্থে দুর্গাপুর উপজেলায় ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে ভূমিহীন ও গৃহহীনের জন্য ৮০টি পরিবারকে দুই শতক জমির মালিকানাসহ দুই কক্ষবিশিষ্ট একটি করে সেমিপাকা ঘর উপহার দেয়া হয়। গৃহহীনরা এই ঘর পেয়ে প্রথম বারের মতো ঈদ করতে পেরে ঘরে ঘরে আনন্দের বন্যা বইছে।
ঘর পাওয়া জোবেদা বেগম (৬২) বলেন, সোমেশ্বরী নদী আমার ঘর লইয়া গ্যাছে, মাইনসের বাড়ি বাড়ি ছাপড়া তুইল্যাও ঘুমাইছি। শেষ মেশ কৃষ্ণেরচর ইসকুলের বারিন্দাত রইছি। পরে উপজিলাত আবেদন করছি ঘরের লাগিন। জীবনে কোনদিন ইটের দলান ঘরে থাকবাম, নিজের দলান ঘর অইবো এইডা ভাবজিনা। নয়া ঘরে ঈদ করতাছি, কি যে ভালা লাগতাছে গো বাজান। হেদিন এমপি সাইব ঘর গুলার খুঁজ নিয়া আমরারে ঈদে গুস্তু খাওনের ট্যাহা দিছইন, টেউনু সাইব আইয়্যা ঈদের বাজার দিছইন, আমরার আর কিতা লাগে? আমরার মাতার তাজ অইয়্যা থাকবাইন শেখ হাসিনা।
আকবর হোসেন (৫১) পেশায় দিনমজুর, পায়ের অসুস্থতার কারণে ঠিকমতো চলতেও পারেন না। গত ৫ বছর আগে দুর্ঘটনায় তার পায়ের সমস্যা হয়েছে। স্ত্রী সন্তান নিয়ে অন্যের ভিটায় আশ্রিত। জীবনের পুরো সময়টা কাটিয়েছেন অন্যের ভিটায়। অভাবের সংসার, নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা। জমি কিনে বাড়ি করার সামর্থ্য ছিল না তার।
সান নিউজ/এসএ