জেলা প্রতিনিধি : চাঁপাইনবাবগঞ্জে লোভনীয় প্রতিশ্রুতি দিয়ে কয়েকশ গ্রাহকের প্রায় কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন অনিবন্ধিত ও অবৈধ এনজিও সজাগ দারিদ্র্য উন্নয়ন সংস্থার ২ মালিক। এ ঘটনায় টাকা ফেরতের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী গ্রাহক ও এনজিওর কর্মীরা।
আরও পড়ুন : বিশ্বব্যাপী কমেছে প্রাণহানি
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে জেলার শান্তি মোড়ের এক গ্রাহকের বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এক লাখ টাকা জামানত রাখলে মাসে লাভ দেওয়া হবে ১৩৫০ টাকা, যখন ইচ্ছে টাকা ফেরত পাওয়া যাবে। ৭ বছর মেয়াদে টাকা রাখলে পাওয়া যাবে জামানতের দ্বিগুণ টাকা। এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ঐ এনজিও।
আরও পড়ুন : বাজারে আসছে ক্যান্সারের ভ্যাকসিন
সংবাদ সম্মেলনে জেলা শহরের সোনারমোড় এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের মেয়ে বেবী বেগম জানান, আমার ছেলে এনজিওতে টাকা রাখার বিষয়টি জানে না। আমি তাকে বলতেও পারব না। সজাগ দারিদ্র্য উন্নয়ন সংস্থার মালিক ইরানী খাতুন ও মাসুদ রানা ২ জনই পালিয়েছেন। কোথায়, কার কাছে যাব কিছুই বুঝতে পারছি না। চোখের পানি ফেলা ছাড়া কোনো উপায় নেই।
পরিবারের লোকজনকে বলেছি, আমি মারা যাওয়ার পর ছেলেকে এনজিওতে টাকা রাখার কথা বলিও। আগে জানলে ছেলে হার্ট অ্যাটাকে মারা যাবে।
আরও পড়ুন : বাখমুতের অধিকাংশই রাশিয়ার দখলে
চুনারীপাড়া মহল্লার আসলাম আলীর স্ত্রী পলি বেগম জানান, স্বামীর অনেক কষ্টে জমানো টাকাগুলো এনজিওতে জমা নেয়ার জন্য বাসায় অনেকবার এসেছিল সজাগ দারিদ্র্য উন্নয়ন সংস্থার মালিক ইরানী খাতুন ও মাসুদ রানা।
টাকা নেওয়ার সময় বলেছিল, যখন প্রয়োজন হবে টাকা পেয়ে যাবেন। এখন গত ৮-৯ মাস থেকে টাকা চাইলেও বিভিন্ন অযুহাতে ঘুরাচ্ছে। তারা ২ জনই পালিয়েছে। এখন আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি।
আরও পড়ুন : রংপুরে বাসের ধাক্কায় নিহত ২
এনজিওর মাঠকর্মী ফাতেমা বেগম জানান, আমাকে দিয়ে গ্রাহকদের টাকা আদায় করেছে। তারা পালিয়ে যাওয়ায় গ্রাহকরা আমার ওপর চাপ দিচ্ছে। আমার নিজেরও ৫০ হাজার টাকা জামানত ও ৮০ হাজার টাকা বেতন বাবদ পাওনা রয়েছে। অথচ তারা ২ জন এসব টাকা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় জমি ও বাড়ি ক্রয় করেছে।
প্রশাসনের নিকট দাবি, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে আমাদের জামানতের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করুন।
আরও পড়ুন : যুদ্ধজাহাজ উদ্বোধন করলেন এরদোগান
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী গ্রাহক লতা বেগম, আসলাম আলী, ইশরাত জাহান প্রমুখ। এ বিষয়ে সজাগ দারিদ্র্য উন্নয়ন সংস্থার দুই মালিক ইরানী খাতুন ও মাসুদ রানার সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি বাড়িতে গিয়েও তাদেরকে পাওয়া যায়নি।
এনজিও মালিক ইরানী খাতুনের ছেলে লুৎফর রহমান ইমু জানান, মাসুদ রানা ও আমার মায়ের যৌথ মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সজাগ দারিদ্র্য উন্নয়ন সংস্থা।
আরও পড়ুন : আরও ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাবে দেশ
আমার জানা মতে, জনগণের প্রায় ৪০ লাখ টাকা জামানত রয়েছে এবং ৩০ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া আছে। কিন্তু অজানা কারণে মাস খানেক আগে থেকে আমার মা নিখোঁজ রয়েছে। তাকে সন্ধান করার পর মাসুদ রানা ও গ্রাহকদের সাথে কথা বলে এর সমাধান করতে উদ্যোগ নিব।
তবে নিখোঁজের ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
আরও পড়ুন : মিনিকেট নাম দিয়ে চাল বিক্রি নয়
জানা গেছে, সমাজ সেবা অধিদপ্তরের নিবন্ধন রয়েছে সজাগ দারিদ্র্য উন্নয়ন সংস্থার।
এ বিষয়ে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোসা. উম্মে কুলসুম বলেন, এনজিওটি সম্ভবত আমাদের নিবন্ধিত নয়। আমাদের নিবন্ধন নিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠান আর্থিক লেনদেন করতে পারবে না।
আরও পড়ুন : সাংবাদিকতা কোনো অপরাধ নয়
আমরা শুধুমাত্র সমাজ সেবামূলক কাজের জন্য নিবন্ধন দিয়ে থাকি। মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথোরিটির নিবন্ধন ছাড়া ক্ষুদ্র ঋণের কার্যক্রম পরিচালনা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ।
সান নিউজ/এনজে