জাতীয়

কাউন্সিলর নান্নুর হলফনামায় নেই ‌নান্নু মার্কেট

মাহমুদুল আলম: আব্দুর রউফ নান্নু ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। চলতি মেয়াদে তিনি তৃতীয় বারের মতো কাউন্সিলর। এর মধ্যে প্রথমবার স্বতন্ত্র এবং শেষ দুই বার আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে কাউন্সিলর হন তিনি।

সর্বশেষ কাউন্সিলর নির্বাচনে জমা দেয়া হলফনামায় দোকান বা অন্যান্য ভাড়া বিষয়ে নিজের এবং তার উপর নির্ভরশীলদের আয়ের ঘরে লেখা আছে ’প্রযোজ্য নয়’। হলফনামায় উল্লেখ নেই তার নির্বাচনী এলাকায় অবস্থিত এবং নিজ নামের ’নান্নু মার্কেট’-এর।

হলফনামায় তার সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা লেখা আছে ‘দশম শ্রেণি’। ওই সময় তিনি কোনো ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন কিনা- এ সংক্রান্ত ঘরে লেখা আছে ‘প্রযোজ্য নয়’। অতীতেও তার বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়নি বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়।

হলফনামায় তার ব্যবসা/পেশার বিবরণীতে লেখা আছে ‘ব্যবসা ও সম্মানী ভাতা’।

তার এবং তার উপর নির্ভরশীলদের আয়ের উৎস বিষয়ক ঘরে কৃষিখাতে লেখা আছে ‘প্রযোজ্য নয়’। বাড়ি/এপার্টমেন্ট/দোকান বা অন্যান্য ভাড়া বিষয়েও নিজের এবং নির্ভরশীলদের ঘরে লেখা আছে ’প্রযোজ্য নয়’। ব্যবসা হতে বাৎসরিক আয় উল্লেখ করা আছে যথাক্রমে দুই লাখ ৪০ হাজার ৩৭৩ এবং দুই লাখ ১৭ হাজার ৪৫০ টাকা। শেয়ার, সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত নিজ নামের ঘরে লেখা আছে ’প্রযোজ্য নয়’।

আর নির্ভশীলদের ঘরে লেখা আছে শুধু ’৯০ টাকা’। পেশা (শিক্ষকতা, চিকিৎসা, আইন, পরামর্শক ইত্যাদি) সিটি কর্পোরেশনের সম্মানী ভাতা চার লাখ ৬৮ হাজার টাকা। নির্ভরশীলদের ঘরে লেখা আছে ‘প্রযোজ্য নয়’। চাকুরি এবং অন্যান্য বিষয়ওে লেখা আছে ‘প্রযোজ্য নয়’।

প্রার্থীর নিজের, তার স্ত্রীর এবং নির্ভরশীলদের নামে পরিসম্পদ এবং দায়ের বিবরণীতে অস্থাবর সম্পদ বিষয়ে হলফনামায় তাদের স্বামী-স্ত্রীর নগদ টাকা উল্লেখ করা আছে যথাক্রমে ১৮ হাজার ৯৮৪ এবং ৯৮ হাজার ৩১৫ টাকা। বৈদেশিক মুদ্রা বিষয়ে সবার ক্ষেত্রেই লেখা আছে ’প্রযোজ্য নয়’। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ তাদের স্বামী - স্ত্রীর নামে যথাক্রমে তিন লাখ ৫১ হাজার ৬৭৭ এবং ছয় হাজার ২৫ টাকা। বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভূক্ত নয় এমন কোম্পানির শেয়ার নিজ নামের ঘরে লেখা আছে ‘নাই’।

আর অন্যদের ঘরে লেখা আছে ‘প্রযোজ্য নয়।’ পোস্টাল, সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ বিষয়ে সব ঘরে লেখা আছে ‘প্রযোজ্য নয়’। বাস, ট্রাক, মটরগাড়ি, লঞ্চ, স্টিমার, বিমান ও মটরসাইকেল ইত্যাদির বিবরণে নিজ নামের ঘরে লেখা আছে ‘ঢাকা মেট্রো-গ ১৫-৯০০৯, সাড়ে ২৪ লাখ টাকা’। এ বিষয়ে অন্যদের ঘরে লেখা আছে ‘প্রযোজ্য নয়।’ স্বর্ণ ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতু ও পাথর নির্মিত অলংকারাদি তাদের স্বামী - স্ত্রীর নামে যথাক্রমে লেখা আছে ২৫ ও ৩৫ ভরি। ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী যথাক্রমে ৭৫ হাজার ও এক লাখ ৯০ হাজার টাকা। আসবাবপত্র যথাক্রমে ৪৫ হাজার ও দুই লাখ ১০ হাজার টাকা।

স্থাবর সম্পদ নিয়ে তার নিজের, স্ত্রীর এবং নির্ভরশীলের নামে সব বিষয়ে বলা আছে ‘প্রযোজ্য নয়’। স্থাবর সম্পদের বিষয়গুলো হচ্ছে কৃষি জমি, অকৃষি জমি, দালান, আবাসিক / বাণিজিক, বাড়ি/এপার্টমেন্ট, চা বাগান, রাবার বাগান, মৎস খামার ও অন্যান্য।

দায়-দেনার ঘরে লেখা আছে ‘নাই’।

সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর এই হলফনামায় স্বাক্ষর করেন আব্দুর রউফ নান্নু। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহানা বেগম এতে স্বাক্ষর করেন। তবে ওই একইদিন গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠে আসে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিএনসিসির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুর রউফ নান্নুর বিরুদ্ধে রাস্তা দখল করে মার্কেট নির্মাণ ও মাদক ব্যবসায় মদদ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এ কাউন্সিলর কয়েক বছর আগে মিরপুর ১১ নম্বর এলাকায় সড়কের একটি বড় অংশ দখল করে অর্ধশত দোকান বানিয়েছেন। এ স্থানটি বর্তমানে ‘নান্নু মার্কেট’ নামে পরিচিত। সরকারের শুদ্ধি অভিযান শুরু হওয়ার পর বেশ কিছু দিন তিনি আত্মগোপনে ছিলেন বলেও জানা যায়।

প্রতিবেদনটি প্রকাশের ছয় দিন পর ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি গণমাধ্যমে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনেও তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠে আসে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুর রউফ নান্নুর বিরুদ্ধে পল্লবীর পলাশনগর ও কাউলিয়া বাঁধ এলাকায় মাদক বাণিজ্য এবং জুয়ার আসর পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে। শুদ্ধি অভিযানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তার বাড়িতে একাধিকবার হানা দিলেও তাকে পায়নি।

নান্নু মার্কেট প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাননিউজকে কাউন্সিলর বলেন, এসব কথা এখানকার সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ বলে থাকেন। নির্বাচন আসলে তিনি এসব কথা বলেন। নির্বাচনে এটাই উনার চালান। আমি দুই বার আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছি। দুইবারই তিনি আমার বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছেন।

কিন্তু হলফনামায় ‘নান্নু মার্কেট’- এর কথা উল্লেখ নেই। এই প্রসঙ্গ টানলে নান্নু বলেন, কে এটার নাম দিয়েছেন ‘নান্নু মার্কেট’ তাও জানি না। কোথাও কি লেখা আছে ‘নান্নু মার্কেট’?

সান নিউজ/আরআই

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ভোলায় ছাত্রলীগের বৃক্ষরোপন কর্মসূচি পালিত 

ভোলা প্রতিনিধি: তীব্র তাপদাহ থেকে...

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীর গণসংযোগ

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:

বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস আজ

সান নিউজ ডেস্ক: আজ বিশ্ব ম্যালেরি...

টঙ্গীবাড়ি ভাতিজারা পিটিয়ে মারলো চাচাকে

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:

গরমে ত্বক ব্রণমুক্ত রাখতে যা খাবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক: গরমকাল এলেই ব্র...

কুষ্টিয়ায় সড়ক দূর্ঘটনায় সাংবাদিকের মৃত্যু 

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় সড়ক...

গৃহবধূর স্যালোয়ার থেকে ইয়াবা উদ্ধার

নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর সদর...

কেশবপুরে নির্বাচনী কার্যালয়ের শুভ উদ্বোধন

আব্দুর রাজ্জাক সরদার, কেশবপুরঃ আগামী ০৮ ই মে ২০২৪, রোজ বুধবা...

মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনা নিহত ২

জেলা প্রতিনিধি: ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজে...

থাইল্যান্ডের সঙ্গে ৫ দ্বিপক্ষীয় নথি সই

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বিশেষ...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা