সাননিউজ ডেস্ক: করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে ঈদের আগে লকডাউন তুলে নেওয়ার হয়েছে। চলতি জুলাই মাসে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা মহামারীর দেড় বছরে আগের সব মাসকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে হতাশ কণ্ঠে বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, আগে আমরা যেমনটা পেরেছি, পেশেন্ট শনাক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আসলে আমরা চিকিৎসা করে ভালো করতে পেরেছি। এখন আগে আসলেও আমরা কিছু করতে পারছি না। কিছু কিছু জায়গায় মনে হচ্ছে আমরা ভাইরাসের কাছে হেরে যাচ্ছি।
ডেল্টার সংক্রমণ নগর ছাড়িয়ে গ্রামে পৌঁছে যাওয়া এবং আক্রান্ত কম বয়সীদের মৃত্যু বেড়ে যাওয়া বিপর্যয়কর এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে বলে চিকিৎকদের ভাষ্য।
গত বছরের এই সময়ের সঙ্গে এবারের পার্থক্য তুলে ধরে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, গত বছরে সংক্রমণ শুধু ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বড় শহরগুলোতে ছিল। এবার ঢাকার বাইরেও সংক্রমণ ছড়িয়েছে ব্যাপক আকারে।
ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, একটা সময় আমরা বলতাম, বয়স্ক যাদের কোমর্বিডিটি বেশি, তারা মারা যাচ্ছে। কিন্তু এখন দেখছি ইয়াংরাও মারা যাচ্ছে।
ভারতে উদ্ভূত ডেল্টা ভ্যারয়েন্টের স্থানীয় সংক্রমণ ঘটায় গত এপ্রিলে মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা হু হু করে বাড়তে থাকে। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সংক্রমণ ও মৃত্যুর বিচারে গত এপ্রিলের পর ভয়াবহ মাস ছিল জুন। চলতি জুলাইয়ের অর্ধেক শেষ হতেই বোঝা যাচ্ছে, এটিই হতে যাচ্ছে ভয়াবহতম মাস।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যে দেখা যায়, গত বছরের জুন মাসে ৯৮ হাজার ৩৩০ জন এবং জুলাই মাসে ৯২ হাজার ১৭৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। এ বছর এপ্রিলে রেকর্ড ১ লাখ ৪৭ হাজার ৮৩৭ জন, জুনে ১ লাখ ১২ হাজার ৭১৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছিল।
আর জুলাইয়ের ১৮ তারিখ পর্যন্তই ১ লাখ ৯০ হাজার ৭৩১ জন রোগী শনাক্তের হিসাব পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে আক্রান্ত হচ্ছে সাড়ে ১০ হাজার জন। একই অবস্থা দেখা যাচ্ছে, কোভিড-১৯ রোগীদের মৃত্যুর ক্ষেত্রেও।
গত বছর জুনে ১ হাজার ১৯৭ জন এবং জুলাইয়ে ১ হাজার ২৬৪ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কিন্তু এ বছরের এপ্রিলে ২ হাজার ৪০৪ জনের পর জুনে ১ হাজার ৮৮৪ জনের মৃত্যু হয়।
সাননিউজ/এমআর