তারেক সালমান : মহামারি করোনা সংক্রমণ মোকাবেলায় সোমবার থেকে সাতদিনের লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। সরকারের লকডাউনের নির্দেশনায় ১১ দফা নির্দেশনা রয়েছে। লকডাউনের নির্দেশনার নিষেধাজ্ঞায় রয়েছে যাত্রীবাহী বাস বা গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। কিন্তু ব্যক্তিগত গাড়ি, রিক্সা, সিএনজি, মোটরসাইকেল চলতে পারবে।
লকডাউনের নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও প্রয়োজনের তাগিদে মানুষ রাস্তায় বের হতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু সব চললেও শুধু গণপরিবহণ না থাকায় চরম দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারণ খেটে খাওয়া ও অফিসগামী মানুষ।
সোমবার (৫ এপ্রিল) সকাল থেকেই রাজধানীর বেশ কয়েকটি স্পট ঘুরে দেখা যায় এসব চিত্র।
রাজধানীর ব্যস্ততম বাংলামটর অন্যদিনের মতোই আজও ব্যস্ত দেখা যায়। শাহবাগগামী সড়কের পূর্বপাশে পুলিশ বক্সের পাশে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে অবশ্য কিছুটা অলসভাবে দাড়িয়ে ও আলাপে মত্ত দেখা যায়। একপাশে পুলিশের পক্ষ থেকে লকডাউনের সতর্কতামূলক বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে। মানুষের দৃষ্টি আকর্ষন করা হচ্ছে স্বাস্থ্য সচেতন থাকতে।
রাজধানীর মগবাজার মোড়ে দিনরাতের বেশিরভাগ সময়ই ট্রাফিক জ্যাম লেগেই থাকে। লকডাউনের শুরুর দিন অন্যদিনের মতো জ্যাম না থাকলেও প্রাইভেট গাড়ী, রিক্সা ও মোটর সাইকেলের দাপট দেখা গেল। ফ্লাই ওভারের নিচে পুলিশ বক্সের পাশে ও সড়কদ্বীপে দাড়িয়ে পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।
সকাল থেকে রাজধানীর শ্যামলীতে প্রায় অর্ধশতাদিক অফিসগামী মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ব্যাক্তিগত গাড়ীর পাশাপাশি সিএনজিতে অনেক যাত্রী চলাচল করলেও থমকে যায় নিম্মআয়ের মানুষগুলো। একই অবস্থা দেখা যায় মানিক মিয়া এভিনিউ ও খামার বাড়ী এলাকায়।
মগবাজার ওয়্যারলেস গেটে মতিঝিলে অফিসে যেতে রিকশা ভাড়া নিয়ে দামাদামি করছেন মাহমুদুল আমিন। তিনি বলেন, মতিঝিলে অফিস। লকডাউন দিলেও অফিসতো খোলা। যত কষ্ট ও খরচই হোক অফিসে যেতেই হবে। গাড়ি বন্ধ থাকায় বাড়তি খরচ করে বাধ্য হয়ে রিকশায় যাচ্ছি। কিন্তু সুযোগ বুঝে রিক্সাভাড়াও বেশি চাচ্ছে। কেউ আগের ভাড়ায় যেতে চাচ্ছে না।
মোটরসাইকেল নিয়ে বের হওয়া সাঈদ আহমদ বলেন, লকডাউন হলে কি! অফিস তো বন্ধ নেই। আগের মতোই অফিসে যাচ্ছি।
রাজধানীর মৌচাক মার্কেটের বিপরীত সিগনোলে প্রচুর মানুষ দাড়িয়ে আছেন নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার অপেক্ষায়। তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। রাসেল নামে একজন বলেন, আমাদের অফিস খোলা। অফিস বলেছিল গাড়ি করে নিয়ে যাবে। কিন্তু দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও গাড়ির দেখা নেই। তাই দাঁড়িয়ে আছি।
মালিবাগের আবুল হোটেল মোড়ে দেখা যায়, গাড়ির বেশ চাপ রয়েছে। সেখানে একতলা ও দ্বিতল কয়েকটি যাত্রীবাহী বাস দেখা যায়। বাসগুলোর ভেতরে যাত্রীও দেখা যায়। তবে এসব বাসের যাত্রী বা চালক কারও সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
কাকরাই মোড়ে কথা হয় ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বের হওয়া সোহরাব মাহাদীর সঙ্গে। তিনি বলেন, অফিস খোলা থাকলে বাসা থেকে বের হতেই হবে। সবার পরিবার আছে। রুটি-রুজির চিন্তা আছে। সুতরাং অফিস খোলা থাকলে করোনার ভয়ে ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই।
সেখানে দায়িত্বরত একজন পুলিশ সদস্য বলেন, সকালে রাস্তায় গাড়ি বেশ কম ছিল। কিন্তু বেলা বাড়ার সাথে সাথে গাড়ির চাপও বেড়েছে। এ কারণে আমাদের ট্রাফিক সামাল দিতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, রাস্তায় যাত্রীবাহী পরিবহন চলছে না। তবে রিক্সা, সিএনজি, ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। ফলে তিন দিক থেকে ট্রাফিক সিগন্যাল দিতে হচ্ছে। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ চাপ কম।
মতিঝিল, কাকরাইল, পল্টন, শাহবাগ অঞ্চল ঘুরেও প্রচুর পরিমাণে ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজি, রিক্সা, মোটরসাইকেল চলাচল করতে দেখা গেছে।
এদিকে গণপরিবহণ না পেয়ে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসগড়ে রাস্তা আটকে বসে থাকে সাধারণ জনগণ।
সাননিউজ/টিএস/এম