ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক

তীব্র খাদ্য সংকটে গাজার ৬ লাখ মানুষ 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আকাশ ও স্থলপথে চলমান ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় তীব্র মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। ভূখণ্ডটির প্রায় ৬ লাখ মানুষ বিপর্যয়কর ক্ষুধার সম্মুখীন হয়েছেন বলে জাতিসংঘের এক রিপোর্টে এসেছে।

আরও পড়ুন: চীনে খনি দুর্ঘটনায় নিহত ১২

শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) বার্তা সংস্থা আনাদোলু এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

বার্তা সংস্থাটি বলছে, গাজা উপত্যকার ৫ লাখ ৭৬ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ বিপর্যয়কর ক্ষুধার সম্মুখীন হয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে।

ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) রিপোর্টে বলা হয়েছে, গাজার সমগ্র জনসংখ্যাই তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সংকটে রয়েছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিসহ (ডব্লিউএফপি) জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থা ও বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) তথ্য অন্তর্ভুক্ত করে আইপিসি এ রিপোর্ট প্রস্তুত করেছে।

আরও পড়ুন: বিশ্বে আরও ৭৫ জনের প্রাণহানি

আইপিসি একটি বহু অংশীদার ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম, যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বৈজ্ঞানিক মান অনুযায়ী ক্ষুধা সংকটের তীব্রতা ও মাত্রা নির্ধারণ করতে তথ্য বিশ্লেষণ করে থাকে।

গাজার ২৬ শতাংশ মানুষ- প্রায় ৫ লাখ ৭৬ হাজার ৬০০ জনের খাদ্য সরবরাহ ও সংকট মোকাবিলা করার সক্ষমতা শেষ হয়ে গেছে। তারা বিপর্যয়কর ক্ষুধা (আইপিসি ফেজ ৫) ও অনাহারের সম্মুখীন হয়েছেন।

ডব্লিউএফপির নির্বাহী পরিচালক সিন্ডি ম্যাককেইন জানান, ডব্লিউএফপি কয়েক সপ্তাহ ধরে এ আসন্ন বিপর্যয়ের বিষয়ে সতর্ক করে এসেছে। দুঃখজনকভাবে আমরা নিরাপদ ও ধারাবাহিক সহায়তা সরবরাহের বিষয়ে আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছি। সেখানকার পরিস্থিতি খুবই খারাপ। গাজার কেউই অনাহার থেকে নিরাপদ নয়।

আরও পড়ুন: গাজায় প্রাণহানি ২০ হাজার ছাড়াল

তীব্র সংঘাত ও সীমিত মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার যদি বর্তমান পরিস্থিতির মতো অব্যাহত থাকে, তাহলে আইপিসি ভবিষ্যদ্বাণী করে জানিয়েছে, আগামী ৬ মাসের মধ্যে সেখানে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি রয়েছে।

ইতোমধ্যে ডব্লিউএফপি খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সংঘাতের মধ্যে বেঁচে থাকতে গাজাবাসীরা তাদের সকল সম্পদই ব্যবহার করেছে। সেখানে জীবিকা ধ্বংস হয়ে গেছে, বেকারি ধ্বংস হয়ে গেছে, দোকানগুলোও খালি হয়ে গেছে এবং মানুষ খাবার খুঁজে পাচ্ছে না।

ডব্লিউএফপি কর্মীদের গাজার ফিলিস্তিনিরা জানিয়েছেন, তারা প্রায়শই পুরো দিন না খেয়ে থাকেন। অনেক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ নিজেরা ক্ষুধার্ত অবস্থায় থেকে যান, যাতে শিশুরা কিছু খেতে পারে।

আরও পড়ুন: ভারতে বন্যায় নিহত ১০

ডব্লিউএফপির প্রধান অর্থনীতিবিদ আরিফ হোসেন জানান, এগুলো কেবল সংখ্যা নয়। এ উদ্বেগজনক পরিসংখ্যানগুলোর পেছনে পৃথকভাবে শিশু, নারী ও পুরুষরা রয়েছেন। এ সংকট যে জটিলতা, মাত্রা ও দুর্ভোগের সৃষ্টি করেছে তা নজিরবিহীন।

এছাড়া প্রতিবেদনে জোর দেওয়া হয়েছে, ব্যাপক মৃত্যু রোধে আরও জরুরি খাদ্য ও বহু খাতে সহায়তা সরবরাহ অপরিহার্য।

সাম্প্রতিক ৭ দিনের সংঘাত বিরতি দেখিয়েছে, সংঘাত বন্ধ থাকলে ডব্লিউএফপি ও অংশীদাররা সহায়তা প্রদান করতে পারে। কেরেম শালোম সীমান্ত ক্রসিং পুনরায় খোলার ফলে গাজায় আরও খাদ্য ও অন্যান্য ত্রাণ সরবরাহের সুযোগ তৈরি হয়।

আরও পড়ুন: চীনে শক্তিশালী ভূমিকম্প, নিহত ১১১

এ পরিস্থিতিতে মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে ম্যাককেইন বলেন, আমরা পাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মানুষকে ক্ষুধার্ত অবস্থায় দেখতে পারি না। গাজা উপত্যকা জুড়ে সরবরাহ প্রবাহের জন্য ও বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদে জীবন রক্ষাকারী সহায়তা পাওয়ার জন্য মানবিক সহায়তার সরবরাহ করা প্রয়োজন।

যদিও গত ১২ ডিসেম্বর ইসরায়েল গাজার ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের সরাসরি মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য কেরাম শালোমে তার সীমান্ত ক্রসিং খোলার সিদ্ধান্ত নেয়। এ ক্রসিংকে ফিলিস্তিনিরা কারম আবু সালেম বলে থাকেন। এটি গাজার একমাত্র বাণিজ্যিক ক্রসিং।

সংঘাত শুরু হওয়ার আগে গাজায় ৬০ শতাংশেরও বেশি সহায়তা এ টার্মিনালের মধ্য দিয়ে যেত।

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।

আরও পড়ুন: চীনে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ১১৬

বুধবার গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, উপত্যকাটিতে চলমান ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে ২০ হাজার ছাড়িয়েছে। তাদের মধ্যে অন্তত ৮০০০ শিশু ও ৬২০০ নারী।

নিহতদের মধ্যে ৩১০ জন চিকিৎসক, ৩৫ জন বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মী ও ৯৭ জন সাংবাদিক রয়েছেন। ইসরায়েলি এ হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

সান নিউজ/এনজে

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ড্রয়ে ক্লাব বিশ্বকাপ শুরু মেসির মায়ামির

নতুন কিছু প্রযুক্তি সংযোজনের মাধ্যমে জমকালো উদ্বোধ...

যদি ইসরায়েল থামে তবে আমরাও থামবো: ইরান

ইরান-ইসরায়েল চলমান পাল্টাপাল্টি হামলায় মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছ...

ইরানের হামলায় ইসরায়েলে অনেক হতাহত

ইসরায়েলে ভয়ংকর হামলা চালিয়েছে ইরান। শনিবার মধ্যরাত ও রবিবার ভোরে ইসরায়েলের বি...

ইসরায়েলের টার্গেট আয়াতুল্লাহ খামেনি: প্রতিবেদন

বিশ্ববাসির নজর এখন ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের দিকে; দুদেশকে নিয়ে চুলচেড়া বিশ্লেশন চ...

হঠাৎ উত্তপ্ত প্রেস ক্লাব, পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

গণজমায়েতের নিষেধাজ্ঞা সত্বেও পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল নিয়ে সচিবালয়ে প্রব...

আর দেরি নয়, তামাক নিয়ন্ত্রণে এখনই পদক্ষেপ দরকার

জনস্বার্থে ন্যায্য ও সময়োপযোগী প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে দেশের ত...

ইসির রোডম্যাপ অনুযায়ী প্রস্তুত থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

ইসি যে সময় ভোটের তারিখ ঘোষণা করবে সে সময়ের জন্য প্রস্তুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী&rs...

হঠাৎ উত্তপ্ত প্রেস ক্লাব, পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

গণজমায়েতের নিষেধাজ্ঞা সত্বেও পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল নিয়ে সচিবালয়ে প্রব...

যদি ইসরায়েল থামে তবে আমরাও থামবো: ইরান

ইরান-ইসরায়েল চলমান পাল্টাপাল্টি হামলায় মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছ...

ইসরায়েলের টার্গেট আয়াতুল্লাহ খামেনি: প্রতিবেদন

বিশ্ববাসির নজর এখন ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের দিকে; দুদেশকে নিয়ে চুলচেড়া বিশ্লেশন চ...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা