আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মধ্যযুগের সবচেয়ে জটিল নির্মাণের অন্যতম দৃষ্টান্ত হিসেবে পরিচিত রয়েছে ফ্রান্সের মঁ স্যাঁ মিশেল। সেখানে পৌঁছানোর পথ অত্যন্ত বিপজ্জনক। তবে একবার অক্ষত শরীরে সেখানে পৌঁছাতে পারলে অনেক রহস্য সমাধান পাওয়া যাবে ।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনকে ক্ষেপণাস্ত্র দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
আন ল্য পাজ ৯ বছর ধরে মঁ স্যাঁ মিশেল অ্যাবির গাইডের কাজ করছেন। এ অ্যাবি চার্চের অর্ধেক রোমানেস্ক, বাকি অর্ধেক গথিক শৈলি অনুযায়ী তৈরি। লুকিয়ে রয়েছে আনাচে-কানাচে রহস্য ।
আন সবচেয়ে গভীর রহস্যগুলি পরে জানাবেন। প্রথমে তিনি একটি দরজার মধ্য দিয়ে দর্শনার্থীদের নিয়ে গেলেন। এ ‘ফ্লাইং বাট্রেস’ গথিক নির্মাণশৈলির বৈশিষ্ট্য। সেগুলির বাইরে কাঠামো ধরে রাখে। একটি বিশেষ অংশ সুন্দরভাবে গড়ে তোলা হয়েছে। সেটির আবার একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
আন ল্য পাজ বলেন, ‘এটি এক ফ্লাইয়িং বাট্রেসের ওপর গড়ে তোলা হয়েছে, যা আসলে ঘোরানো সিঁড়ি। অনেকটা গ্র্যানাইটের লেসের কাজের মতো। মনে রাখতে হবে, মধ্যযুগেই এটা তৈরি করা হয়েছে। প্রায় শীর্ষে আমরা পৌঁছে গেছি। বামদিকে শুধু বেল টাওয়ার এবং শেষে একেবারে ওপরে আর্চ্যাঙ্গেল স্যাঁ মিশেলে যাওয়া যায়। সেটাকে আবার ঝড়ঝঞ্ঝা বা বজ্রপাত প্রতিরোধের লাইটনিং রড হিসেবেও কাজে লাগানো হয়। অতীতে এমন বিপর্যয়ের ফলেই বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’
আরও পড়ুন: চীন সফরে গেলেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট
হাজার বছর আগে যেখানে বেনিডিক্টাইন সন্ন্যাসীরা বাস করতেন, সেখানে আজ পর্যটকরা ছবি তুলতে ভিড় করেন। মধ্যযুগে হাজার হাজার তীর্থযাত্রী এ অ্যাব দর্শন করতে আসতেন। পর্যটকদের ভিড়ের মাঝে বোঝা যায়, আজও সন্নাসীরা সেখানেই বাস করছেন?
আন অবার জানালেন, ‘আসলে ৫ জন সন্নাসী ও ৭ জন সন্নাসিনী মোট ১২ জন দিনে ৩ বার প্রার্থনা করেন। ফরাসি সরকারের সাথে বোঝাপড়ার আওতায় এ সৌধে সার্ভিসের ব্যবস্থা রয়েছে। তারা সেখানে এর বদলে থাকার সুযোগ পান। ব্যক্তিগত স্তরে সেই ব্যবস্থা রয়েছে।’
ভ্রমণ শেষে মিশেলের সবচেয়ে কালো অধ্যায়ে নজরে পরে। সেখানে অত্যন্ত জঘন্য অপরাধীদের জন্য দুটি আইসোলেশন সেল এখনও দেখা যায়। ১৮৬৩ সাল থেকে ফরাসি বিপ্লব সময়ে গোটা অ্যাবিটা কারাগার হিসেবে কাজে লাগানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: কানাডার নাগরিকদের ভিসা দেয়া স্থগিত
তিনি আরো বলেন, ‘সম্ভবত অনেক ঘণ্টা বা অনেক দিন ধরে থাকা বন্দিরাই খোদাই করে কিছু লিখেছে। কয়েকজন বন্দি তাদের কয়েক বছরের কষ্টের কথা বিভিন্ন জায়গায় লিখেছে। তাহলে ভাবুন, এখানে থাকা কত ভয়ংকর ছিল।’
এখনও অজানা শতাব্দী এ মঠ দ্বীপে যা ঘটেছে। গবেষণা চালালেও হয়তো অনেক তথ্য কখনোই জানা যাবে না। এ জন্য মঁ স্যাঁ মিশেলকে ঘিরে আজও অনেক অনুমান ও কল্পনা দানা বাঁধছে।
সান নিউজ/এমএ