ইউরোপীয় শক্তিগুলোকে তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ‘সংঘাতমূলক কৌশল’ গ্রহণ না করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি।
রবিবার (১১ মে) এক সাক্ষাৎকারে এ হুঁশিয়ারি দেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ফরাসি গণমাধ্যম এএফপি জানিয়েছে, ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল বারো এপ্রিলের শেষদিকে বলেছিলেন, ফ্রান্স, জার্মানি ও ব্রিটেন একত্রে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ‘ইউরোপের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়লে তারা এক সেকেন্ডও দেরি না করে’ দশকখানেক আগে প্রত্যাহার করা সব নিষেধাজ্ঞা আবার কার্যকর করবে।
এর জবাবে লা পয়েন্ট-এ প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে আরাকচি বলেন, ‘এই সংঘাতমূলক কৌশল বিশ্বব্যাপী একটি পারমাণবিক বিস্তার সঙ্কট সৃষ্টি করতে পারে, যার মূল মূল্য ইউরোপীয়দেরই দিতে হতে পারে।’
তিনি জানান, তিনি প্যারিস, বার্লিন ও লন্ডনে সফর করতে প্রস্তুত, যাতে ‘একটি নতুন অধ্যায় শুরু’ করা যায়।
২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তিতে যে ‘স্ন্যাপব্যাক’ ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছিল-যার মাধ্যমে ইরান চুক্তির শর্ত মানতে ব্যর্থ হলে জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা পুনরায় কার্যকর করা সম্ভব-তা এখন ‘কূটনৈতিক চাপের হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে তিনি আক্ষেপ করেন। অথচ ‘এটি মূলত চূড়ান্ত সমাধানের জন্য একটি বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা হিসেবেই পরিকল্পিত ছিল।’
‘ইরান তার অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে,’ বলেন আরাকচি। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বিশ্ব শক্তিগুলোকে তেহরান সতর্ক করে দিয়েছে যে ‘স্ন্যাপব্যাক ব্যবস্থার অপব্যবহার করলে এর পরিণতি হবে-শুধু ইউরোপের ভূমিকার সমাপ্তি নয়, বরং এমন একটি উত্তেজনার সূচনা, যা হয়তো আর ঠেকানো যাবে না।’
ফ্রান্স, জার্মানি ও ব্রিটেনকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘ই৩-কে নিজেদের প্রশ্ন করা উচিত, কীভাবে তারা এই অচলাবস্থায় পৌঁছলো।’
তিনি বলেন, ‘তারা তাদের কৌশল পুনর্বিবেচনা না করে বরং সংঘাতমুখী অবস্থান নিয়েছে-মানবাধিকার কিংবা ইরানের রাশিয়ার সঙ্গে বৈধ সম্পর্ককে অজুহাত বানিয়ে কূটনৈতিকভাবে নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছে।’
এই মন্তব্যগুলো প্রকাশিত হয়েছে এমন সময়, যখন ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র মাসকাটে চতুর্থ দফা পারমাণবিক আলোচনা শুরু করেছে।
প্রায় এক মাস আগে শুরু হওয়া পূর্ববর্তী আলোচনাগুলোর ধারাবাহিকতায় এ বৈঠক হচ্ছে, যা ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর দুই পক্ষের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সংলাপ।
সূত্র : এএফপি।
সাননিউজ/ইউকে