ফাইল ছবি
সারাদেশ

নিয়ন্ত্রণহীন বাড়িভাড়ায় নাকাল ভাড়াটিয়ারা

হারুন উর রশিদ সোহেল, রংপুর: রংপুর মহানগরীসহ জেলাজুড়ে নতুন বছরের শুরুতেই নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে বাড়িভাড়া। দ্রব্যমূল্যসহ জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়তি বাড়িভাড়া শুনতে গিয়ে এখন নাকাল অবস্থায় পড়েছেন ভাড়াটিয়ারা।

আরও পড়ুন: ঢাকায় আসছেন মার্কিন উপ-সহকারী মন্ত্রী

তারা বলছেন, প্রতিনিয়তই বাড়ছে নিত্যপণ্যসহ সকল দ্রব্যের দাম। তবে ব্যক্তিগত আয় না বাড়লেও উচ্চ জীবনমানের সঙ্গে অতিরিক্ত বাড়িভাড়া নাগরিক জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। ফলে বাসাভাড়ার চাপে তাদের আতঙ্কে দিন কাটচ্ছে।

ভাড়াটিয়াদের অভিযোগ, বাড়িভাড়া আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়ায় বাড়ির মালিকরা দফায় দফায় ভাড়া বাড়াচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের কষ্ট আরও বৃদ্ধি করেছে বাড়িভাড়া।

তবে বাড়ির মালিকরা বলছেন, হোল্ডিং ট্যাক্সসহ নির্মাণ সামগ্রী ও বিদ্যুৎতের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বাড়িভাড়া বৃদ্ধি করা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই।

আরও পড়ুন: সয়াবিনের দাম কমল

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুর নগরীর কেরানিপাড়া, মুন্সিপাড়া, জুম্মাপাড়া, বোতলা, কামালকাছনা, শালবন, সেন্ট্রাল রোড, জুম্মাপাড়া, সিও বাজার, হাজীপাড়া, শালবন মিন্ত্রিপাড়া, আরসিসিআই মোড়, সাগরপাড়া, ধাপ, খলিফাপাড়া, ইসলামবাগ, চকবাজার, লালবাগ কেডিসি রোড, মর্ডাণ মোড়, সর্দারপাড়া, সাতগাড়া, গুঞ্জনমোড়, গুপ্তপাড়া, সেনপাড়া, কামারপাড়া, শাপলা চত্বরসহ যোগাযোগের সুবিধা যেসব এলাকায় একটু বেশি, সেখানকার বাড়ির মালিকরা বাসা ভাড়া অস্বাভাবিক হারে আদায় করছে।

বিশেষ করে গত কয়েক বছরে ভাড়া বেড়েছে। এসব এলাকায় একটি সিঙ্গেল রুমও ৫ হাজার টাকার কমে মিলছে না। দুই বেডের বাসার ভাড়া অন্তত ১২ হাজার টাকা।

এছাড়াও নগরীর স্টেশন, আলমনগর, বাবুপাড়া, নুরপুর, টার্মিনাল, সাতমাথা, মাহিগঞ্জ, তাজহাট, কুকরুলসহ রংপুর নগরী ও জেলার পীরগঞ্জ, মিঠাপুকুর, শঠিবাড়ি, বড়দরগাও, গড়েরমাথা, পীরগাছা, হারাগাছ, কাউনিয়া, শ্যামপুর, তারাগঞ্জ, পাগলাপীর, গঙ্গাচড়া, মহিপুর, বদরগঞ্জসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বাড়িভাড়া বৃদ্ধি হয়েছে। বাড়ির মালিকরা নিজেদের ইচ্ছেমতো বাড়িভাড়া আদায় করছেন।

আরও পড়ুন: নোয়াখালীতে হাসপাতালে হাজতির মৃত্যু

এদিকে বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে চিত্র প্রায় উল্টো। ভাড়া কিছুটা কমিয়েও তারা ভাড়াটিয়া পাচ্ছে না। নগরীর ধাপ, রাধাবল্লভ, সাগরপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় কয়েকটি ফ্ল্যাট খালি অবস্থায় রয়েছে বলে মালিকরা জানিয়েছেন।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, রংপুর বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও সিটি কর্পোরেশন বাস্তবায়ন হওয়ার পর থেকে মহানগরীতে বাড়িভাড়া লাগামহীনভাবে বেড়েই চলছে।

রংপুর বিভাগীয় হেড কোয়ার্টার হওয়ায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস হয়েছে। এ কারণে বিভাগের ৮ জেলার বিভিন্ন উপজেলার পাশাপাশি অন্যান্য জেলার নানা শ্রেণীর মানুষ চাকরির সুবাদে রংপুর নগরীতে বসবাস করছেন। এখানে নিম্নআয়ের মানুষগুলো কাজের জন্য এখানে আসেন। তাদের থাকতে হয় ভাড়া বাড়িতে।

আরও পড়ুন: হত্যা মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

আগে নগরীতে একটি রুম ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা ভাড়া ছিল। বর্তমানে তা ৩-৪ হাজার টাকা। আগে ৩ রুমের বাড়ি ভাড়া ছিল ৫-৬ হাজার টাকা, তা এখন প্রকার ভেদে ১২-২৫ হাজার পর্যন্ত হয়েছে। এই সুযোগটি নিচ্ছে বাড়ির মালিকরা। তারা নিজেদের ইচ্ছেমতো বাড়িভাড়া বাড়াচ্ছে।

ভাড়াটিয়ারা অভিযোগ করেন, সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ বাড়িভাড়া বিষয়ে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করলে কেউ সহজে ভাড়া বাড়াতে পারতো না। এতে হয়রানি ও দুর্ভোগে পড়তে হতো না।

এদিকে রংপুর নগরীর লালবাগ, কলেজ রোড, খামারপাড়া, দর্শনা, চকবাজার, পার্কের মোড়, সর্দারপাড়া, র্খোদ্দ তামপাট, কামারের মোড়, তাজহাট, ঈদগাও পাড়া, ঘাঘটপাড়া, আশরতপুর, ঢাকাইয়াপাড়া, স্টেশন, বাবুপাড়া, ধাপ মেডিকেল মোড়, টার্মিনাল, জুম্মাপাড়, শালবন, রাধাবল্লভসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২ শতাধিকের বেশি ছাত্র ও ছাত্রী নিবাস গড়ে উঠেছে।

আরও পড়ুন: সহিংসতা করলে বাধা আসবে

এসব ছাত্রবাসে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, কারমাইকেল কলেজ, সরকারি কলেজ, বেগম রোকেয়া কলেজ, রংপুর পলিটেকনিক কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা থাকছেন। তাদেরও ভাড়া নিয়ে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। বাড়ির মালিকরা ইচ্ছেমতো ভাড়া নির্ধারণ করে তা আদায় করছেন।

এছাড়া এসব এলাকায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। তাদের ছিনতাইসহ নানা হয়রানির শিকার হতে হয়।

নগরীর শাপলা চত্বর এলাকার ওবাইদুল হক বলেন, তিনি ছোট একটি চাকুরি করেন। দীর্ঘদিন ধরে রংপুর শহরে থাকলেও তার নিজের বাড়ি নেই। তিনি বিভিন্ন এলাকায় বাসাভাড়া নিয়ে পরিবারসহ থাকেন।

বর্তমানে যে হারে বাসা ভাড়া বাড়ছে এতে বসবাস করা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। বেতনের অর্ধেকেরও বেশি চলে যায় বাসা ভাড়া দিতেই। অবশিষ্ট টাকায় খাওয়া, সন্তানের পড়ালেখা, চিকিৎসাসহ নানা খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে।

আরও পড়ুন: একুশ শিখিয়েছে মাথানত না করা

পার্কের মোড় এলাকার একটি বাড়ির ভাড়াটিয়া আশরাফুল আলম বলেন, রংপুরে দিন দিন জনসংখ্যা বাড়ছে। সবার তো নিজের বাড়ি নেই। এখানে অনেকেই বাড়িভাড়া নিয়ে বাস করেন। তবে বাসা ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রয়োগ নেই।

মাসের ৫ তারিখের মধ্যে ভাড়া চায়। অথচ বেতন পেতেই চলে যায় ১০ তারিখ। বাড়িওয়ালা কথায় কথায় বাসা ছাড়তে খবর পাঠায়। এতে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।

রংপুর নগরীর রাধাবল্লভ এলাকার বাড়ির মালিক আজম আহমেদ বলেন, তার ৩/৪টি বাড়ি রয়েছে। ছাত্রাবাসও রয়েছে একটি। এসব তৈরি করতে গিয়ে প্রচুর খরচ হয়েছে।

ইট, সিমেন্ট, শ্রমিকের মজুরি থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেশি। বিদ্যুৎ বিল, কর্মচারিসহ অনুসাঙ্গিক খরচও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণে বাড়িভাড়া বাড়ানো ছাড়া কোন উপায় নেই।

সান নিউজ/এনজে

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ড্রয়ে ক্লাব বিশ্বকাপ শুরু মেসির মায়ামির

নতুন কিছু প্রযুক্তি সংযোজনের মাধ্যমে জমকালো উদ্বোধ...

দেশ ছাড়ার ভাবনা গায়ক তাসরিফ খানের

জনপ্রিয় গায়ক, সমাজসেবক, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও কুঁড়েঘর ব্যান্ডের ভোকাল ত...

যদি ইসরায়েল থামে তবে আমরাও থামবো: ইরান

ইরান-ইসরায়েল চলমান পাল্টাপাল্টি হামলায় মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছ...

ইরানের হামলায় ইসরায়েলে অনেক হতাহত

ইসরায়েলে ভয়ংকর হামলা চালিয়েছে ইরান। শনিবার মধ্যরাত ও রবিবার ভোরে ইসরায়েলের বি...

ইসরায়েলের টার্গেট আয়াতুল্লাহ খামেনি: প্রতিবেদন

বিশ্ববাসির নজর এখন ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের দিকে; দুদেশকে নিয়ে চুলচেড়া বিশ্লেশন চ...

ইডেন কলেজের পুকুরের পানিতে ডুবে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজের পুকুরের পানিতে সাঁতার শিখতে গিয়ে ডুবে সানজিদা আক্ত...

নজরুলজয়ন্তীতে ৪ গুণীকে সম্মাননা স্মারক প্রদান

পাবনার ঈশ্বরদীতে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নজরু...

হঠাৎ খোসপাঁচড়া বৃদ্ধির কারণ কী?

জীবনে একবারও খোসপাঁচড়া হয়নি এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। মানুষের অসচেতনতা,...

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিতে বিএনপি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য জোরালভাবে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বিএনপি...

ইরান ট্রাম্পকে হত্যা করতে চেয়েছিল, দাবি নেতানিয়াহুর

ইরানের শাসকগোষ্ঠী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তাদের সবচেয়ে ব...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা