নিজস্ব প্রতিনিধি, বরিশাল: ভাতিজিকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ঢাকায় নিয়ে যৌনপল্লিতে বিক্রির অভিযোগে আপন চাচা, ফুফু ও ফুফাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে বরিশালের বন্দর থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী তরুণী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান।
তিনি জানান, নির্যাতনের শিকার তরুণী তার ফুফু, ফুফা ও চাচার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। আমরা তা আমলে নিয়ে মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছি। মামলা তদন্ত সাপেক্ষে আরও যারা জড়িত রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভুক্তভোগী তরুণী জানান, গত বছর তার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু পারিবারিক কলহের কারণে বিয়ের দুই মাসের মধ্যে বিবাহবেচ্ছেদ হয়। কিন্তু তার বাবার আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় ফুফু, ফুফা এবং চাচা তাকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে নয় মাস আগে ঢাকার জুরাইনের শনিরআখড়ার ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, ওই বাসায় গিয়ে দেখা যায়, অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত অনেক ছেলে-মেয়ে বাসায় আসা যাওয়া করছেন। এর মধ্যে ফুফু ও ফুফা মিলে তাকে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করেন। তাতে বাধা দিলে গলা চেপে, মাথা দেয়ালের সঙ্গে আঘাতসহ নির্যাতন করে। এভাবে দীর্ঘ পাঁচ মাস সেখানে একটি কক্ষে আটকে রেখে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করায়। তবে মা-বাবার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলতে দিত না।
ভুক্তভোগী তরুণী জানান, এক পর্যায়ে চার মাস আগে তাকে অন্য আরেকজনের কাছে দুই লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। সেখানে কিছু দিন থাকার পর এক নারীর সহায়তায় পালিয়ে বরিশাল বন্দর থানার নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন।
ফুফু হয়েও ভাইয়ের মেয়েকে যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেবে এটা বুঝতে পারেনি মন্তব্য করে ওই তরুণীর বাবা জানান, নির্যাতনের শিকার মেয়েটি বাড়িতে ফিরে আসার পর তার (বাবা) বোন, জামাই এবং ভাই তাকে বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখেন। তবে স্থানীয়দের সহায়তায় তিনি মুক্তি পান। তারা বলে, মেয়েকে জীবিত রাখলে বিচার চাইবে। তাই সাক্ষীসহ তাকে মেরে ফেলতে হবে।
অভিযুক্তরা ভুক্তভোগী মেয়েটির সঙ্গে যে অন্যায় হয়েছে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন তরুণীর হতভাগ্য মা-বাবা।