নিজস্ব প্রতিবেদক: হেলেনা জাহাঙ্গীরকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গুলশান থানায় করা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে তিন দিনের রিমান্ড পেয়েছে পুলিশ। আজ সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আদালতে তোলা হলে তাকে পাঁচদিনের রিমান্ড দাবি করে আবেদন করলে ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরীর আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে গুলশান থানা থেকে তাকে আদালতের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসান জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে কোর্টে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার রাজধানীর গুলশান থানায় তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী শুক্রবার (৩০ জুলাই) তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলা সুষ্ঠু তদন্তের জন্য এই মামলায় ৫ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে গুলশানের ৩৬ নম্বর রোডের ৫ নম্বর বাসা থেকে দীর্ঘ প্রায় চার ঘণ্টা অভিযান শেষে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আটক করে র্যাব। এ সময় তার বাসা থেকে বিদেশি মদ, অবৈধ ওয়াকিটকি সেট, ক্যাসিনো সরঞ্জাম ও হরিণের চামড়া উদ্ধার করা হয়। আটকের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও ব্যক্তিদের সম্মানহানি করার অপচেষ্টার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার দেখায়। পরে তাকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করে র্যাব।
আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়। এর আগে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, র্যাব সদস্যরা হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছেন।
গুলশান থানার পরিদর্শক (অপারেশন) শেখ শাহানুর রহমান বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে কোর্টে পাঠানো হয়েছে। মাদকসহ অন্য যেসব মাল জব্দ করা হয়েছে, তার ওপর নির্ভর করে আরও একটা মামলা হবে। তবে সেটা প্রক্রিয়াধীন।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) রাত ৮টার পর হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশান-২ এর ৩৬ নম্বর রোডের বাসভবনে অভিযান শুরু করে র্যাব। দীর্ঘ চার ঘণ্টা অভিযান শেষে রাত ১২টার দিকে তাকে আটক করা হয় এবং পরে র্যাব সদরদফতরে নিয়ে যাওয়া হয়।
শুক্রবার (৩০ জুলাই) দুপুরে এক ক্ষুদে বার্তায় তাকে গ্রেফতারের তথ্য জানায় র্যাব। ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও ব্যক্তিদের সম্মানহানি করার অপচেষ্টার অভিযোগে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার পর হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায় অভিযান শেষে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায় আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। তার বাসায় বিপুল পরিমাণের মাদকসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র জব্দ করা হয়েছে।
সম্প্রতি ‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামে একটি সংগঠনের পোস্টার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পোস্টারে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি হেলেনা জাহাঙ্গীর আর সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মনিরের নাম উল্লেখ করা হয়। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক হিসেবে সাইফুল ইসলাম ইমনের ফোন নম্বর দিয়ে পদ প্রত্যাশীদের যোগাযোগ করতে বলা হয়। ওই পোস্টারে সংগঠনটির জেলা, উপজেলা ও বিদেশি শাখায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ দেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করা হয়। এ ঘটনার জেরে রোববার (২৫ জুলাই) আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
সান নিউজ/এফএআর