এম.এ আজিজ রাসেল ,কক্সবাজার: কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী বাঁকখালী নদী রক্ষায় আরও কঠোর হচ্ছে প্রশাসন। এবার পুরোনো ও নতুন সকল দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে। গুড়িয়ে দেওয়া হবে অবৈধ স্থাপনা। এ জন্য সম্মিলিতভাবে মাঠে নামছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।
আরও পড়ুন : বিশ্ব জুড়ে কমেছে মৃত্যু ও আক্রান্ত
রোববার (১৯ জুন) সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এটিএম জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে নদী ও পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এ তথ্য জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ। এসময় তিনি বলেন, ‘শুধু মামলা করে বাঁকখালী নদী রক্ষা সম্ভব না। মামলা পরবতীর্ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে। এ জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরকে সকল সহযোগিতা করা হবে।’
সভায় বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাহী প্রধান একেএম তারিকুল আলম, জেলা আওয়ামী লীগেরর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ—পরিচালক মো. নাজমুল হুদা, কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. মুজিবুল ইসলাম, বি.আই.ডাব্লিউটি.এ এর অ্যাসিটেন্ট পরিচালক, সিনিয়র সাংবাদিক কালের কণ্ঠের কক্সবাজার প্রতিনিধি তোফায়েল আহমদ, ডেইলি স্টারের কক্সবাজার প্রতিনিধি মুহাম্মদ আলী জিন্নাত, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন—বাপা কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক করিম উল্লাহ কলিম ও বাপা কক্সবাজারের সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ,এম নজরুল ইসলাম।
সভায় কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাহী প্রধান একেএম তারিকুল আলম বলেন, ‘বাঁকখালী নদীতে কক্সবাজার পৌরসভা বর্জ্য ফেলে না। নদী দূষণে পৌরসভার কোন ভূমিকা নেই। পৌর পরিষদ বাঁকখালী নদী রক্ষায় সবসময় সোচ্চার।’
জেলা আওয়ামী লীগেরর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘ বাঁকখালী নদী সিকিস্তি হয়ে গেছে বহু আগে। তারপর ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি হল কি করে। বিষয়টি তদন্ত করা উচিত। কারণ বাঁকখালী নদী রক্ষা করতে না পারলে জলাবদ্ধতা বাড়বে শহরে।’
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ—পরিচালক মো. নাজমুল হুদা বলেন, ‘স্থাপনা উচ্ছেদে মামলা করা হয়নি। মামলা হয়েছে প্যারাবন নিধন ও জলাশয় ভরাটের জন্য। তবে সম্মিলিত উদ্যোগে পরিবেশ অধিদপ্তর সবসময় পাশে আছে।’
বি.আই.ডাব্লিউটি.এ এর অ্যাসিটেন্ট পরিচালক বলেন, ‘কক্সবাজার পৌরসভার বর্জ্য প্রতিনিয়ত বাঁকখালী নদীতে ফেলা হচ্ছে। এ জন্য দখল হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জ্যামিতিক হারে বাঁকখালী নদী দখল করেছে।’
কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. মুজিবুল ইসলাম বলেন, ‘বাঁকখালী নদী কক্সবাজারের ফুসফুস। তাই বাঁকখালী রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা জরুরী। দখলদার যে হোক। তাদের উচ্ছেদ করে নদীর আগের রূপ ফিরিয়ে আনতে হবে।’
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন—বাপা কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক করিম উল্লাহ কলিম বলেন, ‘জেলা প্রশাসন তার সাংবিধানিক অধিকার নদী রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। যারা ফলে প্রতিদিন দখল হচ্ছে। কক্সবাজার পৌরসভা দখলে অন্যতম।’
আরও পড়ুন : বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চায় ভারত
বাপা কক্সবাজারের সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ,এম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘দখলদারদের কাগজপত্র যাচাই বাছাই করার সুযোগ নিলে কখনো বাঁকখালী নদী উদ্ধার করা সম্ভব হবে না। আগে দখলমুক্ত করে প্রয়োজনে পরে যাচাই—বাছাই করা হোক দখলদারদের কাগজ। তিনি বলেন, বাঁকখালী নদীতে শুধু রাজনৈতিক প্রভাবশালী, সুশীল সাংবাদিক নয় দখলে আছে জেলা প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা কর্মচারীও। আশাকরি সমস্ত অবৈধ স্থাপনা ও বাঁকখালী দখলমুক্ত করতে বর্তমান জেলা প্রশাসন কঠোর হবে।’
সান নিউজ/এসআই