সান নিউজ ডেস্ক: ইউক্রেনে বাংলাদেশি ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজে রকেট হামলায় মারা গেছেন ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমান আরিফ (২৯)। এ মুহূর্তে ওই জাহাজে অবস্থান করছেন আরও কয়েকজন বাংলাদেশি।
আরও পড়ুন: ‘আর ভাঙা ঘরে থাকতে হবে না’ ভাইকে বলেছিলেন হাদিসুর
নাবিকদের উদ্ধারের আকুতি জানিয়ে দুটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন এক বাংলাদেশি নাবিক, যা ভাইরাল হয়ে গেছে সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমে।
ভাইরাল হওয়া ২৭ সেকেন্ডের ভিডিওতে ওই বাংলাদেশি নাবিককে বারবার বলতে শোনা যায়, ‘আমাদের বাঁচান। আমাদের কোনো জায়গা থেকে সাহায্য আসেনি।’
জানা গেছে, ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ নামের ওই জাহাজটি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের জলসীমায় ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে আটকে আছে। জাহাজে বাংলাদেশের ২৯ জন নাবিক রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে ৪৯৮ রুশ সেনা নিহত
বুধবার স্থানীয় সময় ভোর ৫টা ১০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টার দিকে) জাহাজে গোলা আঘাত হানে। এতে নাবিক হাদিসুর রহমান নিহত হন। তিনি জাহাজটিতে থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ গ্রামে।
সেই তথ্য জানিয়ে ভিডিওতে আতঙ্কের কণ্ঠে নাবিক বলেন, ‘আমি বাংলার সমৃদ্ধির সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার। আমাদের জাহাজে একটু আগে রকেট হামলা হয়েছে। একজন অলরেডি ডেড। আমাদের পাওয়ার সাপ্লাই নেই। ইমার্জেন্সি জেনারেটরে পাওয়ার সাপ্লাই চলছে। আমরা মৃত্যুর মুখে সম্মুখীন। আমাদের এখনো উদ্ধার করা হয়নি। দয়া করে আপনারা আমাদের বাঁচান। আমরা সবাই আছি এখানে। দেখেন।...আমাদের কোনো জায়গা থেকে সাহায্য আসেনি। আমাদের বাঁচান।’
এর আগে বাংলাদেশি জাহাজটিতে হামলার খবর গণমাধ্যমকে ফেসবুক মেসেঞ্জারে নিশ্চিত করেন জাহাজটিতে থাকা একজন নাবিক।
তিনি বলেন, ইউক্রেনের সময় ৫টা ১০ মিনিটের দিকে আমাদের জাহাজে বিমান হামলা হইছে। আগুন নেভানোর চেষ্টা করছি। আরেক নাবিক লিখেছেন, ‘বোমা পড়ছে’।
জাহাজটিতে থাকা এক নাবিকের ভাই আজিজুল হক টাঙ্গাইল সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জাহাজটি হামলার শিকার হয়েছে। আমাদের ভাইদের জন্য দোয়া করুন।’
আরও পড়ুন: লিবিয়া থেকে ফিরেছেন ১১৪ বাংলাদেশি
প্রসঙ্গত, সিরামিকের কাঁচামাল ‘ক্লে’ পরিবহনের জন্য জাহাজটি গত ২২ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক থেকে ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের জলসীমায় পৌঁছায়। সেখান থেকে কার্গো নিয়ে ইতালি যাওয়ার কথা ছিল জাহাজটির।
তবে যুদ্ধাবস্থা এড়াতে জাহাজটিকে সেখানে পৌঁছানোর পরই পণ্য বোঝাই না করে দ্রুত ফেরত আসার জন্য নির্দেশনা দেয় শিপিং কর্পোরেশন। শেষ মুহূর্তে বন্দরের পাইলট না পাওয়ায় ইউক্রেনের জলসীমা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি ‘বাংলার সমৃদ্ধি’। এরপরই যুদ্ধ শুরু হওয়ায় বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
সান নিউজ/এনকে