বাণিজ্য

চামড়া শিল্প নগরী বন্ধ চায় সংসদীয় কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে না হওয়ায় সাভারের চামড়া শিল্প নগরী আপাতত বন্ধ রাখতে বলেছে পরিবেশ বিষয়ক সংসদীয় কমিটি। সোমবার (২৩ আগস্ট) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ আসে।

এজন্য আগামী ২-১ দিনের মধ্যে পরিবেশ মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয় এবং ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনকে (বিসিক) চিঠি দেয়া হবে বলে সংসদীয় কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন জানিয়েছেন।

সংসদীয় কমিটি বলেছে, পরিবেশ দূষণ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সঠিক পদক্ষেপ নেয়ার পর আবার চালু করা যাবে সাভারের চামড়া শিল্প নগরী।

সাবের চৌধুরী বলেন, সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে চামড়া শিল্প নগরী পরিদর্শন করে সার্বিক অবস্থা দেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।

তিনি বলেন, যেটা দেখা গেছে, তা হলো যে পরিমাণ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা রয়েছে, উৎপাদন হয় তার চেয়ে অনেক বেশি। জরিমানা বিভিন্ন সময় করা হয়। কিন্তু সেটা কোনো সমাধান নয়। এজন্য আমরা বন্ধ করে দিতে বলেছি।

সংসদীয় কমিটিকে মন্ত্রণালয় জানায়, সাভারের চামড়া শিল্প নগরীতে দৈনিক ৪০ হাজার ঘনমিটার বর্জ্য উৎপাদন হয়। যেখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা রয়েছে ২৫ হাজার ঘনমিটার। অর্থাৎ দৈনিক ১৫ হাজার ঘনমিটার বর্জ্য পরিবেশে মিশছে। গত তিন বছরে এক কোটি ৬৪ লাখ ঘনমিটার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বাইরে থেকে গেছে।

সাবের বলেন, শুধু তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা রয়েছে সাভারে। হেভি মেটাল এবং ক্রোমিয়াম বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কোনো ব্যবস্থাই নেই।

প্রচুর বর্জ্য ধলেশ্বরী নদীতে মিশে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, দূষণ কমানোর জন্য হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি আনা হল। কিন্তু দূষণ তো কমল না।

তিনি জানান, ট্যানারি পরিচালনার জন্য প্রতিবছর যে পরিবেশ ছাড়পত্র নিতে হয়, তা নবায়ন না করতেও কমিটি সুপারিশ করেছে।

চামড়া শিল্পকে আন্তর্জাতিক মানসম্মত পরিবেশে উন্নীত করতে ২০০৩ সালে সাভারের হেমায়েতপুরে চামড়া শিল্প নগরী গড়ে তোলার কাজে হাত দেয় বিসিক।

হাজারীবাগের ট্যানারি মালিকদের অনীহা সত্ত্বেও ২০১৭ সালের এপ্রিলে আদালতের নির্দেশে তাদেরকে সেখানে যেতে বাধ্য হতে হয়।

শুরুতে কথা ছিল শিল্পনগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ট্যানারিগুলো নিজেরাই ইটিপি স্থাপন করবে। কিন্তু ট্যানারিগুলো তা না করায় শিল্প মন্ত্রণালয় প্রকল্পের আওতায় সিইটিপি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়ে ২০১০ সালে প্রকল্প সংশোধন করা হয়। তখন প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ৫৪৫ কোটি টাকা।

এরই মধ্যে শিল্পনগরীর কোনো সুবিধা নিশ্চিত না করে ট্যানারিগুলোকে বারবার স্থানান্তরের সময়সীমা বেঁধে দিতে থাকে শিল্প মন্ত্রণালয়। তাতেও কাজ না হওয়ায় উচ্চ আদালত হাজারীবাগের কারখানাগুলোর গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার আদেশ দেওয়ার পর ২০১৭ সালের এপ্রিলে কারখানাগুলো একযাগে স্থানান্তরিত হয়।

সিইটিপির বিভিন্ন কম্পোনেন্টের কাজ সমাপ্ত হওয়ার আগেই ১৩০টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদন শুরু করে।

ফলে আগে হাজারীবাগে বর্জ্য ও দূষিত তরল বুড়িগঙ্গা নদীর পানিতে মিশত, তা এখন সাভারে ধলেশ্বরী নদীতে মিশছে।

সংসদীয় কমিটির সুপারিশের বিষয়ে বিসিকের চেয়ারম্যান মোশতাক হাসান বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানতে পারলে এ বিষয়ে বলতে পারবো।

সান নিউজ/এফএআর

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

উত্তরায় প্রাইভেটকারে অপহরণ; ভিডিও ভাইরালের পর গ্রেপ্তার ২

রাজধানীর উত্তরা এলাকায় চাঞ্চল্যকর অপহরণের ঘটনায় অপহরণে ব্যবহৃত একটি প্রাইভে...

আমাকে চেয়েছিলো যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামী বানাতে: ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, গত সরকারের সময় তিনবার...

ভালুকায় সৌন্দর্য বাড়াতে ইউএনও’র ‘নিজ খরচে’ সবুজ বিপ্লব

ভালুকা উপজেলার পরিবেশ সংরক্ষণ ও নগর সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নি...

কালীগঞ্জে ফিল্মিস্টাইলে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

গাজীপুরের কালীগঞ্জে জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জে...

সড়কহীন ৩৪ কোটি টাকার সেতু

সেতু আছে কিন্তু সংযোগ সড়ক করা হয়নি এমন সেতু ফেনীতে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা