বিনোদন ডেস্ক: কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী সুবীর নন্দীর জন্মদিন আজ। তিনি মূলত চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়ে খ্যাতি অর্জন করেন।
চলচ্চিত্রের সংগীতে তাঁর অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করেন। তিনি মহানায়ক (১৯৮৪), শুভদা (১৯৮৬), শ্রাবণ মেঘের দিন (১৯৯৯), মেঘের পরে মেঘ (২০০৪) ও মহুয়া সুন্দরী (২০১৫) চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়ে পাঁচবার এই পুরস্কার লাভ করেন। সংগীতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০১৯ সালে তাঁকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে।
চলচ্চিত্রে নন্দীর গাওয়া উল্লেখযোগ্য গান হল ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়’, ‘পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই’, ‘আমি বৃষ্টির কাছ থেকে কাঁদতে শিখেছি’, ‘হাজার মনের কাছে প্রশ্ন রেখে’, ‘তুমি এমনই জাল পেতেছ’, ‘বন্ধু হতে চেয়ে তোমার’, ‘কতো যে তোমাকে বেসেছি ভালো’, ‘পাহাড়ের কান্না দেখে’, ‘কেন ভালোবাসা হারিয়ে যায়’, ‘একটা ছিল সোনার কন্যা’, ‘ও আমার উড়াল পঙ্খীরে’। তাঁর প্রকাশিত প্রথম গানের অ্যালবাম সুবীর নন্দীর গান (১৯৮১)। এছাড়া তাঁর অন্যান্য অ্যালবামগুলো হল প্রেম বলে কিছু নেই, ভালোবাসা কখনো মরে না, সুরের ভুবনে, গানের সুরে আমায় পাবে (২০১৫) প্রকাশিত হয় এবং ভক্তিমূলক প্রণামাঞ্জলী।
১৯৫৩ সালের ১৯ নভেম্বর হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার নন্দীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন সুবীর নন্দী। তার ডাক নাম বাচ্চু। এ নামটি অবশ্য সাধারণ মানুষ জানে না। সবার কাছে তিনি সুবীর নন্দী নামেই পরিচিত।
সুবীর নন্দীর পিতা সুধাংশু নন্দী ছিলেন একজন চিকিৎসক ও সঙ্গীতপ্রেমী। তার মা পুতুল রানীও গান গাইতেন। তবে পেশদারিত্বে আসেননি। সঙ্গীত পরিবারেই যেহেতু জন্ম, সুতরাং সুবীর নন্দীর গানের চর্চা করাটা খুব স্বাভাবিক ছিল। প্রথমে মায়ের কাছ থেকেই শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তালিম পান। এরপর গুরু বাবর আলী খান ও বিদিত লাল দাশের কাছে গান শেখেন তিনি।
১৯৬৩ সালে সুবীর নন্দী যখন তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র, তখন থেকেই তিনি গান করতেন। এর চার বছর পর তিনি সিলেট বেতারে গান করা শুরু করেন। তবে মৌলিক গানে সুবীর নন্দীর যাত্রা শুরু হয় ১৯৭০ সালে। ঢাকা রেডিওতে ‘যদি কেউ ধূপ জ্বেলে দেয়’ শীর্ষক গানটি রেকর্ড করেন তিনি। যেটি লিখেছিলেন মোহাম্মদ মুজাক্কের এবং সুর করেন ওস্তাদ মীর কাসেম।
নন্দী দীর্ঘদিন ফুসফুস, কিডনি ও হৃদরোগে ভুগছিলেন। ১৪ই এপ্রিল তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। ৩০ এপ্রিল তাঁকে সিঙ্গাপুর নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে ৫ ও ৬ই মে পরপর দুইদিন হার্ট অ্যাটাকের পর তিনি ২০১৯ সালের ৭ই মে ৬৫ বছর বয়সে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
সান নিউজ/এনকে