নিনা আফরিন, পটুয়াখালী: ঘূর্ণিঝড় মিধিলি এবার উপকূলের কৃষকদের সোনালী ধানের স্বপ্ন ধুলোয় লুটিয়ে দিয়েছে।
টানা দুই দিনের বর্ষণ ও ঝোড়ো বাতাসে আমনের ক্ষেত শতকরা ২৫ ভাগ ক্ষতি হয়েছে বলে কৃষকরা দাবি করছেন। এছাড়া খেসারি ডাল, মরিচ, সরিষাসহ ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে রবি শষ্যের।
আরও পড়ুন: হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ পিঠাপুলির উৎসব
সরেজমিনে সদর উপজেলার আউলিয়াপুর, ইটবাড়িয়া, লোহালিয়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, আমনের কাঁচাপাকা ক্ষেত মাটিতে লুটিয়ে রয়েছে। কোনো কোনো ধান ক্ষেতে হাটু সমান পানি। ফসল বাঁচাতে কৃষকরা ক্ষেতের পানি নামাতে কাজ করে যাচ্ছেন।
সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের পশ্চিম আউলিয়াপুর গ্রামের মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান (৫২) জানান, তাদের এলাকায় আমন ধানের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।
কোনো কোনো কৃষককের ধান আধাপাকা হয়েছে, আবার কোনোটা কেবল বের হয়েছে। এ ধানগুলো বর্ষা এবং বাতাসের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: শহর পরিচ্ছন্নতায় শিক্ষার্থীদের অভিযান
লোহালিয়া ইউনিয়নের ঞরিদুল হাসান (৪৯) জানান, তার ক্ষেতের মৌলতাসহ অন্যান্য ধানক্ষেত হাটু সমান পানির নিচে রয়েছে। যে পরিমান বাতাস হয়েছে, তাতে ধানে চীটা হবে অর্ধেক। এ বছর অর্ধেক উৎপাদন কৃষক ঘরে তুলতে পারবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জেলা কৃষি অফিস জানায়, এ বছর আমনের মৌসুমে পটুয়াখালীতে প্রায় এক লাখ ৯৭ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবদ করা হয়। এর মধ্যে প্রায় ২২ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এছাড়া শাকসবজি ৭৪০ হেক্টর, খেসারি ২০০০ হেক্টর, মরিচ ৪ হেক্টর, সরিষা ৮ হেক্টর এবং ৫০ হেক্টর জমির তরমুজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে ট্রেনে আগুন, গ্রেফতার ৩
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম জানান, ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমন ফসলের।
পটুয়াখালীতে বর্তমানে ক্ষেতে যে আমন রয়েছে, তার শতকরা ৫ ভাগ পেকে গিয়েছিল। এই ৫ ভাগ ফসলের একটি দানাও ঘরে তুলতে পারেনি কৃষক।
এছাড়া আধাপাঁকা ও কাঁচা মিলিয়ে শতকরা প্রায় ১৫ ভাগ ফসল নষ্ট হয়েছে। টাকার অংকে এ ক্ষতি পরিমাণ প্রায় ৪৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
সান নিউজ/এনজে