আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়ায় বসবাসরত মার্কিন নাগরিকদের অবিলম্বে সে দেশ ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান দিল স্লোভাকিয়া
বৃহস্পতিবার টুইটারে এক বিবৃতিতে ব্লিঙ্কেন বলেন, রাশিয়ার মার্কিন নাগরিক সাংবাদিককে আটকের খবরে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হল বিদেশে মার্কিন নাগরিকদের নিরাপত্তা এবং নিরাপত্তা। এ অবস্থায় রাশিয়ায় অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের অবিলম্বে সে দেশ ত্যাগের অনুরোধ জানাচ্ছি।
গ্রেফতার ইভান ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে মস্কোর প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। তিনি রুশ বংশোদ্ভূত হলেও আমেরিকার নাগরিক।
মার্কিন সাংবাদিক গ্রেফতারের বিষয়ে রুশ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবি জানিয়েছে, রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গোপন তথ্য হস্তগত করার চেষ্টা করছিলেন ৩১ বছর বয়সী ইভান। আমেরিকার হয়ে তিনি গুপ্তচরবৃত্তি করতেন।
আরও পড়ুন: সব স্টেশনেই থামছে মেট্রোরেল
রুশ গোয়েন্দা সংস্থার এমন ঘোষণার পর টুইটারে ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেন ব্লিঙ্কেন। বিবৃতিতে ব্লিঙ্কেন বলেন, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের কণ্ঠকে ভয় দেখানো, দমন ও শাস্তি দিতে ক্রেমলিনের অব্যাহত প্রচেষ্টার নিন্দা জানাই।
সাংবাদিক ইভানের গ্রেফতারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জিন-পিয়েরও। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, মার্কিন প্রশাসন তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এছাড়া স্টেট ডিপার্টমেন্ট এই বিষয়ে রাশিয়ান সরকারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেছে।
এদিকে গ্রেফতার ইভানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। তবে এখনো পর্যন্ত এই অভিযোগের বিষয়ে কোনো প্রমাণ দেয়নি ক্রেমলিন।
এর আগে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পরেই ওয়াশিংটন নির্দেশিকা জারি করে মার্কিন নাগরিকদের রাশিয়া ভ্রমণের ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছিল। সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, রুশ কর্তৃপক্ষ যেকোনো সময়ে বিদেশিদের আটক বা গ্রেফতার করতে পারেন।
আরও পড়ুন: ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ট্রাম্প
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। গত ২১ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহীদের দুই রাষ্ট্র ‘দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক’ ও ‘লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক’কে স্বীকৃতি দিয়ে শান্তি রক্ষায় ওই অঞ্চলে সেনাবাহিনী পাঠায় রাশিয়া।
পরে ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশপন্থী বিদ্রোহীদের সহায়তার লক্ষ্যে মস্কো স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনীকে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার অভিযানের নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী নিত্য পণ্যের দাম বেড়ে যায় যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে জার্মানিসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকেই পাল্টে যেতে শুরু করে জার্মানিসহ পশ্চিমা দেশগুলোর অর্থনীতির চেহারা। নিষেধাজ্ঞার বিপরীতে রাশিয়া থেকে জ্বালানি, ভোজ্য তেল, গ্যাস ও কয়লাসহ খাদ্যশস্যের আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। বিভিন্ন দেশে দেখা দিয়েছে মূল্যস্ফীতি।
সান নিউজ/এনকে