ছবি : সংগৃহিত
সারাদেশ

গাইবান্ধায় তিস্তার চরে আলীবাবা থিম পার্ক

গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি: আরব্য উপন্যাসের সহস্র রজনীর আলীবাবা ও চল্লিশ চোর গল্পের একটি জাদু শব্দ। যে গল্পে ৪০ জন চোর তাদের চুরি করা ধনরত্ন একটি গুহায় লুকিয়ে রাখত। আরব্য রজনীর সেই গল্প অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে বিনোদন কেন্দ্র আলীবাবা থিম পার্ক। যেখানে গেলেই মনে পড়ে যাবে আরব্য উপন্যাসের আলীবাবা ও চল্লিশ চোরের সেই রূপকথা।

আরও পড়ুন: রামগড়ে বিদেশী মদ-অবৈধ ফার্নিচার জব্দ

ঈদুল আজহাকে ঘিরে দর্শনার্থীদের পদতচারণায় মুখরিত আলীবাবা থিম পার্ক। তিস্তা নদীরপাড়ে গড়ে তোলা এ বিনোদন কেন্দ্র এখন ছোট-বড় সব বয়সী মানুষের বিনোদনের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে।

আবহমান বাংলার অতীত ঐতিহ্য এবং গ্রামীণ সংস্কৃতির সঙ্গে আলীবাবা ও চল্লিশ চোর গল্পের আদলে সাজানো এখানকার স্থাপনা। দৃষ্টিনন্দন এ বিনোদন কেন্দ্রকে ঘিরে প্রকৃতি প্রেমীদের ভিড় বেড়েছে নদীর তীরে।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ পৌরসভা থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে মীরগঞ্জ-চেতন্য-ইমামগঞ্জ বাজার হয়ে সোজা উত্তর দিকে গাইবান্ধা, রংপুর, কুড়িগ্রাম জেলার সীমান্ত স্থানে দাঁড়িয়ে আছে এক নৈসর্গিক প্রাকৃতিক পরিবেশে আলীবাবা থিম পার্ক।

আরও পড়ুন: পাবনায় ব্যবসায়ীর ১৫ লাখ টাকা নিয়ে উধাও!

তিস্তা নদী তীরবর্তী আলীবাবা থিম পার্কটি এখন শুধু বিনোদন কেন্দ্রই নয়, এটি সেখানকার চরবাসীকে স্বাবলম্বী করে তোলার স্বপ্ন দুয়ার। এ বিনোদন কেন্দ্রের কোলঘেঁষে রয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র। বেসরকারি এ সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে ঘিরেও প্রকৃতি প্রেমীদের ভিড় বেড়েছে নদীর তীরে।

এলাকাবাসী বলেন, রাক্ষুসী তিস্তা নদী কখনো শান্ত, আবার কখনো সেখানে পানির হু-হু শব্দ আর শব্দ। শুকিয়ে গেলে দেখা যায় শুধুই ধু-ধু বালুচর। যেখানে গাছগাছালি, পশুপাখি আর মানুষের কোনো অস্তিত্ব কখনো কল্পনাই করা যেত না। এখন সেখানেই আলীবাবা থিম পার্ক ও সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির অবস্থান।

তিস্তা নদীর তীরে ধু-ধু বালুচরে ৩০ একর জমির উপর চমৎকার এক নৈসর্গিক প্রাকৃতিক পরিবেশে নির্মিত হয়েছে আলী বাবা থিম পার্কটি। এর পাশেই চরের ৭০০ একর জমির উপর বেক্সিমকোর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান তিস্তা সোলার লিমিটেডের সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। সেখান থেকে বৃহত্তর রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলে বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণে ছড়িয়ে আশার আলো।

আরও পড়ুন: বজ্রপাতে বৃদ্ধের মৃত্যু

কেন্দ্রটিতে ৫ লক্ষ ২০ হাজার সোলার প্যানেল বসানো হয়েছে। ১৬টি কনভার্টার স্টেশনের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে ২শত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পৌঁছে যাচ্ছে। নদীর তীর ঘেঁষে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় শুধু ঈদ ছাড়াও এখানে আসেন নানান বয়সী মানুষ।

বর্ষাকাল আর বন্যার পানিতে যৌবন ফিরে পাওয়া তিস্তার অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসে ভ্রমণ পিপাসু মানুষ। রংপুর,গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম জেলার মানুষের কাছে বিনোদন স্পটে পরিণত হয়েছে এলাকাটি।

আলীবাবা থিম পার্কের প্রবেশপথ পার হতেই নজর কাড়বে মহান আল্লাহ তায়ালার ৯৯ নাম খচিত নির্মাণাধীন ২০ মিটার উঁচু ভাস্কর্য। আরব্য উপন্যাসের সেই জাদু শব্দ চিচিং ফাঁক বলে দরজা খুলে মণিমাণিক্য না মিললেও এ পার্কের দেয়াল থেকে সহজেই চোখের পলক ফেলানো সম্ভব নয়। দেয়ালে তাকালে চোখে পড়বে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম, জেরুজালেমের পবিত্র মসজিদ আল-আকসা,পবিত্র কাবা-শরিফ, মা ফাতেমা (রা.) এর বাড়ি, জর্ডানের মরুভ‚মির সেই সাহাবি ও খেঁজুর গাছসহ খোদাই করা বিভিন্ন ঐতিহাসিক নিদর্শনের চিত্র।

আরও পড়ুন: বজ্রপাতে প্রাণ গেল ৪ জনের

দর্শনার্থীদের বসার জন্য রয়েছে সিমেন্ট দিয়ে গাছের আদলে তৈরি করা বসার চেয়ার, রয়েছে বেঞ্চ। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগিয়ে পরিপাটি করে সাজানো হয়েছে নয়নাভিরাম রাস্তা। সমুদ্রের বড় মাছের খাদ্যসংস্থান কিভাবে হয় ও আগ্নেগিরির গলিত লাভা এবং বড় বড় সাপ কিভাবে মানুষকে দংশন করতে পারে তাও দেখা যাবে।

হাটতে হাটতে পার্কের উত্তরে গেলে নজরে পড়বে নির্মাণাধীন পাহাড়, পানির উপর দিয়ে ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা, পানির ঢেউ। রয়েছে পিকনিক ¯পট ও রিসোর্ট সেন্টার।

সুন্দরগঞ্জের সাজেদুল ইসলাম বলেন,সবুজ গাছগাছালিতে ভরা মনোরম পরিবেশে গড়া এ পার্কের সবকিছুই ভালো লেগেছে।

হাস্যেজ্জ্বল মুখে তিনি বলেন, পুরো নির্মাণ কাজ শেষ হলে বিশ্বের সকল পার্কের বিষয়বস্তু এখানে থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

আরও পড়ুন: আরও একজনের লাশ উদ্ধার

পার্কে ঘুরতে আসা কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার জুম্মারহাট এলাকার ব্যবসায়ী চান মিয়া বলেন, এ পার্কের কথা শুনে আমি পরিবারসহ ঘুরতে এসেছি। আমাদের খুব ভালো লাগছে। বর্ষাকালে এটিকে আরও বেশি সুন্দর লাগছে। পার্কের পাশে তিস্তা নদীর স্রোত, নৌকার ছুটোছুটি, সঙ্গে চরের বুকে বিশাল সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সবমিলিয়ে অনেক বেশি উপভোগ করার মতো।

আলী বাবা থিম পার্কের উদ্যোক্তা ইয়ার আলী বলেন, ব্যতিক্রমধর্মী বিনোদন দিতে তিনি এ উদ্যোগ নিয়েছেন। পার্কটি এখানকার হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। বেকারত্ব ঘোচানোর সঙ্গে এ অঞ্চলের মানুষের বিনোদনেও ভূমিকা রাখবে।

পুরো পরিকল্পনা অনুযায়ী এ পার্কের নির্মাণ কাজ শেষ হলে এটি হবে রংপুর অঞ্চলের বিশেষত্বে ভরা বিনোদনের একটি অন্যতম আকর্ষণীয় কেন্দ্রস্থল। প্রতিদিনই পার্কটিকে কেন্দ্র করে শত শত দর্শনার্থী ভ্রমণ করতে আসছেন বলেও জানান তিনি।

সান নিউজ/এইচএন

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

বোয়ালমারীতে স্বর্ণের কারিগরকে কুপিয়ে জখম

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে...

নিজ্জর হত্যায় সন্দেহভাজন ৩ জন গ্রেফতার 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কানাডায় বসবাসর...

বজ্রপাতের সময় করণীয়

লাইফস্টাইল ডেস্ক: চলমান তাপপ্রবাহ...

ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা-ভূমিধস, নিহত ১৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইন্দোনেশিয়ার ম...

ভালুকায় পানি ও স্যালাইন বিতরণ

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের ভালুকায় প্রচন্ড...

শাহজালালে বন্ধ থাকবে ফ্লাইট ওঠানামা

নিজস্ব প্রতিবেদক: হযরত শাহজালাল আ...

উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী পান্নার গণসংযোগ

রাজীব চৌধুরী, কেশবপুর : আসন্ন কেশবপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে...

লিফট কিনতে ফিনল্যান্ড গেলেন ঢাবির প্রো-ভিসি

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিভিন্ন ভবনের...

লন্ডনে ফের মেয়র হলেন সাদিক খান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাজ্যের র...

ইয়াবাসহ গ্রেফতার ১

জেলা প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম জেলায় ক...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা