বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি
জাতীয়

সংসদে ক্ষোভের মুখে বাণিজ্যমন্ত্রী

সান নিউজ ডেস্ক : নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বগতি নিয়ে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের সদস্যদের কঠোর সমালোচনা ও ক্ষোভের মুখে পড়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। জাতীয় পার্টি এবং বিএনপির সংসদ সদস্যরা বলেছেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী একজন অভিজ্ঞ ব্যবসায়ী হয়েও সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

আরও পড়ুন: ইউক্রেন বন্দরে তুর্কি জাহাজে আগুন

মঙ্গলবার ( ৫ এপ্রিল ) জাতীয় সংসদে বাণিজ্য সংগঠন বিল-২০২২ পাসের আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্যরা এসব কথা বলেন।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, সিন্ডিকেটের স্বার্থে বিলটি আনা হয়েছে। এর মাধ্যমে সিন্ডিকেটকে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

বিএনপির সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে হইচই হলো। ১৫ দিনে সিন্ডিকেট হাজার কোটি টাকা উঠিয়ে নিয়েছে। সিন্ডিকেট হলো সরকার, সরকার আর সিন্ডিকেটের মধ্যে পার্থক্য নেই।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক বলেন, সাধারণ মানুষ ভুক্তভোগী হচ্ছে। তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য কঠোরভাবে বাজার নজরদারি করতে হবে। সরকারের সহযোগিতা ছাড়া সিন্ডিকেট মূল্যবৃদ্ধি করতে পারে না।

আরও পড়ুন: অবাধ্য ইমরানকে শাস্তি দিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

তিনি বলেন, বলা হয় যুদ্ধের কারণে দাম বেড়েছে। যেসব পণ্য আমদানি করা হয় সেগুলোর দাম বাড়তে পারে। যেগুলো যুদ্ধের আগে আমদানি করা হয়েছে এবং যেগুলো দেশি পণ্য সেগুলোর কেন দাম বাড়বে? প্রয়োজনে ভর্তুকি দিয়ে হলেও নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবি জানান তিনি।

জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, সাধারণ মানুষ এখন পুষ্টিমানের সঙ্গে আপস করতে বাধ্য হচ্ছে। শ্রীমঙ্গলে যে লেবু ২ টাকা, সেটা ঢাকায় ২২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্যমন্ত্রীকে আবার যুদ্ধ করতে হবে।

বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, গ্যাসের অভাবে ঢাকায় হাহাকার চলছে। গ্যাসের দাম, তেলের দাম সব বাড়ানো হচ্ছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। কিছু উদ্যোগ সরকার নিয়েছে। কিন্তু সেখানে স্বচ্ছতার অভাব আছে।

তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা জনপ্রতিনিধি হয়ে সম্পদের পাহাড় গড়ছেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। ক্ষমতার বলয়ে থেকে সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছেন তারা।

তারেক রহমান লন্ডন থেকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করছেন, বিএনপির কারণে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে এসব অপ্রাসঙ্গিক কথা না বলে সরকারকে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে বলেন তিনি।

পীর ফজলুর রহমান বলেন, আজ সংবাদপত্রে এসেছে, তিনি (বাণিজ্যমন্ত্রী) গতকাল বাজারে গিয়েছেন এবং তিনি ২৮ টাকা করে ৫ কেজি পেঁয়াজ কিনেছেন। এখন মাননীয় মন্ত্রী যদি ঘোষণা দিয়ে একটু কাঁচা বাজার, সবজি বাজারসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে যেতেন মানুষও ওই বাজারে যেতে পারত এবং মন্ত্রীর মতো কম দামে জিনিস কিনতে পারত। কারণ তিনি যতই ভ্যাট কমিয়ে মূল্য কমানোর চেষ্টা করছেন, প্রকৃতপক্ষে বাজারে পণ্যের দাম কমেনি।

আরও পড়ুন: নতুন ট্রাইব্যুনাল তৈরি করা হবে

তিনি বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী সজ্জন মানুষ। কিন্তু তিনি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। যে কারণে প্রায় সময় সিন্ডিকেট দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। মন্ত্রী একজন অভিজ্ঞ ব্যবসায়ী কিন্তু কেন তিনি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না? সত্য স্বীকার করতে হবে। বাণিজ্যমন্ত্রী সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। সিন্ডিকেট করে তেলের দাম বাড়িয়ে হাজার কোটি টাকা নিয়ে গেছে। কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি।

গণফোরামের মোকাব্বির খান বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী দেশের শীর্ষস্থানীয় সফল ব্যবসায়ী। মন্ত্রী হিসেবে তিনি কতটুকু সফল সেটা বলতে না পারলেও বাজারে গেলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সেটি ভালোভাবে জানা যাবে। বর্তমান সরকার দাবি করে তারা ব্যবসাবান্ধব। যে সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী একজন ব্যবসায়ী, সেই সরকার জনবান্ধব নয়, ব্যবসাবান্ধব হওয়াটেই স্বাভাবিক!

তিনি বলেন, ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়। তার অনেক আগেই এই সংসদ অধিবেশনে আমি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়েছিলাম। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির অজুহাত হিসেবে যুদ্ধকে সামনে নিয়ে আসলে হবে না। যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট মূল্য বাড়িয়ে মানুষের পকেট কেটে অনেক টাকা নিয়ে গেছে।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান বলেন, সরকার ধরলে দাম কমে আবার যখন সরকার শিথিলতা দেখায় তখন আবার দাম বাড়ে। একটার দাম কমলে আরেকটার দাম বাড়ে, এটা একটা লুকোচুরি খেলার মতো।

আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সময় লাগতে পারে

বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যদের নানা প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আমি বরাবরই ‍লক্ষ্য করি, কেউ আমার মন্ত্রণালয়ের কোনো কথা বলতে গেলে প্রথমেই বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী নিজেই তো ব্যবসায়ী! আমি ব্যবসা করি আজ ৪০ বছর, আর রাজনীতি করি ৫৬ বছর। ১৯৬৬ সাল থেকে রাজনীতি শুরু করেছি, কিন্তু রাজনীতিবিদ হতে পারলাম না। এ ঢাকা শহরে ১৯৭৩ সালে ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম। ৬৯ সালে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমার, কোনো উকিল বা ডাক্তার যখন পার্লামেন্টে মেম্বার হন তখন কেউ বলে না যে এখানে উকিল বা ডাক্তার কেন এসেছে? কিন্তু আমি ব্যবসায়ী, এটাই আমার অপরাধ।

মন্ত্রী বলেন, আমরা সবাই জানি জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। আমি কখনোই বলিনি যে যুদ্ধের কারণে তেলের দাম বেড়েছে। বারবার বলেছি, সরকার ব্যবসা-বাণিজ্যে সহযোগিতা করতে চায়। যে কেউ চাইলে তেল আনতে পারেন। তেল আনতে কোনো বাধা নেই। সরকার চেষ্টা করে যাতে সবাই ন্যায্যমূল্য পায়।

সাননিউজ/এমআরএস

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

জনগণ নির্বাচনমুখী হলে কেউ বাধা দিতে পারবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

দেশের জনগণ যখন নির্বাচনমুখী হবে, তখন কোনো শক্তিই নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে প...

ডাকাতির প্রস্তুতিকালে শ্রমিক লীগ নেতাসহ ৩ জন গ্রেপ্তার

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ শ্রমিক লী...

বোয়ালমারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় বৃদ্ধ নিহত

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ট্রলির ধাক্কায় কুদ্দুস ফকির (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হয়...

২৩ মামলার আসামি লালুসহ ৩ সহযোগী আটক

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী, চারটি হত্যাসহ ২৩ মামলার আসামি...

কভার্ড ভ্যান–বাসের মাঝে পিষে মোটরসাইকেল চালক নিহত

ঝালকাঠি বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের কৃষ্ণকাঠি এলাকায় বাস ও কভার্ড ভ্য...

খেলতে গিয়ে সৌরবিদ্যুতের তারে গলায় ফাঁস, শিশুর মৃত্যু

ঝালকাঠির রাজাপুরে সৌরবিদ্যুতের তারে গলায় ফাঁস লেগে সাফওয়ান নামে ৪ বছরের এক শি...

কভার্ড ভ্যান–বাসের মাঝে পিষে মোটরসাইকেল চালক নিহত

ঝালকাঠি বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের কৃষ্ণকাঠি এলাকায় বাস ও কভার্ড ভ্য...

সাংবাদিকসহ ৪ পরিবারকে অবরুদ্ধ রাখার অভিযোগ

মাদারীপুরে মাহবুবুর রহমান বাদল নামের এক সিনিয়র সাংবাদিককে ১৫ দিন ধরে অবরুদ্ধ...

জনগণ নির্বাচনমুখী হলে কেউ বাধা দিতে পারবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

দেশের জনগণ যখন নির্বাচনমুখী হবে, তখন কোনো শক্তিই নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে প...

ভারতের জার্সি গায়ে পাকিস্তানি খেলোয়াড়, ফেডারেশনের জরুরি সভা

পাকিস্তানের একজন কাবাডি খেলোয়াড় বাহরাইনের একটি টুর্নামেন্টে ভারতের জার্সি গায়...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা