জাতীয়

দরিদ্র জনগোষ্ঠীর লকডাউন ভীতি

জাহিদ রাকিব

বিক্রি নেই। তবে খরচ তো কমে না। নিজের জমানো ও কিছু ঋণ করা টাকায় ছোট চায়ের দোকান। রিক্সাচালক স্বামী ছেড়ে গেছে বহু আগে। করোনা আর কয়েকদিন পর পর লকডাউনে মাথায় ঝুলছে ঋণের বোঝা। এই নিয়ে অভাব আর নিজের কষ্টের কথা বললেন কড়াইল বস্তিতে চায়ের দোকানি ময়না বেগম।

তিনি বলেন, সরকার আবার লকডাউন দিয়ে আমাদের আয় রোজগার বন্ধ করে দিয়েছে।

ময়না বেগমের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার নালিতাবাড়িতে, ১৬ বছর ধরে তিনি কড়াইল বস্তিতে বসবাস করেন। ময়না বেগম আগে মানুষের বাসাবাড়িতে কাজ করতেন। কয়েক বছর যাবত করছেন দোকান। ৫ বছর আগে কড়াইল বস্তিতে আগুনে পুড়ে নিঃস্ব হয়েছিলেন একবার, এরপর নানা শারীরিক জটিলতায় কয়েক বছর ধরে চায়ের দোকান করছেন তিনি। নাম সততা স্টোর।

কিন্তু এখন বিপত্তি বাধে করোনায় লকডাউনে, দোকান আর বাসাভাড়া মিলিয়ে ৮ হাজার টাকা, প্রতিদিন কারেন্ট বিল ৬০০ টাকা, গ্যাস বিল দৈনিক ৫০ টাকা করে দিতে হয়। আগে বেচা-কেনা যা হতো, এখন তার অর্ধেকও হয় না। কিন্তু কয়েক দফায় লকডাউনে এখন জীবন বাঁচানো শত দায়।

তিনি বলেন, আগে ভাবতাম মানুষ কিভাবে রাস্তায় নামে, কিন্তু এখন বুঝি ক্ষুধার ঠেলায় মানুষ রাস্তায় নামে। কয়দিন পর আমাকেও নামতে হবে। আমাদের করার কিছু নেই। ময়না বেগমের এক মেয়ে।

ময়না বেগম বলেন, এখনো দিনের বাজার করি নাই। বাজার করার মত টাকাও নাই, আর অন্যদিকে সরকারের কোন সহযোগিতা পাই না।

করোনা সংক্রামণ নিয়ন্ত্রণে ১ জুলাই থেকে সারাদেশে ৭ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। আর এই কঠোর বিধিনিষিধে ময়না বেগমের মত অবস্থা কড়াইল বস্তির নৌকার ঘাটের ভাঙারি দোকানের রঞ্জু মিয়ারও। রঞ্জু মিয়া প্রতিদিন এলাকা ঘুরে ভাঙারি কিনেন, আর সেই সময় দোকান সামলান তার স্ত্রী জামালপুরের মেয়ে আবেদা বেগম (৩০)।

সাননিউজের সাথে কথা হয় তাদের। আরও একজনের নাম আবেদা বেগমের। তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, আগে অনেক টাকার মাল কিনতেন ও বিক্রি করতেন। এখন লকডাউনের কারণে ভয়ে ভয়ে দোকান খুলতে হয়, কখন পুলিশ এসে দোকান বন্ধ করে দেয়। আর এইভাবে কি করে সংসার চালাবো। আবেদা বেগম বলেন, সরকারের উচিত লকডাউনের আগে আমাদের খাবারের ব্যবস্থা করা।

কড়াইল বস্তির আরেক বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক আগে বেসরকারি একটি কোম্পানিতে পরিচন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন।তিনি বলেন, সরকার ঘোষিত লকডাউনে চাকরি হারিয়েছেন তিনি। এখন বেকার হয়ে তিনি অন্যের চায়ের দোকানে কাজ করেন। হতাশার সুরে বলেন, সরকারের একটু সহযোগিতা পেলে খুব উপকার হতো। কঠোর লকডাউনে এমন অসহায়ত্বের গল্প শুধু কড়াইল বস্তিবাসীর নয়, ঢাকা শহর জুড়ে নিম্ন আয়ের মানুষের গল্প অনেকটা একই রকম।

সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করেন, দেড় বছর ধরে চলমান মহামারি করোনা আর করোনা সংক্রামণ রোধে সরকারের লকডাউনে অনেকে চাকরি হারিয়েছেন। ২০১৯ সালের শেষের দিকে যে দারিদ্রতার হার ছিলো ২০ শতাংশ, আর সেটা এখন বেড়ে ৪০-৪১ শতাংশ হয়ে গেছে। তারা মনে করেন, কয়দিন পর পর লকডাউনে গরীব মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গেছে।

নতুন করে লকডাউনে চাপ নেয়ার মত ক্ষমতা নেই নিম্ন আয়ের মানুষের। সরকারের উচিত লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করা।

সাননিউজ/জেআই/এফএআর

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক: টানা একমাস দাবদ...

মিল্টন সমাদ্দার রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক: মৃত্যুর জাল সনদ তৈরির অভিযোগে প্রতারণা ও জ...

আমিরাতে প্রবল বৃষ্টিপাত, সতর্কতা জারি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রবল বৃষ্টিপা...

লিওনার্দো দা ভিঞ্চি’র প্রয়াণ

সান নিউজ ডেস্ক: আজকের ঘটনা কাল অতীত। প্রত্যেকটি অতীত সময়ের স...

ভরিতে ১৮৭৮ টাকা কমলো স্বর্ণের দাম 

নিজস্ব প্রতিবেদক: টানা অষ্টমবারের...

পানিতে ডুবে প্রাণ গেল ভাই-বোনের

জেলা প্রতিনিধি : মুন্সীগঞ্জের সদরে পুকুরের পানিতে ডুবে দুই ভ...

তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার আভাস

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগের ওপর দিয়ে যে তাপপ্র...

বৃষ্টিতে বন্ধ খেলা

স্পোর্টস ডেস্ক : বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার প্রথম টি-টোয়...

রাজধানীতে বাসের ধাক্কায় নিহত ১

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর বকশিবাজারে বাসের ধাক্কায় আনোয়ার...

বাস-ট্রাক সংঘর্ষে আহত ৮

জেলা প্রতিনিধি : রাজবাড়ীর পাংশায় বাস ও ট্রাকের সংঘর্ষে ৮ যাত...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা