সান নিউজ ডেস্ক: আফগানিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখন থেকে আর কোনো নারী শিক্ষার্থী শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধের ঘোষণা দিয়েছে তালেবান। বুধবার (২১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআই।
আরও পড়ুন: স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই
আর এরপরই তালেবানের এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে আফগানিস্তানের কট্টরপন্থি শাসকগোষ্ঠীকে পরিণাম ভোগেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশটি।
বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে ইউনিভার্সিটি থেকে নারীদের নিষিদ্ধ করার এবং মেয়েদের জন্য মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার বিষয়ে ক্ষমতাসীন তালেবানের ‘অযৌক্তিক সিদ্ধান্তের’ যুক্তরাষ্ট্র কঠোরভাবে নিন্দা করছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন।
একইসঙ্গে তিনি সতর্ক করে বলেন, বিতর্কিত এই সিদ্ধান্ত আফগানিস্তানের কট্টরপন্থি শাসন ব্যবস্থার জন্য ‘পরিণাম’ নিয়ে আসবে।
আরও পড়ুন: আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালোই আছে
বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আফগান তালেবান শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে একটি চিঠি ইস্যু করেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ওই চিঠিতে জানিয়েছে, তাদের এ সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিক কার্যকর করা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে না।
২০২১ সালের আগস্টের মাঝামাঝিতে আশরাফ গনিকে হটিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসে তালেবান। সেসময় প্রথমে মেয়েদের হাইস্কুলে যাওয়া বন্ধ করে তারা। এবার বন্ধ করল নারীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ।
আফগানিস্তানের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী নেদা মোহাম্মদ নাদিম স্বাক্ষরিত সকল সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নারীদের শিক্ষা স্থগিত করার উল্লিখিত আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করার জন্য আপনাদের সকলকে অবহিত করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ উন্নয়নে বিশ্বের বিস্ময়
সারা দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় বিপুল সংখ্যক নারী শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণের মাত্র তিন মাস পর এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো। এরপরই ক্ষমতাসীন তালেবানের বিতর্কিত এই সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নারীদের নিষিদ্ধ করার, মেয়েদের জন্য মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার এবং আফগানিস্তানে নারী ও মেয়েদের তাদের মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা প্রয়োগ করার ক্ষমতার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা নিয়ে তালেবানের অযোগ্য সিদ্ধান্তের কঠোর নিন্দা জানাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি সতর্ক করে বলেন, শিক্ষা একটি মানবাধিকার। এটি আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং স্থিতিশীলতার জন্যও অপরিহার্য। আফগানিস্তানের সকলের অধিকারকে সম্মান না করা পর্যন্ত তালেবানরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বৈধতা পাওয়ার আশা করতে পারে না। এই সিদ্ধান্ত তালেবানদের জন্য পরিণতি বয়ে আনবে।
বিশ্বের অন্য কোনও দেশ নারী ও মেয়েদের শিক্ষা গ্রহণে বাধা দেয় না বলেও উল্লেখ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: আফগান নারীদের বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ
সংবাদমাধ্যম বলছে, আফগানিস্তান যখন ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটে নিমজ্জিত তখন সম্ভাব্য আন্তর্জাতিক দাতাদের কাছ থেকে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য তালেবানদের প্রচেষ্টাকে এই ধরনের পদক্ষেপ নিশ্চিতভাবেই ব্যর্থ করে দেবে।
সান নিউজ/এনকে