ইবি প্রতিনিধি : হলের ভাইবা নিতে গিয়ে এক ছাত্রীকে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। পরে বিষয়টা জানাজানি হলে ওই ছাত্রীকে পুনরায় ডেকে মারার হুমকিও দেন ওই শিক্ষিকা।
আরও পড়ুন : চা শ্রমিকদের মজুরি ১৭০ টাকা
শনিবার (২৭ আগষ্ট) নিরাপত্তা শঙ্কার কথা জানিয়ে ছাত্র-উপদেষ্টা ও প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত ওই শিক্ষিকার নাম মাহবুবা সিদ্দিকা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। এদিকে ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে হল প্রশাসন।
জানা যায়, গত ২৩শে আগস্ট খালেদা জিয়া হলের আবাসিকতার জন্য সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হয়। এতে বোরকা পরে ভাইবা দিতে আসেন কাফিয়া (ছদ্দ নাম) নামের এক শিক্ষার্থী। ভাইবাতে বোরকা পরে যাওয়ার তাকে নানাভাবে হেনস্তা করেন মাহবুবা সিদ্দিকা নামের ওই হলের আাবসিক শিক্ষিকা। পরে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী হেনস্তার বিষয়টি তার এক ছাত্রলীগের বড় ভাইকে জানান। পরে সে ছাত্রলীগকর্মী ওই শিক্ষিকাকে ফোন করলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আবারো ভুক্তভোগীকে প্রভোস্টের কক্ষে ডাকেন।
আরও পড়ুন : সংসদ অধিবেশন বসছে রোববার
এসময় তিনি ওই ছাত্রীকে 'পুইত্তা ফেলার' হুমকি দেন। এসময় তিনি আরও বলেন, ‘আমি ঢাবির রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ছিলাম। চিনো তুমি আমারে? আমি কত পাওয়ার চালাইছিলাম তুমি জানো? তোমার এলাকার মেয়র টিটু ভাইকে চিনো? ঐখানে তোমারে পুইত্তা ফালামু। আমার সাথে ফাইজলামি না? এলাকায়ও টিকতে পারবা না।’
এদিকে ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী। অভিযোগপত্রে তিনি বলেন, গত ২৩ তারিখ বোরকা পড়ে খালেদা জিয়া হলের আবাসিকতার ভাইভাতে উপস্থিত হই। এসময় আমাকে নানাভাবে হেনস্থা করা হয়।
কোনপ্রকার সংশ্লিষ্টতা না থাকার পরেও বোরকা পরার কারণে আমাকে সরাসরি শিবির বলে আখ্যায়িত করা হয়। সাথে হুমকি দেওয়া হয়। শঙ্কিত হয়ে বিষয়টি কাছের এক ছাত্রলীগের ভাইকে জানাই। পরে ওই শিক্ষিকা আমাকে প্রভোস্ট কক্ষে ডেকে নানাভাবে হুমকি দেন। এতে আমি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। বর্তমানে ব্যক্তিগত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
আরও পড়ুন : বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ওই মাহবুবা সিদ্দিকা সাংবাদিকদের বলেন ‘বিষয়টি আংশিক সত্য, আংশিক মিথ্যা। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীকে হুমকি দিতে পারে না, শাসন করতে পারে। ওই ছাত্রীকে পরেরবার ডাকা হয়েছে কারণ সে বাইরে গিয়ে আরেকটা ছাত্রলীগের ছেলের কাছে বলেছে। আর সে আমার ছাত্রের মারফতে আমাকে থ্রেট করেছে।’
তবে ছাত্রলীগকর্মী সাগর বলেন, 'ম্যাম আমার বিভাগের শিক্ষিকা। তাই আমি তাকে অনুরোধ করেছিলাম যেন ওই ছাত্রীকে হেনস্তা করা না হয়।'
এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র একরামুল হক টিটু সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, মাহবুবা সিদ্দিকা নামের কাউকে আমি চিনি না। আমার নাম জড়িয়ে এরকম কথা কেউ বলতে পারে না। এটা বললে তিনি অপরাধ করেছেন।'
আরও পড়ুন : পাকিস্তানে বিনিয়োগ করবে সৌদি আরব
এবিষয়ে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন আরা সাথী বলেন, 'এটি একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য আবাসিক শিক্ষকদের নিয়ে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে।'
ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন বলেন, ‘আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল বসবো। এদিকে একইভাবে আগামীকাল বিষয়টি নিয়ে বসার কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন।
সান নিউজ/এইচএন