আমিরুল হক, নীলফামারী: নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় ব্যয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগোতে পারছে না গরীব ও নিম্নমধ্য আয়ের মানুষ। সেজন্য নিরুপায় হয়ে লজ্জা ভুলে পণ্য কিনতে গরীবের লাইনে দাঁড়িয়েছেন মধ্যবিত্তরাও।
আরও পড়ুন: কর্মস্থলে পর্দার খেলাপ হওয়ায় চাকরি ছেড়েছেন জান্নাত
সকলেই ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ট্রাকে পণ্য কিনতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন। নীলফামারীর সদরসহ উপজেলা শহরগুলোতে এমন চিত্র দেখ গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন দেড় শতাধিক মানুষ। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মার্জিত পোশাকের নারী-পুরুষকে মুখ ঢেকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
কথা বলে জানা গেছে, তারা মধ্যবিত্ত পরিবারের। এদের মধ্যে একজন উচ্চ পদের আওয়ামী লীগের নেতাকেও দেখা গেছে। তিনি পদপদবী ভুলে লাইনে দাড়িয়ে টিসিবির পণ্য কিনেন।
টিসিবি’র পণ্য বিক্রয়ের প্রথম ধাপে ৪৬০ টাকা প্যাকেজে ২লিটার তেল, ২কেজি চিনি ও ২কেজি মুসুর ডাল পেয়ে খুশী উপকারভোগীরা। তিনটি পণ্য সাশ্রয়ীদামে পেয়ে অন্যান্য পণ্য ক্রয়ে বেড়েছে সক্ষমতা। সুষ্ঠু বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সুবিধাভোগী নির্বাচিত করায় খুশী উপকার ভোগীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, টিসিবির ট্রাকের সামনে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনতে হবে কোনো দিনও ভাবেননি। দোকান থেকে যা আয় হতো,
তাতে ভালোভাবেই সংসার চলে যেত। কিন্তু এখন কোনোভাবেই আর সংসার চালাতে পারছেন না। এখন প্রতিটি পণ্যের দামই নাগালের বাইরে। তাই লজ্জা লাগলেও লাইনে দাঁড়িয়েছেন।
আরও পড়ুন: ভালুকায় অগ্রণী ব্যাংকের উদ্যোগে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান
উপকারভোগী বিকাশ চন্দ্র রায় বলেন, আমরা কারো কাছে হাত পাতি খাবার পাই না। দিন আনি দিন খাই। কাউন্সিলর কার্ড দিছে এই কার্ড দিয়া এসব পণ্য কিনতে হয়। এতে করি হামার বাকি জিনিসপাতি কেনার জন্য টাকা বাচিছে। অপর এক সুবিধাভোগী মজিলা বেওয়া বলেন, শেখের ব্যাটি হামার এলাকাত আসি ট্রাকোত করি কম দামে জিনিস পাতি দিয়া যায়ছে। আমরা দোয়া করি শেখের ব্যাটি মেলা দিন বাচুক।
সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র রাফিকা আকতার জাহান জানান, আমরা স্বচ্ছ বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উপকারভোগী নির্বাচিত করেছি। উপকারভোগী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সরকারি যে দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সে অনুযায়ি উপকারভোগীর তালিকা করেছি। আশা করছি কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা ছাড়া টিসিবির পণ্য হাতে নিয়ে মানুষ বাড়ি ফিরবে।
সান নিউজ/এনকে