ছবি : সংগৃহিত
লাইফস্টাইল

ভিটামিন সি কেনো খাবেন, কোথায় পাবেন?

লাইফস্টাইল ডেস্ক : শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন সি-এর গুরুত্ব অপরিসীম। অসুখ থেকে বাঁচতে শুধু খাওয়ার আগে হাত ধোয়া, রাতে পর্যাপ্ত ঘুমানো ও নিয়মিত শরীরচর্চা করলেই হবে না, পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবারও খেতে হবে।

আরও পড়ুন : ভাপা পিঠা রেসিপি

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এমন খাবারের তালিকায় ভিটামিন সি এর অবস্থান উপরের দিকে। এছাড়া আয়রন, জিংক, আয়োডিন ও অন্যান্য পুষ্টিও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তোলে। পাশাপাশি হাড় ও দাঁতের জন্যও ভিটামিন সি অনেক উপকারী।

এটি ত্বকের টিস্যুর গঠনেও সরাসরি অংশ নেয়। যেকোনো ক্ষত খুব তাড়াতাড়ি সাড়িয়ে তুলতেও এই ভিটামিনের বিকল্প নেই। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসাবে ক্ষতিকর ফ্রি-রেডিক্যাল থেকেও রক্ষা করে এটি। ভিটামিন-সি দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে।

ইন্টারন্যাশনাল ফুড ইনফরমেশন কাউন্সিলের সায়েন্স কমিউনিকেশনের সাবেক পরিচালক এবং অণুজীববিজ্ঞানী-রোগতন্ত্র বিশেষজ্ঞ ডা. মেয়ার জানান, বয়স ও লিঙ্গের ভিত্তিতে অধিকাংশ লোকের ক্ষেত্রে দৈনিক সুপারিশকৃত মাত্রা (আরডিএ) হলো ১৫ মিলিগ্রাম থেকে ১২০ মিলিগ্রাম।

আরও পড়ুন : খুসখুসে কাশি সারানোর উপায়

১-৩ বছরে ১৫ মিলিগ্রাম, ৪-৮ বছরে ২৫ মিলিগ্রাম, ৯-১৩ বছরে ৪৫ গ্রাম, ১৪-১৮ বছরে ৬৫-৭৫ মিলিগ্রাম, ১৯ বছর বা তদোর্ধ্ব নারীদের ৭৫ মিলিগ্রাম, ১৯ বছর বা তদোর্ধ্ব পুরুষদের ৯০ মিলিগ্রাম, গর্ভবতী নারীদের ৮৫ মিলিগ্রাম ও বুকের দুধ পান করানো নারীদের ১২০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি প্রয়োজন হয়।

জেনে নিন, প্রতি ১০০ গ্রামে কোন ফল ও শাকসবজিতে কী পরিমাণ ভিটামিন সি (মিলিগ্রাম) পাওয়া যায়-

শাক :

ডাটাশাক (৮৩), গাজরপাতা (৭৯), করলাশাক (৭৮), বিটশাক (৭০), মুলাশাক (৬৯), শজনেপাতা (২২০ মিলিগ্রাম), নটেশাক (১৭৯), ধনেপাতা (১৩৫), পুঁইশাক (৬৪), কালো কচুশাক (৬৩), ছোলাশাক (৬১), শর্ষেশাক (৬০), বরবটিপাতা (৫৭), পাটশাক (৫৪), মেথিশাক (৫২), লাউশাক (৪৮), সবুজ কচুশাক (৪৮), হেলেঞ্চাশাক (৪৩), লালশাক (৪৩), কলমিশাক (৩০), পালংশাক (৩০), বতুয়াশাক (৪১), মিষ্টিকুমড়াশাক (৩৭) ইত্যাদি।

আরও পড়ুন : খুশকি সমাধানের উপায়

সবজি :

শজনে (৭০), ওলকপি (৫৩), ডাঁটা (৩৬), মিষ্টি আলু (৩৫), মুলা (৩৪), কাঁচামরিচ (১২৫), উচ্ছে (৯৬), করলা (৯১), কাঁচা আম (৯০), ফুলকপি (৭৩), কাঁচা টমেটো (৩১), চালকুমড়া (৩১), পাকা টমেটো (২৭), পেঁয়াজকলি (২৭), মিষ্টিকুমড়া (২৬), শালগম (২৫), অড়হড় (২৫), ফরাসি শিম (২৪), কাঁচা কলা (২৩), কাঁচা পেঁপে (১৯), আলু (১৯), পটল (১৯), কলার মোচা (১৬), বাঁধাকপি (১৬), বিট (১৫), এঁচোড় (১৪), লাল শিম (১২), পুঁই ডাঁটা (১১), চিচিঙ্গা (১৯), ঢেঁড়স (১৮), মুলা (১৭) ইত্যাদি।

ফল :

আমড়া (৯২), ডেউয়া (৬৬), কাগজি লেবু (৬৩), পাকা পেঁপে (৬২), কালোজাম (৬০), আমলকি (৪৬৩ মিলিগ্রাম), পেয়ারা (২২৮), করমচা (১৩৫), জাম্বুরা (১০৫), মাল্টা (৫৪), বরই (৫১), মুসাম্বি (৫০), লেবু (৪৭), পাকা আম (৪১), কমলা (৪০), জলপাই (৩৯), আতা (৩৮), লিচু (৩১), বেদানা (২৬), বাঙ্গি (২৬), তরমুজ (২৪), জামরুল (২২), পাকা তাল (৩৫), আনারস (৩৪) ইত্যাদি।

এ ছাড়া শুকনা মরিচ (৪৭), লেবুর খোসা (১২৯), পুদিনাপাতা (২২) ও থানকুনিপাতায়ও (২৪) ভিটামিন সি রয়েছে।

শাকসবজি উচ্চতাপে দীর্ঘ সময় ধরে রান্না করা যাবে না। ঢাকনা দেওয়া পাত্রে যথাসম্ভব অল্প পানি ব্যবহার করে দ্রুত রান্না করতে হবে। সর্বোচ্চ পরিমাণ ভিটামিন সি ধরে রাখতে ভাপে অথবা প্রেসার কুকারে রান্না করা উত্তম।

আরও পড়ুন : দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখার উপায়

ভিটামিন সি পানিতে দ্রবণীয়। তাই শরীরে সঞ্চিত থাকে না। এই ভিটামিন প্রয়োজনের অতিরিক্ত গ্রহণ করলে তা প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। তাই প্রতিদিনই নির্দিষ্ট পরিমাণে ভিটামিন সি খেতে হয়।

সাপ্লিমেন্ট সেবন না করলে সাধারণত আমাদের শরীরে ভিটামিন সি এর ওভারডোজ হয় না। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার ও সাপ্লিমেন্ট একসঙ্গে গ্রহণ করলে ওভারডোজ হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।

এ প্রসঙ্গে ডা. মেয়ার বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যাকাডেমিকসের ইনস্টিটিউট অব মেডিসিনের অন্তর্গত ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন বোর্ড ভিটামিন সি এর সহনীয় সর্বোচ্চ গ্রহণ মাত্রা (ইউএল) নির্ধারণ করেছে এবং জানিয়েছে যে, দীর্ঘসময় ধরে এর বেশি গ্রহণে স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়তে পারে।’

আরডিএ’র মতো ইউএল-ও বয়স ও লিঙ্গের ওপর নির্ভর করে। ১৯ বছর ও তদোর্ধ্ব নারী-পুরুষের ভিটামিন সি ইউএল হলো ২,০০০ মিলিগ্রাম। ভিটামিন সি ইউএল’র পূর্ণাঙ্গ তালিকা যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের সাইটে পাওয়া যাবে।

আরও পড়ুন : শীতকালীন সবজি ফুলকপির গুণাগুণ

কিছু চিকিৎসার ক্ষেত্রে ভিটামিন সি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হয়। ডা. মেয়ার জানান, ‘ভিটামিন সি স্টাটিন, কেমোথেরাপি ও রেডিয়েশন থেরাপির সঙ্গে মিথষ্ক্রিয়া করতে পারে।

ভিটামিন সি সাপ্লিমেন্ট সেবনের পূর্বে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলা উচিত। তিনি চিকিৎসার ইতিহাস ও অন্যান্য বিষয় বিবেচনাপূর্বক পরামর্শ দেবেন।’

ভিটামিন সি ১৯১২ সালে আবিষ্কৃত হয়। এটিই প্রথম ভিটামিন যেটি রাসায়নিকভাবে প্রস্তুত করা হয়েছিলো। এই আবিষ্কারে একজন ব্যক্তির নাম ওতোপ্রোতভাবে জড়িত- তিনি হলেন অ্যালবার্ট জেন্ট গিয়র্গি।

১৯৩৭ সালে এ আবিষ্কারের জন্য তিনি চিকিৎসাবিদ্যায় এবং ওয়াল্টার নরম্যান হাওরথ রসায়নে নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন।

সান নিউজ/জেএইচ/এইচএন

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক: টানা একমাস দাবদ...

মিল্টন সমাদ্দার রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক: মৃত্যুর জাল সনদ তৈরির অভিযোগে প্রতারণা ও জ...

আমিরাতে প্রবল বৃষ্টিপাত, সতর্কতা জারি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রবল বৃষ্টিপা...

লিওনার্দো দা ভিঞ্চি’র প্রয়াণ

সান নিউজ ডেস্ক: আজকের ঘটনা কাল অতীত। প্রত্যেকটি অতীত সময়ের স...

ভরিতে ১৮৭৮ টাকা কমলো স্বর্ণের দাম 

নিজস্ব প্রতিবেদক: টানা অষ্টমবারের...

পানিতে ডুবে প্রাণ গেল ভাই-বোনের

জেলা প্রতিনিধি : মুন্সীগঞ্জের সদরে পুকুরের পানিতে ডুবে দুই ভ...

তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার আভাস

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগের ওপর দিয়ে যে তাপপ্র...

বৃষ্টিতে বন্ধ খেলা

স্পোর্টস ডেস্ক : বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার প্রথম টি-টোয়...

রাজধানীতে বাসের ধাক্কায় নিহত ১

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর বকশিবাজারে বাসের ধাক্কায় আনোয়ার...

বাস-ট্রাক সংঘর্ষে আহত ৮

জেলা প্রতিনিধি : রাজবাড়ীর পাংশায় বাস ও ট্রাকের সংঘর্ষে ৮ যাত...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা