নিজস্ব প্রতিবেদক: নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে কোনো ধরনের গুজবে কান না দিতে দেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সবাইকে অনুরোধ করবো গুজবে কান দেবেন না। গুজবে কান না দিয়ে সবাই সচেতন হোন। তাহলে গুজব ছড়িয়ে কেউ সমস্যা তৈরি করতে পারবে না।
আরও পড়ুন: বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সংসদের প্রশ্নোত্তরে ভোলা-২ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আলী আজমের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
প্রশ্নটি হলো- নিত্যপণ্যের দাম বছরের অন্য সময়গুলোতে মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকলেও রজমানে ব্যতিক্রম দেখা যায়। অতিরিক্ত মুনাফালোভী কিছু ব্যবসায়ী অনৈতিকভাবে খাদ্যপণ্য গুদামজাত করে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরির হীন প্রচেষ্টা চালান। রমজানে পণ্য মূল্য স্বস্তির মধ্যে রাখতে মুনাফালোভী সিন্ডিকেট ও বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াতের গুজবের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হবে কিনা?
উত্তরে সংসদ নেতা বলেন, পণ্যের মজুত যাতে না করতে পারে, সেজন্য কী কী করণীয় আগেই জানিয়েছি। অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে মানুষের খাদ্য নিয়ে কোনো রকম খেলতে না পারে সেজন্য আমরা যথেষ্ট সচেতন রয়েছি। সেই সাথে বলতে চাই, বহু পণ্য আমাদের আমদানি করতে হয়।
আরও পড়ুন: মাদক খেলে পুলিশের চাকরি থাকবে না
সেক্ষেত্রে আমরা পরনির্ভরশীল। এ পরনির্ভরশীলতা আমরা কাটিয়ে উঠতে চাই। নিজেদের উৎপাদন বাড়াতে চাই।
এছাড়া জাতীয় পার্টির এমপি মুজিবুল হক চুন্নুর সম্পূরক প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সবসময় সুযোগ নিতে চায়। তাদের উদ্দেশ্য সবসময় সফল হয় না। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে চোখ উল্টিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া দরকার। তা না হলে মানুষের শান্তি আসবে না।
অসাধু ব্যবসায়ীদের কঠোর মনিটরিংসহ তাদের আইনের আওতায় আনাতে সরকার কোনো পদক্ষেপ নেবে কিনা, চুন্নুর এ প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। তারপরও কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: শপথ নিলেন সংরক্ষিত ৫০ আসনের এমপিরা
তিনি আরও বলেন, রমজান হচ্ছে কৃচ্ছ্রতাসাধনের মাস। রমজানে কম খাবার গ্রহণ করে খাদ্য সংরক্ষণ করা উচিত। কিন্তু আমাদের এখানে রমজানে খাবার গ্রহণের বিষয়টি বেড়ে যায়।
প্রকৃতপক্ষে রমজান তো সেজন্য নয়। এ সংযমের মাস। আমাদের সংযমী হতে হবে। বিশেষ কোনো একটা জিনিস না খেলে হবে না, রোজা রাখা যাবে না, বিশেষ বস্তু ছাড়া ইফতার করা যাবে না, এ ধরনের মানসিকতা বদলাতে হবে।
সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের দেশে যে খাদ্য পাওয়া যায় তা দিয়েই রোজা খুলতে পারি। কারণ অমুকটা না খেলে চলবেই না, তা তো নয়। বছরের অন্য সময়ে মানুষ কী খায়? রমজানেও সেভাবেই খাওয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তাহলে একটা জিনিসের জন্য কান্নাকাটি শোনা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, ইদানিং অনেক জিনিসের দাম কমছে। ফলে একেবারেই যে কমেনি, তা কিন্তু নয়। তবে কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের দাম যদি বেশি কমে যায়, তহলে কৃষক ন্যায্যমূল্য পায় না। দাম যদি বেশি বেড়ে গেলে নির্দিষ্ট আয়ের লোকেদের কষ্ট হয়, সাধারণ ভোক্তার কষ্ট হয়। এজন্য আমাদের উভয় দিকেই লক্ষ্য রাখতে হয়। এসব ব্যাপারে সরকার যথেষ্ট সচেতন।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুরে আগুনে ১১ দোকান পুড়ে ছাই
সংসদ নেতা বলেন, শুধু সরকারই সব দেখবে, তা তো নয়। যারা নির্বাচিত প্রতিনিধি আছেন তাদেরও একটা দায়িত্ব রয়েছে। বাজার মনিটরিংয়ে সবাই সহযোগিতা করলে অসাধু ব্যবসায়ীরা নিত্যপণ্যের দাম অসৎ উপায়ে বাড়াতে পারবে না।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী জনগণকে আহ্বান জানান, তারা মজুতদারদের বিষয়ে যেন নজর রাখেন। তাহলেই সবকিছু সহজ হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছি, আরও পদক্ষেপ নেবো। মোবাইল কোর্ট বসিয়ে শাস্তি দিচ্ছি। আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি।
সান নিউজ/এনজে
