ছবি-সংগৃহীত
বাণিজ্য

এক সপ্তাহে রিজার্ভ কমেছে 

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে ধারাবাহিকভাবে কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। নভেম্বরের শুরুতে রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৬৬ কোটি মার্কিন ডলার। ব্যাংকগুলো বেশি দামে রেমিট্যান্স কেনায় মাসের প্রথম সপ্তাহে আকুর পেমেন্ট দেওয়ার পরও রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়ে ২ হাজার ৭৮ কোটি ডলারে ওঠে।

আরও পড়ুন: বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

কিন্তু ডলার বিক্রি অব্যাহত থাকায় রিজার্ভ আবারও কমতে শুরু করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনের তথ্য মতে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১১৮ কোটি ডলার কমে রিজার্ভ এখন এক হাজার ৯৬০ কোটি ৩৭ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছে।

এতে দেখা যায়, ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রস রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ৫২৬ কোটি (২৫ দশমিক ২৬ বিলিয়ন) ডলার। তবে আইএমএফের শর্ত ও আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী, বিপিএম-৬ ম্যাথোডের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবের সঙ্গে ৫.৬৬ বিলিয়ন ডলারের পার্থক্য রয়েছে। অর্থাৎ বিপিএম-৬ ম্যানুয়াল অনুযায়ী গ্রস রিজার্ভ এক হাজার ৯৬০ কোটি ৩৭ লাখ ডলার বা ১৯ দশমিক ৬০ বিলিয়ন।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুরুতে গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৯ দশমকি ৭৩ বিলিয়ন ডলার আর বিপিএম-৬ অনুযায়ী ছিল ২৩ দশমকি ৩৭ বিলিয়ন ডলার।

আরও পড়ুন: সাড়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণে গেজেট

বিশ্বজুড়ে প্রচলিত ও বহুল ব্যবহৃত বিপিএম-৬ (আইএমএফের ব্যালেন্স অব পেমেন্টস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল) অনুযায়ী, রিজার্ভ গণনায় বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন তহবিলের পাশাপাশি বিমানকে দেওয়া ঋণ গ্যারান্টি, পায়রাবন্দর কর্তৃপক্ষকে দেওয়া ঋণ, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকে আমানত এবং নির্দিষ্ট গ্রেডের নিচে থাকা সিকিউরিটিতে বিনিয়োগ রিজার্ভের অন্তর্ভুক্ত নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক আগে এগুলোকেও রিজার্ভ হিসাবে দেখিয়ে আসছিল।

এসব হিসাব বাদ দেওয়ায় রিজার্ভ থেকে ৫ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার কমে যায়। তবে এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, যা শুধু আইএমএফকে দেওয়া হয়। কিন্তু তা প্রকাশ করা হয় না।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সেই হিসাবে দেশের প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৬ বিলিয়ন ডলারে নামবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে এখন যে পরিমাণ প্রকৃত রিজার্ভ আছে, তা দিয়ে শুধু ৩ মাসের আমদানি খরচ মেটানো যাবে। সাধারণত একটি দেশে ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। সেই মানদণ্ডের হিসাবে বাংলাদেশ এখন শেষ প্রান্তে রয়েছে। একটি দেশের অর্থনীতির অন্যতম সূচক হলো রিজার্ভ বা বৈদেশিক মুদ্রার মজুত।

আরও পড়ুন: ব্যাংক ছুটি ২৪ দিন

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সংকটের কারণে রিজার্ভ থেকে বাজারে প্রচুর ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া এ মাসে আকুর বিলও পরিশোধ হয়েছে। রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ কম এসব কারণেই মূলত রিজার্ভ কমে যাচ্ছে।

রেমিট্যান্স, রপ্তানি আয়, বিদেশি বিনিয়োগ, বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণ থেকে যে ডলার পাওয়া যায় তা দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তৈরি হয়। আবার আমদানি ব্যয়, ঋণের সুদ বা কিস্তি পরিশোধ, বিদেশি কর্মীদের বেতন-ভাতা, পর্যটক বা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাসহ বিভিন্ন খাতে যে ব্যয় হয়, তার মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রা চলে যায়। এভাবে আয়-ব্যয়ের পর যে ডলার থেকে যায় সেটাই রিজার্ভে যোগ হয়। আর বেশি খরচ হলে রিজার্ভ কমে যায়।

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি ও বিভিন্ন পণ্যের দাম বেশি থাকায় আমদানি ব্যয় কমেনি। এছাড়াও করোনার পর বৈশ্বিক বাণিজ্য আগের অবস্থায় ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত বছরের মার্চ থেকে দেশে ডলার সংকট প্রকট আকার ধারণ করে; যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। এ সংকট দিন দিন বাড়ছেই।

আরও পড়ুন: ডলারের দামে বেড়েছে রেমিট্যান্স

বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে রিজার্ভ থেকে নিয়মিত ডলার বিক্রি করে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত ৫২০ কোটি (৫ বিলিয়ন) ডলার বিক্রি করেছে। ফলে অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর এ সূচকটির ধারাবাহিকতা কমছে।

দেশের বিভিন্ন খাতে শর্ত পূরণের লক্ষ্য নির্দিষ্ট করে দিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) চলতি বছরের জানুয়ারির শেষ দিকে বাংলাদেশের ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। বাংলাদেশ এই ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার ফেব্রুয়ারিতে পায়।

ঋণের শর্তের মধ্যে অন্যতম ছিল- জুনে প্রকৃত রিজার্ভ ২ হাজার ৪৪৬ কোটি ডলার, সেপ্টেম্বরে তা ২ হাজার ৫৩০ ডলার এবং ডিসেম্বরে ২ হাজার ৬৮০ ডলারে রাখা। কিন্তু পরে শর্ত শিথিল করে সংস্থাটি।

আরও পড়ুন: ডলারের দাম বেড়েছে

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সাল থেকে রিজার্ভ কমে এ পর্যায়ে নেমেছে। এর আগে ধারাবাহিকভাবে যা বাড়ছিল। ১০ বছর আগে ২০১৩ সালের জুন শেষে রিজার্ভ ছিল মাত্র ১৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। পাঁচ বছর আগে ছিল ৩৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে বেড়ে ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর রিজার্ভ ৩৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়।

ওই বছরের ৮ অক্টোবর ৪০ বিলিয়ন ডলারের নতুন মাইলফলক অতিক্রম করে। এরপর ২০২১ সালের ২৪ আগস্ট তা নতুন রেকর্ড গড়ে। ওইদিন রিজার্ভ ৪৮ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলার বা চার হাজার ৮০৪ কোটি ডলারে উঠে। এরপর গত বছর থেকে ডলার সংকটে রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে।

সান নিউজ/টিও

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক: টানা একমাস দাবদ...

মিল্টন সমাদ্দার রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক: মৃত্যুর জাল সনদ তৈরির অভিযোগে প্রতারণা ও জ...

আমিরাতে প্রবল বৃষ্টিপাত, সতর্কতা জারি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রবল বৃষ্টিপা...

ঢাকায় ফিরল ৮ বাংলাদেশির লাশ  

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাওয়ার সময় তিউ...

লিওনার্দো দা ভিঞ্চি’র প্রয়াণ

সান নিউজ ডেস্ক: আজকের ঘটনা কাল অতীত। প্রত্যেকটি অতীত সময়ের স...

ভারতকে টপকে শীর্ষে অস্ট্রেলিয়া

স্পোর্টস ডেস্ক : ভারতকে সরিয়ে টেস্টে শীর্ষস্থান দখল করেছে অস...

ট্রেনের ধাক্কায় পুলিশ কর্মকর্তা নিহত

জেলা প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার মিরপুরে অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে ট্রেন...

যারা চাপে রাখতে চেয়েছিল তারাই চাপে

নিজস্ব প্রতিবেদক : যারা আমাদেরকে চাপে রাখতে চেয়েছিল, তারাই...

২৫ জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ কাল

নিজস্ব প্রতিবেদক : তীব্র তাপপ্রবাহে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য...

১০ টাকায় চিকিৎসা নিলেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর আগারগাঁও চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউ...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা