নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকার কোনো ক্ষুদ্র গোষ্ঠীকেও বক্তব্য দিতে বাধা দেবে না। কিন্তু জনগণের শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট হলে, আইন অমান্য করে ভাঙচুর ও আক্রমণ চালানো হলে সরকার সে ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক।
রোববার (২৮ মার্চ) রাজধানীর গ্রিন রোডে বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) আয়োজিত ইপিজেডের শ্রমিকদের জন্য হেল্পলাইন সেবা উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।
তিনি বলেন, যারা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন নষ্ট করার চেষ্টা করছে, তারা অবশ্যই বাংলাদেশ ও মাতৃভূমির প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা দেখাচ্ছে না।
১২ বছর ধরে বাক স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা টিকিয়ে রাখার ব্যাপারে সরকার সচেষ্ট রয়েছে বলে জানান তিনি।
আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে নতুন উদীয়মান অর্থনীতির দেশ। ভৌগোলিক অবস্থান, সহজলভ্য, উৎপাদনশীল ও সহজে প্রশিক্ষণযোগ্য সম্ভাবনাময় শ্রমশক্তি এবং পরিমিত উৎপাদন ব্যয়ে এশিয়া এমনকি বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগের প্রধান আকর্ষণীয় ক্ষেত্র।
সরকার শ্রমিকদের বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়ার লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করে আনিসুল হক বলেন, বাংলাদেশে অধিক পরিমাণে বিনিয়োগ অর্জনের জন্য শ্রম ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। সরকারের বিভিন্ন বিনিয়োগবান্ধব নীতি ও সিদ্ধান্ত তারই প্রতিফলন।
তিনি বলেন, এটা খুবই প্রশংসনীয় যে, বেপজা সব সময় শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষাকে প্রাধান্য দেয়। ইপিজেডগুলোতে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক, যেমন- শ্রমিক, মালিক, ব্যবস্থাপনা ঐকতানই এর প্রমাণ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১০ বছরে ইপিজেড ও এর বাইরের শ্রমিকদের বেতন তিনবার বৃদ্ধি করেছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ইপিজেডের শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা ও কল্যাণের জন্য আন্তর্জাতিক শ্রমমান অনুসারে সরকার একটি পূর্ণাঙ্গ ও পৃথক ‘বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন, ২০১৯’ প্রণয়ন করেছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভিশন অনুসরণ করে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ইপিজেড স্থাপন করা হয়েছে।
ইপিজেডের কর্মীদের জন্য বেপজার হেল্পলাইন সেবা চালু একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, এই পদক্ষেপ ইপিজেডের শ্রমিকদের পক্ষে সহায়ক হবে। অভিযোগ মোকাবিলার মাধ্যমে সহজতর কর্ম পরিবেশ বজায় রাখতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, বর্তমান সরকারের গতিশীল নেতৃত্বের সঙ্গে একাত্ম হয়ে বাংলাদেশের গর্ব হিসেবে বেপজা তার বিকাশ অব্যাহত রাখবে, এবং সুষ্ঠু ও সুন্দর কর্মক্ষেত্র বজায় রাখবে, যা এসডিজির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শিল্পে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপি বাড়িয়ে তুলবে।
বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনু্ল কবির, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধি দলের অ্যাম্বাসেডর রেনি তেরিংক, বাংলাদেশে নিযুক্ত আইএলও’র কান্ট্রি ডাইরেক্টর তোমো পাউটিনেন বক্তব্য রাখেন।
এর আগে মন্ত্রী বেপজা হেল্পলাইন ফোন নম্বর ১৬১২৮ উদ্বোধন করেন এবং এতে ফোন করে প্রাপ্য সুবিধাদি সম্পর্কে জানতে চান।
সান নিউজ/আরআই