নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা মীর হোসেন সাদ্দাম-এর হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে নোয়াখালী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছে নিহত সাদ্দামের পরিবার, স্বজন ও এলাকাবাসী।
রবিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা ১১টায় নোয়াখালী জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে ৬ নম্বর রাজগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দারা এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ছাত্রদল নেতা মীর হোসেন সাদ্দামকে যারা হত্যা করেছে তাদের মধ্যে আটককৃতদের অধিকাংশই আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে সাদ্দামের পরিবারকে হুমকি–ধমকি দিচ্ছে। দুইজন আসামি জামিন পেয়ে বিদেশ পাড়ি দিয়েছে। কোনো এক অদৃশ্য কারণে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত সকলেই জামিনে বের হচ্ছে। যার কারণে নিহত সাদ্দামের স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের আতঙ্কে দিন কাটাতে হচ্ছে। অবিলম্বে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান বক্তারা।
সাদ্দামের স্ত্রী সুবর্ণা আক্তার বলেন, “আমার বয়স মাত্র ১৯ বছর। এত অল্প বয়সেই আমাকে বিধবা হতে হলো। আপনারাই বলেন, এ বয়সে একটি মেয়ে কিভাবে বিধবা হয়? এটা কি মেনে নেওয়া যায়? আমার বাচ্চার বয়স ৯ মাস। সে দুনিয়ার কিছু বুঝে উঠার আগেই পিতৃহারা হলো। আমার স্বামীকে যারা হত্যা করেছে তারা এখন আবার জামিনে এসে আমাদেরকে হুমকি–ধমকি দিচ্ছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় থাকতে হচ্ছে। ভয় হচ্ছে, কখন আমাদেরও একই পরিণতি হয়।”
সাদ্দামের মা মমতাজ বেগম বলেন, “তারা আমার ছেলেকে কত কষ্ট দিয়ে মেরেছে। মেরে তার লাশ প্লাস্টিকে মুড়িয়ে সেফটিক ট্যাংকে ফেলে রেখেছে। এখন আবার তারা বের হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমাদের হুমকি–ধমকি দিচ্ছে। আমার ছেলের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাই।”
নিহত সাদ্দামের বড় ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন সোহেল বলেন, “পুলিশ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করলেও অদৃশ্য কারণে সবাই জামিন নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে। কার ইশারায় তারা জামিন নিচ্ছে? আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির জোর দাবি জানাই।”
মানববন্ধনে নোয়াখালী জেলা যুবদলের সহ–সাধারণ সম্পাদক মুরাদ জিয়াউর রহমান সুমন, রাজগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি মহিন উদ্দিন, রাজগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাহিদুল ইসলাম মঞ্জুসহ এলাকার স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও নিহত সাদ্দামের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল সদর উপজেলার নোয়ান্নই ইউনিয়নের দুর্গানগর গ্রামের একটি পরিত্যক্ত সেফটিক ট্যাংক থেকে পলিথিন মোড়ানো সাদ্দামের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন সোহেল বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে বেগমগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। সাদ্দাম বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের রাজেন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
সাননিউজ/আরপি