নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ : খামারের ভেতর ঢুকতেই বিশাল আকৃতির কালো, সাদা রঙের ষাঁড়টি চোখে পড়ে। ষাঁড়টির খাওয়া দাওয়া করছে, বসে আছে এবং যখন ইচ্ছে করছে ঘুমাচ্ছে নাম তার -শের খান। ওজনে ৮ শত ৫০ কেজি। ষাঁড়টির লালনপালনকারী খামারি মো. সোহান গাজী বলেন, ঘন কালো ও সাদা সুঠাম দেহের অধিকারী ষাঁড়টির নাম তিনি দিয়েছেন শের খান। তার মধ্যে হালকা রাগ আছে। খামারের সবার সঙ্গে তার ভাব। সব সময় কেউ না কেউ গায়ে হাত বুলিয়ে তাকে আদর করে। তবে কেউ পিঠে হাত দিলেও বিরক্ত হয় না। সব সময় খোশমেজাজে থাকে সে।
সোহান গাজী বাড়ি মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের রনছ গাজী বাড়ি এলাকায়। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে তিনি শের খানকে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আর এতেই ষাঁড়টি সবার নজরে এসেছে। ৮ শত ৫০ কেজি (২১ মণের বেশি) ওজনের ষাঁড়টি দেখতে প্রতিদিন কৌতূহলী মানুষের ভিড় লেগেই আছে।
খামারি সোহান বলেন, আমি এলাকায় গত চার বছর আগে রনছ রুহিতপুর উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন গাজী ডেইরি ফার্ম গড়ে তুলি। তবে সব সময় ভালো জাতের গরু গাভী পালনের চেষ্টা করছি। সেই ইচ্ছা থেকেই আমি গত এক বছর আগে অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড় কুষ্টিয়া থেকে কিনে লালন পালন শুরু করি।
খামারি বলেন, গতবছর কেনার সময় ষাঁড়টির ওজন ছিল ৯ মণ। শুরু থেকেই আমি তাকে খেসারি ভুসি, ভূট্টা ফাঁকি ও খৈল- ভুসি এবং কাঁচা ঘাস খাওয়ানো শুরু করি। এতে ষাঁড়টির খাওয়ার রুচি বেড়ে যায়। বয়স ও ওজন হিসাব করে তাকে খাওয়াতে থাকি। বর্তমানে ষাঁড়টি প্রতিদিন পানি সহ ১৮০ কেজি খাবার খায়। এই সময়ে কখনোই ষাঁড়টির রোগবালাই হয়নি। মোটাতাজাকরণের জন্য বিন্দুমাত্র ওষুধও খাওয়ানো হয়নি। বর্তমানে ষাঁড়টি লম্বায় ৮ ফুট, উচ্চতা সাড়ে ৫ ফুট ও ওজন ৮ শত ৫০ কেজি। পরিচর্যা করলে ষাঁড়টির ওজন হাজার কেজি পর্যন্ত হবে বলে, তিনি জানান। এ-জাতীয় ষাঁড় সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত বাঁচে। এখন ষাঁড়ের বয়স তিন বছর।
সোহান আরও বলেন, ষাঁড়টি তাঁর খামারের পরিবারের একজন প্রিয় সদস্য হয়ে গেছে। তবু বাস্তবতার তাগিদে তিনি ষাঁড়টি বিক্রি করে দিচ্ছেন। তবে কদর বোঝেন, এমন শৌখিন কোনও লোক ষাঁড়টি কিনলে তিনি সবচেয়ে খুশি হবেন। সোহানের প্রত্যাশা, ষাঁড়টি ৫ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন। এ পর্যন্ত সাড়ে তিন লাখ টাকা দাম উঠেছে। নামকরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শেরের মত তার হাঁক ডাক , ষাঁড়টিও দেখতে তেমনি। তাই শখ করে তিনি ষাঁড়টির নাম দিয়েছেন শের খান। আরও জানান, তার গাজী ডেইরি ফার্মে শের খান ছাড়াও ১৩ টি ষাঁড় রয়েছে। তাছাড়াও ছাগল ও ভেড়া পালন করেন।
শের খানকে দেখাশোনা করেন আকাশ, তিনি বলেন, ষাঁড়টি এবার ঈদকে সামনে রেখে বিক্রির কথা হচ্ছে। এটা শোনার পর থেকে তার মন খুব খারাপও লাগছে। ফার্মের অনেক সময় কাটে শের খানের সঙ্গে। তাকে প্রতি বেলায় খাওন খাওয়াই গোসল করাই। তাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখি। আমার সাথে ষাঁড়টি বন্ধু মতো আচরণ করে। বিক্রি হয়ে গেলেও ষাঁড়টির কথা মনে পড়বে।
সাননিউজ/জেআই শের খান ওজন ২১ মণ দাম ৫ লাখ