বিশেষ প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম : ডিবি পুলিশ পরিচয়ে আব্দুল মান্নান নামের এক ব্যক্তিকে গভীর রাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ১ লাখ ৮০ হাজার ৫০০ টাকা আদায়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দয়ের করা মামলায় ৬ পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) এসএএফ শাখায় কর্মরত কনস্টেবল মো. মাসুদ, মো. আব্দুল নবী, এসকান্দর হোসেন, মো. মনিরুল ইসলাম, মো. শাকিল খান ও মোর্শেদ বিল্লাহ। তাদের মধ্যে মোর্শেদ বিল্লাহ চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীরের বডিগার্ড হিসেবে পরিচিত।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার বাদী আব্দুল মান্নান ও পুলিশের একাধিক সূত্র সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন। তবে অজ্ঞাত কারণে এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। মুঠোফোনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক তেমন কিছুই বলেননি।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীরও বলেন, আমি খবরটি শুনেছি। এ নিয়ে এখন বিস্তারিত বলতে পারছি না।
আনোয়ারা থানার ওসি এস এম দিদারুল ইসলাম সিকদার বলেন, ভুক্তভোগী আবদুল মান্নান এ বিষয়ে আনোয়ারা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাত ২টার দিকে চারটি মোটরসাইকেল নিয়ে ৮ জন ব্যক্তি তার বাড়িতে যায় এবং ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাকে তুলে নেয়।
এরপর পটিয়ার ভেল্লাপাড়া সেতুর পূর্ব পাশে কৈয়গ্রাম রাস্তার মাথার একটি দোকানে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর আব্দুল মান্নানকে জানানো হয় তার নামে ডিবিতে অভিযোগ আছে। অভিযোগ থেকে নাম কাটাতে হলে ১০ লাখ টাকা লাগবে। এ সময় আত্মীয়-স্বজনকে ফোন দিয়ে টাকা এনে দিতে বলা হয়।
দর কষাকষির পর অবশেষে ১ লাখ ৮০ হাজার ৫০০ টাকা এনে দিলে ভোর ৫টার দিকে মান্নানকে ছেড়ে দিয়ে পটিয়ার দিকে চলে যায় অভিযুক্তরা। উক্ত আটজনের মধ্যে একজনের জ্যাকেটে ডিবি লেখা ছিল। বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে টাকা আদায়ের ঘটনায় কনস্টেবল মো. মাসুদ নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদী আব্দুল মান্নান।
আর মামলা দায়েরের পর রবিবার ৬ পুলিশ সদস্যকে নগরীর এ কে খান এলাকা থেকে আনোয়ারা থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের যৌথ দল গ্রেফতার করে। একইদিন তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। ভুক্তভোগী আবদুল মান্নানের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার পূর্ব বৈরাগ এলাকায় বলে জানান আনোয়ারা থানার ওসি এস এম দিদারুল ইসলাম সিকদার।
সান নিউজ/আইকে/কেটি