নিজস্ব প্রতিবেদক : মা ইলিশ রক্ষা, ইলিশ মাছের প্রজনন নির্বিঘ্ন এবং উৎপাদন বৃদ্ধি করতে বেশ কয়েক বছর ধরে সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করে আসছে। নির্দিষ্ট এ সময়ে ইলিশ মাছ ধরা, বিক্রি, বিপণন, মজুত ও পরিবহন নিষিদ্ধ। এর লঙ্ঘন করা হলে জরিমানা ও কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
প্রতিবছর প্রজনন মৌসুম নির্বিঘ্ন করতে দেশের নদ-নদীতে ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত দেওয়া ইলিশ মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে বুধবার (৪ নভেম্বর)। এদিন রাত ১২টার পর থেকে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার শেষে ফের ইলিশ শিকারে নামবেন জেলেরা।
ইলিশ গবেষকরা বলছেন, এই সময়ে ইলিশ ধরা থেকে বিরত থাকার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে- মা ইলিশ রক্ষা করা, যাতে তারা নিরাপদে নদীতে ডিম ছাড়তে পারে। সেই জাটকা রক্ষা করা গেলে দেশে বড় আকারের ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। ভোলা সদরের ইলিশা ফেরিঘাট, তুলাতলী, ভোলার খাল, ইলিশা বিশ্বরোডসহ মেঘনা পাড়ের বেশকিছু এলাকা এমন দৃশ্য দেখা গেছে। নদী ও সমুদ্র উপকূলবর্তী অন্যান্য জেলার জেলে পল্লীগুলোতেও উৎসবের আবহ।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম আজাহারুল ইসলাম বলেন, ৪ নভেম্বর রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে এ বছর নির্বিঘ্নে মা ইলিশ ডিম ছাড়তে সক্ষম হয়েছে। এই বছর বাংলাদেশের বাজারে অনেক কম দামে বড় আকারের ইলিশ মাছ বিক্রি হয়েছে। নদী ও সাগরে তুলনামূলকভাবে বেশি বড় ইলিশও ধরা পড়েছে।
বাংলাদেশে ২০০৩-২০০৪ সাল থেকেই জাটকা রক্ষার কর্মসূচি শুরু করা হয়। তখন থেকেই আস্তে আস্তে ইলিশের উৎপাদন বাড়ছিল। প্রথম ২০০৮ সাল থেকে প্রথম আশ্বিন মাসে পূর্ণিমার আগে পরে মিলিয়ে ১১ দিনের ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তখন থেকেই এর সুফল দেখতে শুরু করেন বিজ্ঞানীরা। তখন তারা গবেষণায় দেখতে পান যে, শুধু পূর্ণিমায় নয়, এই সময়ের অমাবস্যাতেও ইলিশ ডিম ছাড়ে।
পরবর্তীতে পূর্ণিমার সঙ্গে অমাবস্যা মিলিয়ে টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া শুরু হয়। বাংলাদেশের জিডিপিতে এর অবদান এক শতাংশের মতো। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী এই মুহূর্তে দেশের মোট মৎস্য উৎপাদনের প্রায় ১২ শতাংশ আসে ইলিশ থেকে।
সান নিউজ/এসএ/এস