ছবি : সংগৃহিত
জাতীয়
পুলিশ সপ্তাহ-২০২৩

সশরীরে উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

সান নিউজ ডেস্ক : ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে পুলিশ আছে জনতার পাশে’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৩। রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সশরীরে অংশ নিয়ে বার্ষিক পুলিশ প্যারেডের মধ্য দিয়ে উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আরও পড়ুন : মেট্রোরেল বন্ধ আজ

মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের প্যারেড মাঠে প্রধানমন্ত্রী পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে তাকে সালাম জানানো হয় এবং একই সঙ্গে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আয়োজিত প্যারেডের অভিবাদন মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীকে সালাম জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খোলা জিপে চড়ে প্যারেড পরিদর্শন করেন।

পুলিশ সপ্তাহের এবারের মূল প্রতিপাদ্য- ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ, পুলিশ আছে জনতার পাশে’। মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া পুলিশ সপ্তাহের বিভিন্ন কর্মসূচি ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে।

আরও পড়ুন : সশরীরে উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে বার্ষিক পুলিশ প্যারেডের মধ্য দিয়ে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৩ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পুলিশের বিভিন্ন কন্টিনজেন্ট ও পতাকাবাহী দলের প্যারেড পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন তিনি।

বার্ষিক পুলিশ প্যারেডে অধিনায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন খুলনা রেঞ্জের পুলিশ সুপার কাজী মইন উদ্দিন। তার নেতৃত্বে পরিচালিত প্যারেডে অংশ নেবেন সহস্রাধিক পুলিশ সদস্য।

২০২২ সালে সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৫ পুলিশ সদস্যকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)’, আর ২৫ জনকে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)’ দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন : ৯ সচিবের প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের ‘না’

এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য ২৫ সদস্যকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)-সেবা’ এবং ৫০ জনকে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)-সেবা’ প্রদান করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদকপ্রাপ্তদের পদক পরিয়ে দেবেন।

প্রসঙ্গত, করোনা মহামারির কারণে ২০২১ সালে পুলিশ সপ্তাহ হয়নি। এরপর ২০২২ সালে পুলিশ সপ্তাহ হলেও সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এদিকে ‘পুলিশ সপ্তাহ ২০২৩’ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেছেন, বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যগণ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে দায়িত্বপালন করবেন।

আরও পড়ুন : দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে দায়িত্বপালন করবেন

সরকার প্রধান বলেন, “আমি আশা করি, বাংলাদেশ পুলিশের প্রত্যেক সদস্য মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে দায়িত্ব পালন করবেন।

তিনি আরও বলেন, আমি বিশ্বাস করি, আপনারা সততা, নিষ্ঠা ও মানবিকতার সাথে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রত্যাশিত ‘জনগণের পুলিশ’ হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করবেন।”

সোমবার (২ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) ‘পুলিশ সপ্তাহ ২০২৩’ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে এ প্রত্যাশার কথা বলেন।

তিনি এ উপলক্ষে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সকল সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

আরও পড়ুন : দেশবিরোধী প্রচারণায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে গত ১৪ বছরে পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নতুন পদ সৃজন করে, জনবল নিয়োগ করেছি। তাছাড়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌ পুলিশ, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন, অ্যান্টি-টেরোরিজম ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটসহ বেশ কয়েকটি রেঞ্জ, মেট্রোপলিটন ইউনিট, সাইবার পুলিশ সেন্টার, ব্যাটালিয়ন, ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার, থানা, তদন্ত কেন্দ্র, ফাঁড়ি এবং জাতীয় জরুরি সেবায় ৯৯৯ ইউনিট গঠন করেছি।

আইজিপি’র র‌্যাংক ব্যাজ পুনঃপ্রবর্তন করাসহ নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক চালু, বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে পুলিশ সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস মোকাবেলায় পুলিশ সদস্যগণ নিজেদের জীবন বিপন্ন করে জনসেবার ক্ষেত্রে নজিরবিহীন ভূমিকা রেখেছেন।

তারা জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অভিযানে সফলতা অর্জন করেছেন। তারা অব্যাহতভাবে মাদক নির্মূল, সাইবার ক্রাইম, গুজব, মানিলন্ডারিং, মানব পাচার রোধসহ নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখছেন।’

আরও পড়ুন : ফানুস জটিলতায় রাজস্ব কমলো ৩ লাখ

সরকার প্রধান বলেন, ‘পুলিশ, প্রশাসন ও অন্যান্য বাহিনীর সহায়তায় আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখতে পেরেছি। দেশের গন্ডি পেরিয়ে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনেও আমাদের পুলিশ সদস্যগণ ভূয়সী সম্মান ও মর্যাদা অর্জন করেছেন।

আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশের কল্যাণে যা যা প্রয়োজন সবকিছুই করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশে আমরা প্রযুক্তি নির্ভর পুলিশ সেবা বিস্তৃতকরণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদাত্ত আহ্বানে সাড়া দিয়ে পুলিশ সদস্যগণ ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে ‘থ্রি-নট-থ্রি’ রাইফেল হাতে আধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।

আরও পড়ুন : সিলিন্ডার প্রতি দাম কমল ৬৫ টাকা

পাক হানাদার বাহিনী সারদা পুলিশ একাডেমিতে নিরস্ত্র পুলিশ সদস্যদের নির্বিচারে হত্যা করে। যে সকল পুলিশ সদস্য মুক্তিকামী মানুষের সাথে কাঁধে-কাঁধ মিলিয়ে দেশকে শত্রুমুক্ত করতে অকাতরে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী তাদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

তিনি আরও বলেন, ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট কালরাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পূর্বে ঘাতকদের দোতলায় উঠতে বাধাদানকারী পুলিশ কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমানকে প্রাণ বিসর্জন দিতে হয়েছিল।

শুধু তাই নয়, বাঙালি জাতির সেই দুর্বিসহ রাতে মিন্টু রোডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সেজো বোনের বাড়িতে ঘাতকেরা নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালানোর পর, রমনা থানার পুলিশ সদস্যগণ সেই বাড়িতে আহতদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করায় অনেকেরই প্রাণ রক্ষা হয়েছিল। পুলিশ বাহিনীর সেই গর্বিত সদস্যগণের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

আরও পড়ুন : গ্রামীণফোনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি জনবান্ধব, আধুনিক, পেশাদার ও চৌকস পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন।

তিনি শূন্য হাতে একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার নিয়েও পুলিশের বেতন ২৫ টাকা করে বৃদ্ধি করেছিলেন। পরিপূর্ণভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত ৮২টি থানা পুনপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং বিভিন্ন স্থাপনা পুননির্মাণ করেছিলেন।

১৯৭৪ সালে প্রথম নারী পুলিশ নিয়োগ দিয়েছিলেন তিনি। জাতির পিতাকে হত্যার পর স্বৈরশাসকেরা পুলিশ বাহিনীর উন্নয়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।’

আরও পড়ুন : বিদায়ী বছরে সড়কে ঝড়ল ৯৯৫১ প্রাণ

১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে, আওয়ামী লীগ সরকার এই বাহিনীর আধুনিকায়নে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে- একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরাই প্রথম একজন নারী পুলিশ অফিসারকে জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলাম। সে সময় আমরা পুলিশের বাজেট বৃদ্ধি করি, ঝুঁকি ভাতা চালু করি, দ্বিগুণ রেশন প্রদান করি এবং প্রয়োজনীয় যানবাহন সংগ্রহ করি।

তিনি আরও বলেন, আমরা ৫ কোটি টাকা সিড মানি দিয়ে পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করি। নতুন নতুন থানা, তদন্তকেন্দ্র, হাইওয়ে ফাঁড়ি, পুলিশ ক্যাম্প এবং ফাঁড়ি স্থাপন করি এবং প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করি।

২০০০ সালে পুলিশ স্টাফ কলেজ প্রতিষ্ঠা করে এর কার্যক্রম শুরু করি। কমিউনিটি পুলিশ গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করি।’

সংবাদ সংস্থা বাসস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ‘পুলিশ সপ্তাহ’ উপলক্ষে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

সান নিউজ/এইচএন

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক: টানা একমাস দাবদ...

মিল্টন সমাদ্দার রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক: মৃত্যুর জাল সনদ তৈরির অভিযোগে প্রতারণা ও জ...

আমিরাতে প্রবল বৃষ্টিপাত, সতর্কতা জারি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রবল বৃষ্টিপা...

লিওনার্দো দা ভিঞ্চি’র প্রয়াণ

সান নিউজ ডেস্ক: আজকের ঘটনা কাল অতীত। প্রত্যেকটি অতীত সময়ের স...

ভরিতে ১৮৭৮ টাকা কমলো স্বর্ণের দাম 

নিজস্ব প্রতিবেদক: টানা অষ্টমবারের...

পানিতে ডুবে প্রাণ গেল ভাই-বোনের

জেলা প্রতিনিধি : মুন্সীগঞ্জের সদরে পুকুরের পানিতে ডুবে দুই ভ...

তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার আভাস

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগের ওপর দিয়ে যে তাপপ্র...

বৃষ্টিতে বন্ধ খেলা

স্পোর্টস ডেস্ক : বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার প্রথম টি-টোয়...

রাজধানীতে বাসের ধাক্কায় নিহত ১

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর বকশিবাজারে বাসের ধাক্কায় আনোয়ার...

বাস-ট্রাক সংঘর্ষে আহত ৮

জেলা প্রতিনিধি : রাজবাড়ীর পাংশায় বাস ও ট্রাকের সংঘর্ষে ৮ যাত...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা