ছবি : সংগৃহিত
রাজনীতি
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

ফের রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়াচ্ছে সিদ্দিকী পরিবার

সান নিউজ ডেস্ক : আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে টাঙ্গাইলের রাজনীতিতে ফের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে সিদ্দিক পরিবার। বিশেষ করে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দকী বীর উত্তম, লতিফ সিদ্দিকী ও মুরাদ সিদ্দকীকে নিয়ে ব্যাপক গুঞ্জন চলছে।

আরও পড়ুন : সড়ক ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন দৃশ্যমান

২০২২ সালের ২৩ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর সাক্ষাৎ করার পর রাজনৈতিক মহলে আরও বেশি আলোচনা শুরু হয়েছে।

এদিকে, চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কাদেরিয়া বাহিনীর উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর নিকট অস্ত্র সমর্পণ দিবস উদযাপন করা হয়।

আয়োজিত অনুষ্ঠানে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর আমন্ত্রণে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক এবং সংসদ সদস্য মৃনাল কান্তি দাস উপস্থিত ছিলেন।

আওয়ামী লীগ অথবা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে জোটবদ্ধভাবে আগামী নির্বাচনে কাদের সিদ্দিকী যাচ্ছেন বলে এই অনুষ্ঠানের পর থেকেই এটি সর্বত্র আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়েছে।

আরও পড়ুন : রাষ্ট্রপতি হতে আগ্রহী নই

অস্ত্র সমর্পণ অনুষ্ঠানে কাদের সিদ্দিকীর বড় ভাই মন্ত্রীসভা ও আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত লতিফ সিদ্দিকী ও ছোট ভাই আজাদ সিদ্দিকী উপস্থিত থাকলেও অনুপস্থিত ছিলেন আরেক ভাই মুরাদ সিদ্দিকী।

টাঙ্গাইল জেলার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের ধারণা, আওয়ামী লীগের সঙ্গে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সমঝোতা হবে। তবে লতিফ সিদ্দিকী আওয়ামী লীগের ফিরবেন নাকি কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ থেকে নির্বাচনে অংশ নিবেন তা এখনো পরিস্কারভাবে জানা যায়নি।

এদিকে, মুরাদ সিদ্দিকী আওয়ামী লীগে যোগদান ও জেলা কমিটিতে পদপ্রাপ্তির বিষয় নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। তাকে জেলা কমিটিতে সুযোগ দিতে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছেন বলে জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন।

অপরদিকে, জেলার কয়েকজন সংসদ সদস্য এবং জেলা পর্যায়ের বড় একটি অংশ মুরাদ সিদ্দিকীকে দলে নেওয়ার ঘোর বিরোধীতায় রয়েছেন বলেও জানা যায়।

আরও পড়ুন : বিতর্কে যেতে চাই না

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর ছোট ভাই মুরাদ সিদ্দিকী।

টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের পুর্ণাঙ্গ কমিটি আগামী দুই একদিনের মধ্যেই চূড়ান্ত করা হবে। এ অবস্থায় মুরাদ সিদ্দিকী জেলায় পদ পাচ্ছেন, নাকি এবারও দলে ঢুকতে ব্যর্থ হবেন-এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে।

আমি আওয়ামী লীগের আদর্শের বাইরের কেউ নই জানিয়ে মুরাদ সিদ্দিকী বলেন, সবসময় সব অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করেছি। আওয়ামী লীগের সম্মেলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহন করছি। দল যদি আমাকে কোনো দায়িত্ব দেয় তা পালন করার জন্য প্রস্তুত আছি।

আরও পড়ুন : বিএনপির কোনো মানবতা বোধ নেই

তিনি আরও বলেন, এ জেলার কৃতি সন্তান দলের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, দলের জেলা শাখার সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুক, সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলামের নেতৃত্বে আমি কাজ করতে চাই।

টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে জেলার নেতাদের বলা হয়েছে মুরাদ সিদ্দিকীকে জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে রাখার জন্য। কিন্তু জেলার বড় একটি অংশ এবং কয়েকজন সংসদ সদস্য চান না মুরাদ সিদ্দিকী আওয়ামী লীগে পদ লাভ করুক।

মুরাদ সিদ্দিকীর পদ লাভ ঠেকাতে তারা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে চেষ্টা চালাচ্ছেন বলেও জানান নেতৃবৃন্দ।

আরও পড়ুন : মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনেছি

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার খোকা বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমাদের কথা চলছে। তবে মুরাদ সিদ্দিকী আমাদের দলের কেউ না।’

জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা ও কয়েকজন সংসদ সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ ভালো অবস্থায় রয়েছে। মুরাদ সিদ্দিকীকে দলীয় পদ দেওয়া হলে আবার একটি নতুন বলয় সৃষ্টি হতে পারে। তাই তারা এই মুহূর্তে মুরাদ সিদ্দিকী দলে আসুক তা চান না।

তিনি দলে এলে টাঙ্গাইল সদর অথবা কালিহাতী আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন। এ ক্ষেত্রে তার যোগদান ওই আসন দুটির বর্তমান সংসদ সদস্যদের জন্য অস্বস্তির কারণ হতে পারে বলেও জানান তারা।

টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা জোয়াহেরুল ইসলাম (ভিপি জোয়াহের) এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘মুরাদ সিদ্দিকী দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগে যোগদানের চেষ্টা করছেন, এটা সত্য।

আরও পড়ুন : সুষ্ঠু উপনির্বাচনে গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে

তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আযম আলোচনা সাপেক্ষে তাকে নেওয়া যেতে পারে বলে কিছুটা সন্মতি প্রকাশ করেছেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বা পরশু আমরা বসব।

দলের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুক সাহেব আছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম আওয়ামী লীগ ছেড়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নামে নতুন দল গঠন করেন। ছোটভাই মুরাদ সিদ্দিকী তখন কাদের সিদ্দিকীর দলে যোগ দেন।

আরও পড়ুন : দেশে এসে মামলা মোকাবিলা করুন

২০০১ ও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী হিসেবে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন মুরাদ সিদ্দিকী। এরপর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের রাজনীতি থেকে নিস্ক্রিয় হয়ে যান তিনি।

২০১৪ সালে এবং ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও টাঙ্গাইল-৫ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন মুরাদ সিদ্দিকী। তবে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী হিসেবে নয়, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে।

২০০৯ সাল থেকে মুরাদ সিদ্দিকী আওয়ামী লীগে যোগদানের চেষ্টা করছেন। ২০১৫ সালে মুরাদ সিদ্দিকীর অনুসারী টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র জামিলুর রহমান মিরনসহ অনেকেই আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।

তারা পরবর্তীতে জেলা আওয়ামী লীগেও বিভিন্ন পদপদবিও লাভ করেন। কিন্তু মুরাদ সিদ্দিকী যোগদান করতে ব্যর্থ হন। দলে ঢুকতে না পারলেও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচি এবং দলীয় কার্যালয়ে মুরাদ সিদ্দিকী যাতায়াত শুরু করেন।

আরও পড়ুন : বিএনপির দম ফুড়িয়ে গেছে

২০২২ সালের ৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে মুরাদ সিদ্দিকী বড় মিছিল নিয়ে অংশ নেন। ওইদিন সম্মেলনে ফজলুর রহমান খান ফারুককে সভাপতি এবং সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা জোয়াহেরুল ইসলামকে (ভিপি জোয়াহের) সাধারণ সম্পাদক করা হয়। তবে এখনও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়নি।

২০১৪ সালে হঠাৎ করেই ইসলাম ধর্ম নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে ভয়াবহ বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন লতিফ সিদ্দিকী । দলের সভাপতি শেখ হাসিনার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়কে নিয়েও কটাক্ষ করেন তিনি।

এসময় তিনি টিভি টকশোর আলোচকদের ‘টকমারানি’ বলে বিদ্রূপ করে পড়েন মহা সমালোচনায়। ওই ঘটনার পর মুহূর্তেই চলে যায় তার মন্ত্রীত্ব। সংসদ সদস্য পদ হারান। দল থেকেও ছিটকে পড়েন।

সান নিউজ/এইচএন

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ভূঞাপুরে বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায় 

খায়রুল খন্দকার, টাঙ্গাইল: প্রচণ্ড তাপদাহে জনজীবন অতিষ্ট। নেই...

লক্ষ্মীপুরে চলছে ৫ ইউনিয়নে ভোট

সোলাইমান ইসলাম নিশান, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি...

রাতের আঁধারে ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর):

মুন্সীগঞ্জে সর্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্বোধন

মো. নাজির হোসেন, মুন্সিগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় ভূমি অফি...

শহীদ শেখ জামাল’র জন্ম

সান নিউজ ডেস্ক: আজকের ঘটনা কাল অত...

হিটস্ট্রোকে একদিনেই ৬ জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক: তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে হিট স্ট্রোকে আক্রা...

আইনি সেবায় মানবিকতাকেও স্থান দেয়া উচিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: আইনি সেবা প্রদানকালে পুঁথিগত আইন প্রয়োগের...

ভূঞাপুরে বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায় 

খায়রুল খন্দকার, টাঙ্গাইল: প্রচণ্ড তাপদাহে জনজীবন অতিষ্ট। নেই...

প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরছেন কাল

নিজস্ব প্রতিবেদক: থাইল্যান্ড সফর শেষে আগামীকাল ব্যাংকক থেকে...

ডিপিএস এসটিএস স্কুলে গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠান

নিজস্ব প্রতিবেদক: ডিপিএস এসটিএস স্কুল ঢাকার ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা