উত্তরে ধেয়ে  আসছে শীত, জমে উঠছে লেপ-তোষকের দোকান। (ছবি : সংগৃহিত)
সারাদেশ
উত্তরে ধেয়ে আসছে শীত

জমে উঠছে লেপ-তোষকের দোকান

কামরুজ্জামান স্বাধীন, উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : আর মাত্র ৩দিন পরেই পৌষ মাসের শুরু, শেষ হচ্ছে নবান্নের উৎসব। মৌসুম ভেদেই বরাবরের মতই উত্তরে ধেয়ে আসছে শীত।

আরও পড়ুন : নার্সিং ইনস্টিটিউট ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু

এরই মধ্যে হিমালয়ের কোল ঘেষে উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের উলিপুরে ফুটপাতসহ লেপ তোষকের দোকানে শীত নিবারণের জন্য বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ভীড় করতে শুরু করেছে। ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন লেপ-তোষক, জাজিম তৈরির কারিগররা।

ঋতু বৈচিত্রের এই অপরূপ সময়ে রাতে কুয়াশা আর দিনে হাল্কা গরম থাকলেও শীতের প্রকোপ কিছুটা বাড়তে শুরু করেছে এ অঞ্চলে। ফলে শীত নিবারণে এ অঞ্চলের মানুষের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। জেলার এ উপজেলাটি ১৩ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এখানে বিভিন্ন বয়সের মানুষের সংখ্যা প্রায় ৫ লাখের অধিক। এই উপজেলাটিকে চাদরের মতই আবৃত করে ঘিরে রেখেছে তিস্তা নদী ও ব্রহ্মপুত্র নদ।

আরও পড়ুন : গলায় ফাঁস দিয়ে রোগীর আত্মহত্যা

নদ-নদী বেষ্টিত হওয়ায় শীতকালে এ অঞ্চলের তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের প্রান্তিক পর্যায়ে তুলনামূলকভাবে শীতের প্রকোপ বেশি থাকে। দীর্ঘ দিনের ও প্রতি বছরের অভিজ্ঞতা থেকে আগাম প্রস্তুতি হিসাবে শীত নিবারণের জন্য লেপ-তোষক, জাজিম বানিয়ে রাখছেন এ অঞ্চলের মানুষ।

পুরাতন কাপড়ের দোকানিরাও কেউ কেউ পুরাতন কাপড় তাক তাক করে সাজিয়ে বসেছেন আবার কেউ কেউ বসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

সোমবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় উলিপুর পৌর শহরের লেপ-তোষক, জাজিম তৈরির দোকান ও পুরাতন কাপড়ের দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, অনেকটা ব্যস্ত সময় পাড় করছেন শ্রমিক মালিক ও কারিগররা।

আরও পড়ুন : জুনের মধ্যে আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন চালু হবে

উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের উমানন্দ গ্রামের তোজাম্মেল এসেছেন লেপের অর্ডার দিতে, তিনি জানান, সামনে বড় ধরনের শীত আসতে পারে, তাই পূর্ব প্রস্তুতি নিচ্ছি।

নারায়নগঞ্জ থেকে আসা রায়হান এসেছেন লেপের অর্ডার করতে, তিনি জানালেন, যদিও নারায়ণগঞ্জ কাপড়ের জন্য বিখ্যাত তবুও সেখানে তুলা ও কাপড়ের দাম অনেক বেশি তাই জন্মস্থান উলিপুর থেকে লেপ বানিয়ে নিয়ে যাব।

এই উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও পকেট মার্কেটগুলোতে ছোট ছোট লেপ তোষকের দোকানসহ ফুটপাতে বসেছে পুরাতন কাপড়ের দোকান। সাধ্যমত সব শ্রেণির মানুষই চেষ্টা করেন একটু বড় শহরে গিয়ে কম দামে তুলা কিনে লেপ তোষক বানিয়ে নেবার ও কম দামের কাপড় কিনে শীত নিবারণ করার।

আরও পড়ুন : বান্দরবানে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা বাড়লো

লেপ-তোষক, জাজিম ও তুলা ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বাবু ও শাহজাহান জানান, মেডিকেল তুলা ১২০, কালার তুলা ৪০, ব্লেজার তুলা ৬০, ব্লেজার এক নং ১০০, ফম তুলা ৪০০, হাতির শুর ২৫০, এস তুলা ১৬০, কার্পাস তুলা ৩২০, এ ছাড়াও স্থানীয় শিমুল তুলা ৪০০ কেজি দরে বিক্রি করছি।

প্রতিটি লেপ তোষক বানাতে মজুরি হিসেবে ২'শ থেকে ৩'শ টাকা নেয়া হচ্ছে। করোনা কালীন সময়ের ক্ষতি এখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি এরই মধ্যে সব কিছুর দাম বেশি হওয়ায় তুলনামূলকভাবে তেমনটা অর্ডার পাচ্ছি না।

তারা আরও জানান, বর্তমান বাজারে গার্মেন্টস তুলা দিয়ে তোষক ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২’শ ৫০ টাকা, জাজিম ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫’শ টাকা এবং কার্পাশ তুলা দিয়ে লেপ ১ হাজার ৬’শ থেকে ২ হাজার ১’শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হচ্ছে তাছাড়া কার্পাশ তুলার দাম বেশি হওয়ায় অনেকে গার্মেন্টসের তুলা দিয়ে লেপ তৈরি করে থাকেন। বাজারে কম্বলের তুলনায় লেপের দাম কম থাকায় চাহিদাও বেশি।

আরও পড়ুন : ফ্লাইট বিলম্ব হওয়ায় হাতাহাতি, আটক ২

এ সময় অনেক কারিগর ও ব্যবসায়ী ঠান্ডা আসার আগেই পর্যাপ্ত পরিমাণে লেপ-তোষক তৈরি করে মজুদ রাখেন। এ সময়ে গড়ে প্রতিদিন ৭টি থেকে ৮টি লেপ তোষকের অর্ডার পাচ্ছেন। লেপ তোষকের কারিগর তাহের, মোকসেদ, আলতাফ, দিপু জানালেন, মালিকপক্ষের ঘরে কাজ তরে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩শত থেকে ৪শত টাকা পাই এই দিয়েই সংসার চলে।

তারা আরও জানালেন, বর্তমানে জিনিসপত্রের অনেক দাম তাই অর্ডার পেতে মালিকপক্ষ একটু হিমসিম খাচ্ছেন সেকারনে আমাদের দিন রোজগার একটু কম।

ফুটপাতের শীতের কাপড় ব্যবসায়ী জহুরুল হক জানালেন, জায়গা ভাড়া দিতে হয় না রোদ বৃষ্টিতেই ফুটপাতে প্রায় দুই বছর থেকে এ ব্যবসায় জড়িয়েছি, এই মৌসুমে যে বেঁচাকেনাটা করি তাই দিয়ে বছরের অর্ধেক সময় চলে যায়। পৌর শহরে ফাটা কোম্পানি (পুরাতন) নামে পরিচিত দোকানও রয়েছে প্রায় প্রায় ৭টি।

ফাটা কোম্পানি (পুরাতন) কাপড় ব্যবসায়ী হারুন জানালেন, শীত ধেয়ে আসলে আমাদের ব্যবসা জমে। প্রায় ৪০ বছর থেকে ফাটা কোম্পানী (পুরাতন) কাপড় ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত মোকসেদ আলী জানান, এ বছরই এই ব্যবসটা করব, তাই যে দামেই হোক এবার জমা করা লট বিক্রি করে দিব।

আরও পড়ুন : জুম চাষে নারীদের ভূমিকা অনেক

এদিকে মানুষের জন্য কাজ করা সামাজিক সংগঠনগুলোও প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং ডোনারদের বিভিন্ন সময় এই অঞ্চলের শীত ও মানুষের চাহিদা সম্পর্কে সংবাদ পৌছে দিচ্ছে। প্রতি বছর এই সামাজিক সংগঠনগুলোর উপর তাকিয়ে থাকে নিম্নবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা।

জেলার একমাত্র আবহাওয়া অধিদফতর রাজারহাট উপজেলায় অবস্থিত। এখানকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সবুর হোসেন জানান, ডিসেম্বরের শেষের দিকে মৃদু অথবা মাঝারি ধরনের শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সান নিউজ/এইচএন

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

মুন্সীগঞ্জে কালবৈশাখীর আঘাত

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: এ বছ...

গাঁজাসহ মাদক কারবারি গ্রেফতার

আবু রাসেল সুমন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজ...

ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে ভোলায় কর্মসূচি 

ভোলা প্রতিনিধি: স্বাধীন ফিলিস্তিন...

ওসিসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: মুন্...

ইউরোপ সফরে চীনা প্রেসিডেন্ট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ৫ বছর পর ইউরোপ...

ভূঞাপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির সাথে ইউএনও'র মতবিনিময়

খায়রুল খন্দকার টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে সাংবাদিকদের সা...

ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক : আবারও দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয...

ভালুকায় ভারতীয় চিনিসহ গ্রেফতার ২

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের ভালুকায় তীর কোম্পানি...

বান্দরবানে কেএনএফ সন্ত্রাসী নিহত

জেলা প্রতিনিধি : বান্দরবানেরে কেওক্রাডং পাহাড়ে যৌথ বাহিনীর অ...

ঢাকায় আসছেন ডোনাল্ড লু

নিজস্ব প্রতিবেদক : ফের বাংলাদেশে আসছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা