নিজস্ব প্রতিনিধি, মৌলবীবাজার: একটি সেতু হবে তার জন্য বাংলাদেশের সমান বয়স অপেক্ষা করছে চার গ্রামের দুই হাজার মানুষ। দীর্ঘ অর্ধ শতাব্দী ধরে স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার এসব মানুষ।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডি ইউনিয়নের গোগালী ছড়া নদীর উপর দিয়ে নির্মিত ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য এই সাঁকো দিয়ে পার হতে গিয়ে অনেক রোগীর স্বজনদের পোহাতে হয় নানা ভোগান্তি। শিক্ষার্থীদের নানা রকম বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। নানা ঝুঁকি নিয়ে এলাকাবাসী পারাপার হচ্ছেন নিয়মিত।
স্বাধীনতার পর থেকে আবুতালিপুর, রামপাশা, মিঠুপুর ও বেগমানপুর গ্রামের হাজারো মানুষ একটি সেতুর জন্য হাহাকার করলেও কেউ কোনো কর্ণপাত করছেন না রাজনীতিবিদ ও প্রশাসন।
জানা যায়, উপজেলা জয়চন্ডী ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া গোগালীছড়া নদীর উপর নির্মিত বাঁশের ওই সাঁকোটি প্রতি বছর খরা ও পানির স্রোতে ভেঙে পড়লে এলাকাবাসী চাঁদা তুলে পুনরায় সংস্কার করে যাতায়াতের ব্যবস্থা করে তোলেন। সংশ্লিষ্ট অনেকেই সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অনেকবার। তবে কবে বাস্তবায়ন হবে তা কেউ বলে না।
স্থানীয় দিলদারপুর উচ্চ বিদ্যালয়, রহমত আলী ও বন্দে আলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ওই সাঁকো ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে। টানা কয়েক দিন বৃষ্টি হলে নদীতে পানি বেড়ে যায়। এতে কোমলমতি শিশু, বৃদ্ধ ও রোগী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে নদী পার হতে হয়।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক রুপিয়া বেগম বলেন, এখানে একটি সেতু খুবই জরুরি। সাধারণ লোকজন ছাড়াও অনেক শিক্ষার্থীরা এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন। যার ফলে প্রতিদিন সাঁকো পারাপারের ভয়ে বিশেষ করে ছাত্রীরা স্কুলে আসতে পারে না।
স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য বিমল দাস বলেন, একটি সেতু নির্মাণের জন্য এলাকার লোকজনকে নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের দ্বারে দ্বারে গিয়েছি। অনেক প্রতিশ্রুতি পেয়েছি। কিন্তু আজও সেতু পাইনি।
জয়চন্ডী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন আহমদ কমরু জানান, গোগালিছড়া নদীতে একটি পাকা সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে একাধিকবার জানিয়েছি। কোনো আশ্বাস পাচ্ছি না।
কুলাউড়া উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা খোয়াজুর রহমান জানান, সরেজমিন পরিদর্শন করে সেতু নির্মাণের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠাবো।
সান নিউজ/এফএআর