বিশ্ববাজারে হুহু করে বাড়ছে গমের দাম (ছবি: সংগৃহীত)
মতামত
আবদুল লতিফ মন্ডল 

গমের উৎপাদন বাড়ানোর বিকল্প নেই

সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের ফলে বিশ্ববাজারে হুহু করে বাড়ছে গমের দাম। গেল ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দাম ছুঁয়েছে খাদ্যশস্যটির।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কমোডিটি এক্সচেঞ্জ মার্কেট শিকাগো বোর্ড ট্রেডের (সিবিওটি) তথ্যানুযায়ী, সেখানে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি গম বিক্রি হয় প্রতি টন ৩৪০ মার্কিন ডলারে। চার দিন পর গত ৪ মার্চ তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৯৫ ডলারে। গম আমদানিকারক দেশগুলোর তালিকায় প্রথম দিকে থাকা বাংলাদেশের জন্য গমের এ মূল্যবৃদ্ধি যেন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’। মিডিয়ার খবরে জানা যায়, দেশের বাজারে এখন রাশিয়া ও ইউক্রেনের গম না থাকায় কানাডার গমের দাম প্রতি মণে ১০০ টাকা বেড়ে ৭ মার্চ এক হাজার ৮২০ টাকায় উঠেছে। আর ভারতের গমের দাম প্রতি মণে ১৬০ টাকা বেড়ে এক হাজার ২৬০ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

৬ মার্চ রাজধানীতে খোলা আটা প্রতি কেজি ৩৪ থেকে ৩৬ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে, এ দর এক বছর আগের তুলনায় ১৩ শতাংশ বেশি। আর প্যাকেটজাত আটা বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে। এর দর এক বছরে বেড়েছে ২৫ শতাংশ। আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দামে ঊর্ধ্বগতি একদিকে যেমন দেশের খাদ্য বাজেট ও বৈদেশিক মুদ্রার ওপর বিরাট চাপ সৃষ্টি করবে, তেমনি সব শ্রেণির মানুষের খাদ্য হিসাবে গমের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের খাদ্য বাজেটে ব্যয় বাড়বে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় দেশে গমের উৎপাদন বৃদ্ধি।

আসলে গত অর্থবছরের শেষ দিকেই বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি শুরু হয়। ২০২১ সালের ৩ জুন প্রকাশিত জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) এক রিপোর্টে বলা হয়, ওই বছরের মে মাসে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক গড় মূল্যসূচক দাঁড়ায় ১২৭ দশমিক ১ পয়েন্টে, যা গত এক দশকের বেশি সময়ে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সর্বোচ্চ সূচক।

এদিকে মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে গত ১০ জুন একটি দৈনিকে প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়, করোনা মহামারির পর থেকে খাদ্যশস্যের চাহিদা আকাশচুম্বী। এরপর গত বছরের শেষ দিকে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় পরিবহণ খরচ ও খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পায়। সদ্য সমাপ্ত ফেব্রুয়ারিতে এফএও খাদ্যপণ্যের মূল্যসূচক গড়ে ১৪০ দশমিক ৭ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। জানুয়ারির তুলনায় মূল্যসূচক বেড়েছে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ, আর গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪ দশমিক ১ শতাংশ।

যুগান্তরের উপর্যুক্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিশ্বের উৎপাদিত গমের ১৪ শতাংশই উৎপাদন করে ইউক্রেন ও রাশিয়া। দেশ দুটি বিশ্ববাজারের প্রায় ২৯ শতাংশ গম রপ্তানি করে। এ ক্ষেত্রে প্রথম স্থানে রয়েছে রাশিয়া আর পঞ্চম স্থানে ইউক্রেন। তারা মিসর, তুরস্ক, বাংলাদেশেও গম রপ্তানি করার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা করে। ইউক্রেনের বন্দরে হামলার কারণে সেখানকার প্রতিটি বন্দরে জাহাজগুলো আটকে আছে।

গমের চাহিদা আগের মতো থাকলেও বা কিছুটা বাড়লেও সরবরাহ বন্ধের কারণে গমের দাম বাড়ছে। ২০০৮ সালের পর গমের দাম এখন সর্বোচ্চ। এদিকে আমেরিকান বেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান ম্যাকসি বলেছেন, সামনে আরও খারাপ সময় আসতে পারে। এটা নির্ভর করবে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ কতদিন চলে তার ওপর। গমচাষিরা বসন্তে গম, ভুট্টা ও অন্যান্য খাদ্যশস্য রোপণ করে থাকেন। কিন্তু যুদ্ধ চলতে থাকলে এসব কিছু রোপণ সম্ভব নাও হতে পারে। তাই চাষিরা কোনো ফসল না করেও একটি বছর পার করে দিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে সংকট অনেক বেশি তীব্র হবে।

আমাদের খাদ্যশস্যের তালিকায় চালের পর দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা গমের চাহিদা ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হাউজহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেন্ডিউচার সার্ভে (হায়েস) ২০১৬ অনুযায়ী, ২০১৬ সালে জাতীয় পর্যায়ে মাথাপিছু দৈনিক খাদ্য হিসাবে গমের ব্যবহার ছিল ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ। গ্রাম ও শহরাঞ্চলে এ হার ছিল যথাক্রমে ১৭ দশমিক ৪ ও ২৬ দশমিক ২ শতাংশ।

২০০৫ সালের হায়েসে জাতীয় পর্যায়ে মাথাপিছু দৈনিক খাদ্য হিসাবে গমের ব্যবহার ছিল ১২ দশমিক ১ শতাংশ। গ্রাম ও শহরাঞ্চলে এ হার ছিল যথাক্রমে ৮ এবং ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ। এ থেকে বোঝা যায় গমের ব্যবহার কীভাবে বাড়ছে। হায়েস ২০১৬-এর পর গত পাঁচ বছরে খাদ্য হিসাবে গমের ব্যবহার যে আরও বেড়েছে তা বলাই বাহুল্য। এজন্য চিহ্নিত কারণগুলো হলো- এক. জনসংখ্যা বৃদ্ধি : স্বাধীনতার সময়ের সাড়ে সাত কোটি জনসংখ্যা এখন দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৭ কোটিতে। দুই. খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন ও স্বাস্থ্যসচেতনতা : সময়, আয় ও জীবনযাত্রার মানের পরিবর্তনের দোলা খাদ্যাভ্যাসেও লেগেছে।

উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, নিুবিত্ত-সব শ্রেণির ভোক্তার খাদ্য তালিকায় গম তথা আটা-ময়দা গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে নিয়েছে। এ ক্ষেত্রে আয়ের পাশাপাশি ভূমিকা রাখছে স্বাস্থ্য সচেতনতা। তিন. গমের আটা-ময়দা থেকে তৈরি বিস্কুট, কেক, ইত্যাদি শুধু দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাচ্ছে না, বরং রপ্তানি হচ্ছে ভারত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে। চার. শুধু মাঝারি ও সরু চালের দামের তুলনায় নয়, মোটা চালের তুলনায়ও গমের দাম কম।

গমের চাহিদা ক্রমেই বেড়ে চললেও এর উৎপাদন নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকের তুলনায় ক্রমে হ্রাস পেতে থাকে। সরকারি তথ্য মোতাবেক, ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরে দেশে গমের উৎপাদন হয়েছিল ১৯ লাখ আট হাজার টন। এটি এ পর্যন্ত বাংলাদেশে গমের সর্বোচ্চ উৎপাদন। এর পর থেকে গমের উৎপাদন কমতে থাকে এবং ২০০৬-০৭ অর্থবছরে উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়ায় সাত লাখ ২৫ টনে (বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০০৯)। এরপর অবশ্য পণ্যটির উৎপাদন কিছুটা বাড়তে থাকে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে গমের উৎপাদন দাঁড়ায় ১২ লাখ ৪৬ হাজার টনে। এর আগের দুই অর্থবছরে অর্থাৎ ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ১০ লাখ ৯৯ হাজার এবং ১১ লাখ ৪৮ হাজার টন (বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২১)।

গমের উৎপাদন কমে যাওয়ার জন্য যেসব কারণকে দায়ী করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে-এক. গম উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন দীর্ঘ শীতকাল। একসময় তা ছিল বাংলাদেশে, এখন নেই। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনকে বাংলাদেশে শীতের স্থায়িত্ব কমার জন্য দায়ী করেছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। দুই. গমের জমি ভুট্টা, আলু এবং স্বল্পমেয়াদি সবজি চাষে চলে যাওয়ায় গম চাষের জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। তা ছাড়া শ্রমিক সংকট, ইঁদুরের উপদ্রব, মাড়াইয়ের সমস্যা এবং ভালো বীজের অভাবের কারণে গম চাষে চাষিরা উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন। তিন. গমের ব্লাস্ট রোগ বাংলাদেশে গম চাষের ক্ষেত্রে একটি অন্যতম প্রধান অন্তরায় হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। গমের উৎপাদনশীলতা হ্রাসে এ রোগটির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

দেশে বছরে গমের চাহিদা কম-বেশি ৭০ লাখ টন। আর দেশে উৎপাদিত গমের পরিমাণ ১০ থেকে ১২ লাখ টনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। তাই দেশে গমের চাহিদা মেটানোর প্রধান উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে আমদানি। এফএও’র হিসাব মোতাবেক বিশ্বের যে কয়টি দেশে সবচেয়ে দ্রুত হারে গমের আমদানি বাড়ছে, তার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। গত কয়েক বছরে গম আমদানির তথ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, দেশে গমের মোট চাহিদার পাঁচ ভাগের চার ভাগ মেটানো হয়েছে আমদানির মাধ্যমে। ২০১৬-১৭, ২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে আমদানি করা গমের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৫৬ লাখ ৯ হাজার, ৫৭ লাখ ৭৯ হাজার, ৫৫ লাখ ৩৬ হাজার এবং ৬৩ লাখ ৬৬ হাজার টন (বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২১)। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫৩ লাখ ৪২ হাজার ৮০০ টন গম আমদানি হয়েছে বলে অন্য এক সূত্রে জানা যায়। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২১ সূত্রে আরও জানা যায়, ২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ অর্থবছরে গম আমদানিতে ব্যয় হয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৪৯৪, এক হাজার ৪৩৬ এবং এক হাজার ৬৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

আরও পড়ুন: আমদানিতে শুল্ক কমিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়

এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের উপায় হলো গমের উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি। মনে রাখতে হবে, দেশে দানাদার খাদ্যশস্য হিসাবে ধানের পরই গমের স্থান। আমাদের প্রথম লক্ষ্য হবে ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরের উৎপাদন অবস্থায় ফিরে গিয়ে ২০ লাখ টন গম উৎপাদন করা। এরপর ধীরে ধীরে উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি করা। এজন্য উষ্ণ আবহাওয়া-সহনশীল জাতের গম উদ্ভাবনের ওপর জোর দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, গম উৎপাদন অঞ্চল চিহ্নিত করে নিবিড় গম চাষ অঞ্চল গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এজন্য উপযুক্ত বলে বিবেচিত হতে পারে। উত্তরাঞ্চলের শীত দেশের অন্যসব অঞ্চল থেকে দীর্ঘতর হয় এবং শীতের প্রকোপও বেশি। সুতরাং উত্তরাঞ্চল অধিকতর উপযোগী বলে বিবেচিত হতে পারে। নিবিড় গম চাষ অঞ্চলের চাষিদের হ্রাসকৃত মূল্যে উন্নতমানের গমবীজ ও সার সরবরাহসহ সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। উল্লেখ্য, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় শস্য উপখাতের জন্য যেসব চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে ঋণ প্রাপ্তি অন্যতম। তৃতীয়ত, ব্লাস্ট ও অন্যান্য রোগে গমের উৎপাদন যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। বাড়াতে হবে গমের উৎপাদনশীলতা।

আবদুল লতিফ মন্ডল : সাবেক খাদ্য সচিব, কলাম লেখক

সাননিউজ/এমএসএ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

৬ অঞ্চলে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের ৬ অঞ্চলের ওপর দিয়ে ৬০ কি.মি বেগে ঝড়ে...

আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে ব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক : আমাদের কাছে সব প্রার্থী সমান। দল বা প্রার...

টিভিতে আজকের খেলা

স্পোর্টস ডেস্ক: প্রতিদিনের মতো আজ শুক্রবার (৩ মে) বেশ কিছু খ...

ভারতকে টপকে শীর্ষে অস্ট্রেলিয়া

স্পোর্টস ডেস্ক : ভারতকে সরিয়ে টেস্টে শীর্ষস্থান দখল করেছে অস...

পাহাড় ধসে যান চলাচল বন্ধ

জেলা প্রতিনিধি: রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি-দীঘিনালা সড়কের দুই কিলো...

বায়ুদূষণে ঢাকা আজ ১১তম

বায়ুদূষণের শীর্ষে রয়েছে আজ ভারতের দিল্লি। তবে দূষণমাত্রার দিক থেকে রাজধানী ঢা...

২৫ জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক: তীব্র তাপপ্রবাহে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য স...

পানামা খাল নির্মাণ শুরু

সান নিউজ ডেস্ক: আজকের ঘটনা কাল অত...

টিভিতে আজকের খেলা

স্পোর্টস ডেস্ক: প্রতিদিনের মতো আজ...

শনিবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

সান নিউজ ডেস্ক: প্রতি সপ্তাহের একেক দিন বন্ধ থাকে রাজধানীর ব...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা