সান নিউজ ডেস্ক : বিভিন্ন অপরাধের সাজা হিসেবে খুলনা, বরিশাল ও খাগড়াছড়িতে ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) খুলনায় শ্রী এগ্রো লিমিটেডের কর্মী গোবিন্দ সানা হত্যা মামলায় তিন জন ও বরিশালে তৃতীয় শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় এক জন এবং খাগড়াছড়ির গুইমারায় স্ত্রীর পরিকল্পনায় স্বামীকে হত্যার ঘটনায় স্ত্রী রাবেয়া বেগমসহ পাঁচজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত।
খুলনা : শ্রী এগ্রো লিমিটেডের কর্মী গোবিন্দ সানা হত্যা মামলায় তিন জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খুলনার জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যালের বিচারক মো. সাইফুজ্জামান হিরো এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, বিবেক মন্ডল, সৌগত রায় ও অরুণাভ রায়। তারা তিনজনই পলাতক রয়েছেন।
আদালতের উচ্চমান বেঞ্চ সহকারী মো. ছায়েদুল হক শাহিন জানান, ৩০২/২০১/৩৪ ধারার অপরাধের বিচার শেষে বিচারক ৩০২/৩৪ ধারার অপরাধে আসামিদের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু কার্যকর করার আদেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১৯ নভেম্বর রাত সাড়ে আটটা থেকে ২১ নভেম্বর বেলা দুইটার মধ্যে যেকোনো সময় প্রাইভেট কোম্পানির কর্মী গৌতম গোবিন্দকে হত্যা করা হয়। এরপর তার লাশের গলায় ও কোমরে ইট বেঁধে ঢাকি নদীতে ফেলে দেয়া হয়। এরপর ২২ নভেম্বর সকালে ঢাকি নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় গোবিন্দর লাশ উদ্ধার হয়।
এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই কৃষ্ণপদ সানা বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় তদন্ত শেষে সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক কাজী মোস্তাক আহমেদ ২০১৬ সালের ১৯ জুন আদালতে তিন জনের নামে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৮ সালের ৫ জুলাই আদালতে এই মামলার শুনানির মধ্য দিয়ে চার্জ গঠন ও বিচার শুরু হয়। বিচার চলাকালে আদালত এই মামলায় ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। সব শেষে বৃহস্পতিবার বিচারক রায় ঘোষণা করেন।
বরিশাল : তৃতীয় শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় একমাত্র আসামি কালুকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আসামির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ভুক্তভোগীর পরিবারকে দেড় লাখ টাকা দিতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে বরিশালে জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আবু শামীম আজাদ এ রায় দেন।
২০১৮ সালের ১১ মার্চ বরিশাল নগরীর কাশিপুর গণপাড়া এলাকায় গণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টয়লেট বন্ধ থাকায় পাশে কালুর বাড়িতে যায় তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সীমা আক্তার নামে শিশুটি। একা পেয়ে শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করে বস্তাবন্দি মরদেহ একটি কবরস্থানে লুকিয়ে রাখে কালু। এ ঘটনার দুদিন পর ১৩ মার্চ শিশুটির মা বাদী হয়ে এয়ারপোর্ট থানায় একটি মামলা করেন। সন্দেহভাজন হিসেবে কালুকে আটক করে পুলিশ। পরে আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয় সে। একই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর কালুকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফয়েজুল হক ফয়েজ বলেন, প্রায় তিন বছর পর ধর্ষণের দায়ে ফাঁসি, হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন ও লাশ গুমের দায়ে কালুকে ৭ বছরের সাজা দেন বিচারক। আসামির সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে দেড় লাখ টাকা ভুক্তভোগীর পরিবারকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
খাগড়াছড়ি : খাগড়াছড়ির গুইমারায় স্ত্রীর পরিকল্পনায় স্বামীকে হত্যার ঘটনায় স্ত্রী রাবেয়া বেগমসহ পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। খাগড়াছড়ির জেলা ও দায়রা জজ রেজা মো. আলমগীর হাসানের আদালত এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন, সাইফুল ইসলাম, মো. ফিরোজ, আবুল কালাম ও আবুল আসাদ ওরফে মিঠু। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে আবুল আসাদ ওরফে মিঠু ছাড়া সবাই কারাগারে রয়েছে।
খাগড়াছড়ির পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট বিধান কানুনগো জানান, ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জেলার গুইমারা উপজেলার রবীন্দ্র কার্বারী পাড়ার জঙ্গল থেকে প্রবাসী মমিনুল হকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। স্ত্রী রাবেয়া বেগম পরকীয়ার জেরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ভাড়াটিয়া খুনি দিয়ে স্বামী মমিনুলকে হত্যা করে।
একই বছরের ৯ সেপ্টেম্বর পুলিশ তদন্ত করে চার্জশিট দেয়। রাষ্ট্রপক্ষের ১২ জন সাক্ষী এ মামলায় সাক্ষ্য দেন।
সান নিউজ/কেটি/এস