শিক্ষা

 করোনা কেড়ে নিচ্ছে বিদেশে পড়ার স্বপ্ন, মুখের হাসি

নিজস্ব প্রতিনিধি: অনেক শিক্ষার্থীর বিদেশে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন থাকে। সেই স্বপ্নের টানে প্রতিবছর অসংখ্য বাংলাদেশি শিক্ষার্থী পাড়ি দেন ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।

এখন তাদের সেই স্বপ্নে বাঁধ সেধেছে বৈশ্বিক মাহামারী নভেল করোনাভাইরাস। স্কলারশিপ পেয়েও উচ্চশিক্ষার জন্য যারা বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, তারা এখন হতাশ।

দেশে চলমান করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও বিধিনিষেধ পরিস্থিতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দূতাবাস ভিসা আবেদন বন্ধ রেখেছে। আর নতুন করে ভিসা ইস্যু করছে না দূতাবাসগুলো। ফলে যারা বিদেশে পড়ালেখা করতে চায় চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।

জানা গেছে, প্রতি বছর ইউরোপ, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে হাজার হাজার শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা অর্জনে পাড়ি দিচ্ছেন।

তাদের মধ্যে অনেকে স্কলাশিপ নিয়ে বিনা খরচে পড়ালেখার সুযোগ পাচ্ছেন। পড়ালেখা শেষে কেউ কেউ সেসব দেশে নিজের ক্যারিয়ারও গড়ে তুলছেন।

একজন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন থেকে শুরু করে ভিসা আবেদনে খরচ হয় এক থেকে দুই লাখ টাকা। অনেকে ঋণ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করে থাকেন ফান্ডিংয়ের আশায়। কিন্তু যখন ফান্ডিং নিশ্চিত, তখন শিক্ষার্থীদের মুখের হাসি কেড়ে নেয় ভিসা না পাওয়ার দুশ্চিন্তা।

সূত্র মতে, করোনার কারণে গত বছরও মাস্টার্স ও পিএইচডিতে ফুল ফান্ডিং স্কলারশিপ পেয়েও ভিসা জটিলতায় যেতে পারেননি অনেক শিক্ষার্থী। চলমান লকডাউনের একই পরিস্থিতি এবছরও।

আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সামার, ফল ও স্প্রিং- এই তিন সেমিস্টারে বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন করেন। তাদের একটি বড় অংশ ফুল ফান্ডিং নিয়ে পড়াশোনা করতে যান সেখানে।

এই শিক্ষার্থীদের এখন বড় উদ্বেগ বিষয় ঠিক সময়ে ভিসা পাওয়া-না পাওয়া নিয়ে। তাদের অনেকেই নিজেদের বিশ্ববিদ্যলয়ের পৌঁছার কার্যক্রমের অগ্রগতি হারিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভিসা প্রদানে দূতাবাসের কার্যক্রম সচল রাখার দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

আমেরিকান ভিসা প্রত্যাশী ও চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) থেকে পাস করা শিক্ষার্থী জ্যোতির্ময় সাহা বলেন, করোনার কারণে দুইবার আমার ভর্তি পিছিয়েছি। প্রথমবার ফল ‘২০ থেকে স্প্রিং ‘২১ এ, আর এখন ফল ‘২১ এ। আমার প্রফেসর আমাকে দুইবার ছাড় দিয়েছেন, কিন্তু এবার না যেতে পারলে আমার ফান্ডিং বাতিল হওয়ার শংকা রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ওহাই ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী তানিন যায়েদ বলেন, সঠিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পৌঁছাতে না পারলে তাদের ডিফার করতে হয়। সেক্ষেত্রে এক সেমিস্টারে ভর্তি হতে না পারলে পরবর্তী সেমিস্টারে ভর্তি হওয়ার সুযোগ থাকে। তবে কতবার ডিফার করা যায় সেটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর নির্ভর করে। এছাড়া ফান্ডিংয়ের বিষয়টিও একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নির্ধারণ করে থাকে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে যেভাবে করোনাভাইরাসের সংক্রামণের খবর পাওয়া যাচ্ছে, আমেরিকাতেও একই অবস্থা। বৈশ্বিক এই মহামারির কথা চিন্তা করে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নতুন করে ভাবনা-চিন্তা করছেন। যারা আসতে পারেনি, হয়তো তাদের বিষয়টি বিবেচনা করবেন।‌

আমেরিকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলারশিপ পাওয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, আগামী মে থেকে আমার ক্লাস শুরু। সময়মতো উপস্থিত হতে না পারলে আমার ফান্ডিং চলে যাবে।

অন্যদিকে প্রফেসরেরাও তাড়া দিচ্ছেন আমার অবস্থা জানাতে, যাতে করে আমি না গেলে আমার জায়গায় অন্য কাউকে ফান্ডিং দিতে পারেন। এখন চলমান লকডাউনে ভিসা কার্যক্রম বন্ধ। আমার মতো আরো অনেক শিক্ষার্থীই এমন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।

ভিসা জটিলতায় ২০২০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিতে না পারা কিংবা ডেফারেল করা শিক্ষার্থীর সংখ্যা এই মুহূর্তে শতাধিক। এটা তাদের শেষ সুযোগ। তাদের একজন বলেন, ক্যাম্পাসে ঠিকসময়ে পৌঁছাতে না পারায় আমাকে ডিফার করতে হয়।

পুরো ব্যাচে একমাত্র আমিই ডিফার করতে বাধ্য হয়েছি। আর স্প্রিং সেশনে ডিফার করার অপশন ছিল না বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তাই আমাকে আবার ফল ‘২১-এর অপেক্ষায় থাকতে হয়। একটা বছর অপেক্ষায় থাকার পর আমার সামনে আবার সেই জটিলতা। আমার মতো শতাধিক শিক্ষার্থী ‘২১-এ ডিফার করতে বাধ্য হয়েছে। এ বছরই আমাদের জন্য শেষ সুযোগ। কেননা অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় একাধিকবার ডেফারেলের সুযোগ দেয় না, বা দিলেও ফান্ডিং পাওয়া যায় না।

ভিসা সংকট নিরসনে উচ্চশিক্ষা প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে একসাথে হয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাদের প্রতিনিধি দলকে আশ্বাস দেয়া হয়েছে কিন্তু এখনও এ বিষয়ে কোন সুরাহা হয়নি।

আর আমেরিকান দূতাবাস থেকে জানানো হয়েছে, সরকার থেকে কোন ধরণের অনুমতি না পেলে তারা এ ব্যাপারে কোন সমাধান করতে অপারগ।

সাননিউজ/এএসএম

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ফেনসিডিলসহ ২ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি: মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার বৈ...

কেশবপুরে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত 

আব্দুর রাজ্জাক সরদার, কেশবপুর প্রতিনিধ:

ত্রিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩

মোঃ মনির হোসেন স্টাফ রিপোর্টার :...

জাহাজ উদ্ধারে সরকার অনেক দূর এগিয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ মন্তব্য ক...

আইসিসির এলিট প্যানেলে সৈকত

স্পোর্টস ডেস্ক : বাংলাদেশের প্রথম আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এল...

পানিতে ডুবে প্রাণ গেল শিশুর

নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর সেনবাগে পানিতে ডুবে এক শিশুর...

ভারতের পণ্য বর্জনে সরকার এত বিচলিত কেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শ...

দেশে বছরে অকাল মৃত্যু পৌনে ৩ লাখ 

নিজস্ব প্রতিবেদক: দূষণের কারণে বা...

বাগদান সারলেন অদিতি-সিদ্ধার্থ

বিনোদন ডেস্ক: ভারতের জনপ্রিয় তারকা অভিনেত্রী অদিতি রাও হায়দা...

আলুর দাম বাড়ার আশঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক: গত বছরের চেয়ে এ...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা