সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক: ‘বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ভাষণের নেপথ্যে রয়েছে এক সংগ্রামী ও ঐতিহাসিক পটভূমি। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ও শাসকচক্রের বাঙালি-বিনাশী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার শাণিত স্বর ছিল- ৭ই মার্চের ভাষণ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ উপলক্ষে একক বক্তার বক্তৃতায় লে. কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির রীরপ্রতিক এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সম্পূর্ণ প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু সেদিন বাঙালিকে সম্মুখ-সমর ও গেরিলাযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করেছিলেন। শুধু তাই নয়, এই ভাষণ স্বাধীনতা অর্জনের উপায় এবং স্বাধীনতা সংহতকরণের নিদের্শনাও বটে। বঙ্গবন্ধুর ভাষণের একটি নির্দেশে রক্তাক্ত জনযুদ্ধের মধ্য দিয়ে একটি স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠার ইতিহাসের নাম ৭ই মার্চ।
রোববার (৭ মার্চ) ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু প্রদত্ত ঐতিহাসিক ভাষণের বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলা একাডেমির উদ্যোগে এই একক বক্তৃতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় এই একক বক্তৃতানুষ্ঠান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন একাডেমির উপপরিচালক ড. শাহাদাৎ হোসেন।
আয়োজনের শুরুতেই স্বাগত ভাষণ দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। এর পরেই ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ: পটভূমি ও তাৎপর্য’ শীর্ষক একক বক্তৃতা দেন মুক্তিযোদ্ধা, লে. কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীরপ্রতীক।
এতে সভাপতিত্ব করেন একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। এসময় এ অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদ সদস্য আরমা দত্ত ও কথাসাহিত্যিক ঝর্না রহমান।
হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ‘৭ই মার্চের ভাষণ পৃথিবীর ইতিহাসে অনন্য-অসাধারণ ভাষণ। বঙ্গবন্ধু যে পরিস্থিতির মধ্যে এই ভাষণ দিয়েছেন সেটি বিবেচনায় পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ভাষণ দ্বিতীয়টি নেই। এই মহান ভাষণ কেবল মানবিক আবেদনের জন্য নয়, শৈল্পিক কারণেও উল্লেখযোগ্য। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের এই ভাষণে বঙ্গবন্ধু কেবল একটি স্বাধীন জাতির স্বপ্ন উল্লেখ করেই থেমে যাননি; তিনি সেই স্বাধীনতা অর্জনের সমস্ত উপায়ও বলে দিয়েছেন।’
অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন, ‘৭ই মার্চের মতো এমন দিন কোনো জাতির জীবনে সচরাচর আসে না। বঙ্গবন্ধুর ভাষণের মতো এমন ভাষণও অন্য কারও পক্ষে দেয়া সম্ভব ছিল না। কারণ তিনি ছিলেন বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে স্বাধীনতার প্রথম সার্থক রূপকার। এ বছর মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মতো আমরা ৭ই মার্চের ভাষণেরও সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করছি- এ আমাদের পরম অহঙ্কার ও গৌরবের বিষয়।’
সান নিউজ/আরআই